যে কৌশলে মাহমুদুলের অনন‍্য কীর্তি

দলের শক্ত ভিত গড়ে দিতে মাহমুদুল হাসান ছিলেন অগ্রগামী। যেন ধৈর্য‍্যের প্রতিমূর্তি। খেলতে থাকলে রান আসবেই-এই ভাবনায় নিল ওয়‍্যাগনার, ট্রেন্ট বোল্টদের আক্রমণ সামলে ক্রিজে কাটিয়ে দেন প্রায় ৫ ঘণ্টা। ক্যারিয়ারে দ্বিতীয় টেস্ট খেলতে নেমে দুরূহ কন্ডিশনে তার এমন ব্যাটিং অনেকের কাছেই বিস্ময়ের। তৃতীয় দিনের খেলা শেষে মাহমুদুল জানালেন, কীভাবে খেলেছেন এই ইনিংস।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 Jan 2022, 08:55 AM
Updated : 3 Jan 2022, 09:17 AM

বে ওভালে সোমবার ইনিংস খুব একটা বড় করতে পারেননি মাহমুদুল। আশা জাগিয়েও ছুঁতে পারেননি তিন অঙ্ক। আগের দিনই নিউ জিল‍্যান্ডের মাটিতে বাংলাদেশের প্রথম ওপেনার হিসেবে দেড়শ বল খেলার কীর্তি গড়া মাহমুদুল শেষ পর্যন্ত আউট হন ৭ চারে ২২৮ বলে ৭৮ রান করে। 

এই ইনিংস খেলার পথে তিনি সাদমান ইসলাম, নাজমুল হোসেন শান্ত ও মুমিনুল হকের সঙ্গে গড়েন তিনটি জুটি। উপমহাদেশের বাইরে কোনো টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে ব‍্যাট করে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের লিড নেওয়ায় এসব জুটির ছিল বড় অবদান।

নিউ জিল্যান্ডকে ৩২৮ রানে আটকে ৬ উইকেটে ৪০১ রানে তৃতীয় দিন শেষ করেছে বাংলাদেশ। ৭৩ রানের লিড পেয়েছে তারা। সোমবার দিনের খেলা শেষে মাহমুদুল বলেন, কীভাবে সম্ভব হলো এই ইনিংস।

“নিউ জিল্যান্ড দলের পেস বোলিং আক্রমণ বিশ্বসেরা। ওরা টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপাজয়ী দল। আমি এক্ষেত্রে আমার স্বাভাবিক খেলাটাই খেলার চেষ্টা করেছি। ওদের বোলারদের নাম না দেখে বল দেখে খেলার চেষ্টা করেছি।”

বলের পর বল ছেড়ে গেছেন মাহমুদুল। দিয়ে গেছেন ডটের পর ডট। জানতেন ক্রিজে থাকলে রান আসবেই। সঙ্গে অন‍্য প্রান্তের সঙ্গীরাও মনে করিয়ে দেন তার ভূমিকা।

“আমার পরিকল্পনা ছিল রানের দিকে না গিয়ে বেশি বেশি বল খেলার। আমি বেশি বল খেলতে পারলে রান এমনিতেই আসবে। আমার সঙ্গী যারা ছিলেন, সাদমান ভাই, শান্ত ভাই, মুমিনুল ভাই–সবাই একই কথা বলেছেন। এটাই ছিল উইকেটে শান্ত থাকার কারণ।”

দেশের বাইরে প্রথমবারের মতো কোনো টেস্টে বাংলাদেশের প্রথম ছয় ব‍্যাটসম‍্যান খেলেছেন পঞ্চাশের বেশি বল। উপমহাদেশের বাইরে নিজেদের সবচেয়ে বেশি ওভার খেলার রেকর্ড গড়ে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে সামনে। এসব অর্জনের পেছনে মাহমুদুলের ধৈর্যশীল ব‍্যাটিংয়ের অবদান অনেক। সুরটা তো বেঁধে দিয়েছেন তিনিই।

“ব্যাটিংয়ের শুরুর দিকে আমার আর সাদমান ভাইয়ের পরিকল্পনা ছিল যে নতুন বলটা কীভাবে পুরনো করা যায় আর ‘বল বাই বল’ খেলব। আমরা যদি বেশি লম্বা চিন্তা করি, তাহলে হয়তবা সফল নাও হতে পারি কিন্তু ‘বল বাই বল’ খেললে ওটাতে সফল হওয়ার সম্ভাবনাটাই বেশি থাকে। তো আমাদের পার্টনারশিপটা ভালোই হয়।”

“যখন শান্ত ভাই আসেন তার সঙ্গেও আমার পার্টনারশিপটা অনেক ভালো হয়। শান্ত ভাই কিছু কিছু সময়, যখন আমি শটস খেলার জন্য বেশি এগ্রেসিভ হচ্ছিলাম, তখন আমাকে ধৈর্য ধরার জন্য বলেন। তারপর মুমিনুল ভাইয়ের সঙ্গেও আমার পার্টনারশিপ হয়। উনিও আমাকে একই কথা বলেন। যখন বেশি ডট বল হয়, তখন বলেন, ডট বল হলে সমস‍্যা নাই চালিয়ে যেতে থাক।”