আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে হাফিজের বিদায়

টেস্ট ক্রিকেটকে বিদায় বলেছিলেন তিন বছর আগে। ওয়ানডেও খেলা হয়নি গত দুই বছর। সবশেষ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে পাকিস্তানের প্রতিনিধিত্ব করা মোহাম্মদ হাফিজ এবার সবকিছুর ইতি টেনে দিলেন। অবসর নিয়ে নিলেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 Jan 2022, 08:58 AM
Updated : 3 Jan 2022, 10:12 AM

দেশের হয়ে আর মাঠে না নামার সিদ্ধান্তের কথা সোমবার সংবাদ সম্মেলনে জানান হাফিজ। তবে ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটে খেলে যাবেন ৪১ বছর বয়সী এই অলরাউন্ডার।

২০০৩ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়ানডে দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পা রেখেছিলেন হাফিজ। গত নভেম্বরে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সেমি-ফাইনালটি হয়ে রইল পাকিস্তানের জার্সিতে হাফিজের শেষ ম্যাচ।

“পাকিস্তান ক্রিকেটের সঙ্গে ১৮ বছর আগে শুরু করা দারুণ পথচলার আজ আমি আনুষ্ঠানিকভাবে ইতি টানতে চাই। অত্যন্ত গর্বের সঙ্গে পাকিস্তানের প্রতিনিধিত্ব করেছি এবং ১৮ বছর ধরে যা খেলেছি, মর্যাদার সঙ্গে খেলেছি। মাঠ ও মাঠের বাইরের কার্যক্রমে আমি সবসময় পাকিস্তানের পতাকাকে চূড়ায় রাখতে চেষ্টা করেছি।”

৫৫ টেস্ট খেলা হাফিজ লাল বলের সংস্করণ থেকে অবসর নেন ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে। ২১৮ ওয়ানডের সবশেষটি খেলেন তিনি লর্ডসে বাংলাদেশের বিপক্ষে, ২০১৯ বিশ্বকাপে। এরপর আর এই সংস্করণে তাকে বিবেচনায় রাখেনি নির্বাচকরা।

পরের বছরই শেষ হতে পারত হাফিজের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার। ২০২০ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলেই ইতি টানার ঘোষণা দেওয়ার কথা বলেছিলেন তিনি। কিন্তু করোনাভাইরাসের প্রকোপে বিশ্বকাপ পিছিয়ে যায় এক বছর। তাই হাফিজের বিদায়ের ঘোষণাও পেছায়।

১১৯ আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি খেলা হাফিজের তিন সংস্করণ মিলিয়ে রান ১২ হাজার ৭৮০। সব সংস্করণ মিলিয়ে ম্যাচ সেরা হয়েছেন তিনি ৩২ বার, পাকিস্তানের হয়ে যা চতুর্থ সর্বোচ্চ। তার চেয়ে বেশিবার এই অর্জন আছে শহিদ আফ্রিদি (৪৩), ওয়াসিম আকরাম (৩৯) ও ইনজামাম-উল-হকের (৩৩)। এছাড়া ৯ বার সিরিজ সেরা ক্রিকেটার হয়েছেন হাফিজ। ইমরান খান, ইনজামাম ও ওয়াকার ইউনিসের সঙ্গে যেখানে তিনি যৌথভাবে দ্বিতীয়।

সবশেষ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে দেশের প্রতিনিধিত্ব করলেও এর আগে লম্বা সময় এই সংস্করণে দলের বাইরে ছিলেন হাফিজ। ২০১৮ সালে বাদ পড়ার পর ২০২০ সালে ঘরের মাঠে বাংলাদেশ সিরিজ দিয়ে দলে ফেরেন তিনি। বছর জুড়ে দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে বইয়ে দেন রানের জোয়ার।

ওই বছর আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টির সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক ছিলেন তিনি। রান করেন ৮৩ গড় ও ১৫২ স্ট্রাইক রেটে। আর স্বীকৃত টি-টোয়েন্টিতে ষষ্ঠ সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক হয়ে শেষ করেন বছর। যেখানে গড় ও স্ট্রাইক রেটে তিনি ছিলেন তৃতীয় স্থানে।

ব্যাট হাতে দারুণভাবে নিজেকে মেলে ধরে বিশ্বকাপ দলে ডাক পান হাফিজ। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের একটি ছাড়া সবগুলো আসরে খেলা পাকিস্তানের একমাত্র ক্রিকেটার তিনি। দেশটির হয়ে এই সংস্করণের বৈশ্বিক আসরে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলার রেকর্ডও তার।

পাশাপাশি খুব নিয়মিত না হলেও বল হাতেও সাফল্য আছে হাফিজের। অফ স্পিনে টেস্টে ৫৩, ওয়ানডেতে ১৩৯ ও টি-টোয়েন্টিতে ৬১ উইকেট নিয়েছেন তিনি।