অবসরের পর ‘বোমা ফাটালেন’ হরভজন

ভারতের হয়ে সবশেষ মাঠে নামার সুযোগ পেয়েছিলেন ২০১৬ সালে। এরপর আরও পাঁচ বছর খেলা চালিয়ে গেলেও জাতীয় দলের দুয়ার আর খোলেনি হরভজন সিংয়ের জন্য। কষ্ট মনে চেপে কদিন আগে অবসরের ঘোষণা দেওয়া এই অফ স্পিনার তার দল থেকে বাদ পড়ার কারণ হিসেবে দুষলেন সেই সময়ের বিসিসিআই কর্মকর্তাদের কয়েকজনকে।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 Jan 2022, 05:44 PM
Updated : 1 Jan 2022, 05:44 PM

কারো নাম অবশ্য প্রকাশ করেননি তিনি। তবে ওই সময়ে মহেন্দ্র সিং ধোনি অধিনায়ক থাকায় স্বাভাবিকভাবেই উঠেছে তার নাম। তার দিকে সরাসরি অভিযোগের আঙুল অবশ্য তোলেননি হরভজন।

গত ২৪ ডিসেম্বর সব ধরনের ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা দেন হরভজন। এর দুইদিন পর আরও কয়েকটি বছর খেলতে না পারার আক্ষেপের কথা তুলে ধরেন তিনি। সে সময় কারো দিকে আঙুল তোলেননি ৪১ বছর বয়সী এই সাবেক ক্রিকেটার। কিন্তু জি নিউজকে দেওয়া শুক্রবারের সাক্ষাৎকারে পুরনো ক্ষোভ কিছুটা ঝারলেন তিনি।

“ভাগ্য সবসময়ই আমার পাশে ছিল। স্রেফ কিছু বাইরের বিষয় আমার পাশে ছিল না, সম্ভবত তারা পুরোপুরিই আমার বিরুদ্ধে ছিল। হতে পারে আমি যেভাবে বোলিং করছিলাম এবং যে হারে সামনে এগিয়ে যাচ্ছিলাম, সেই কারণে। ৩১ বছর বয়সে আমি ৪০০ (টেস্ট) উইকেট নিয়েছিলাম। যদি আরও ৪-৫ বছর খেলতে পারতাম, নিজের মানের কথা বিবেচনা করে আমি বলতে পারি, আরও ১০০-১৫০ উইকেট নিতে পারতাম।”

২০১১ সালের জুলাইয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে ৩১ বছর বয়সে হরভজন ৪০০ টেস্ট উইকেট পূর্ণ করেন ডমিনিকা টেস্টের প্রথম ইনিংসে ২ উইকেট নিয়ে। দ্বিতীয় ইনিংসে নেন আরও ৪ উইকেট।

তবে বাস্তবতা বলছে, এরপর থেকেই তার ফর্ম ছিল পড়তির দিকে। ওই বছরই ইংল্যান্ড সফরে দুই টেস্টে খুব খরুচে বোলিংয়ের পর জায়গা হারান দলে। রবিচন্দ্রন অশ্বিনের উত্থানও হরভজনকে দূরে রাখে দল থেকে। পরের বছর দেশের মাঠে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে একটি টেস্টে সুযোগ পেয়ে ভালো করেননি। পরে আর কখনও সেভাবে দলে নিয়মিত হতেই পারেননি। ৪০০ উইকেট পাওয়া টেস্টের পর আরও ৭ টেস্ট খেলে তার শিকার ছিল স্রেফ ১৩ উইকেট।

হরভজনের মতে, ভারত বোর্ডের অনেক কর্তারাই তখন তাকে দলে চাননি। টেস্টে দেশটির চতুর্থ সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি মনে করছেন, ধোনির সমর্থনও হয়ত তার পক্ষে ছিল না।

“হ্যাঁ, ওই সময় এমএস ধোনিই ছিল অধিনায়ক। যদিও আমি মনে করি বিষয়টি অধিনায়কের নিয়ন্ত্রণের বাইরে ছিল। নিশ্চিতভাবেই আমার মনে হয়, বিসিসিআইয়ের কিছু কর্মকর্তা এর পেছনে ছিল, তাদের আমাকে আর প্রয়োজন ছিল না। অধিনায়কও বিষয়টিকে হয়ত সমর্থন করেছে। তবে অধিনায়কের ক্ষমতা বিসিসিআইয়ের বেশি হতে পারে না। বিসিসিআই কর্মকর্তারা সব সময়ই অধিনায়ক, কোচের চেয়ে বড়।”

মাঠের বাইরে থেকে ক্রিকেটকে বিদায় বলতে হওয়ায় খারাপ লাগা অবশ্যই আছে, তবে তা খুব বেশি নয় হরভজনের। বললেন, দেশের অনেক কিংবদন্তিও আছে এই দলে।

“সব ক্রিকেটারই চায় ভারতের জার্সি পরা অবস্থায় বিদায় নিতে। কিন্তু ভাগ্য সব সময় পাশে থাকে না এবং অনেক সময় যেটা আশা করা হয় সেটা হয় না। যে বড় নামগুলার কথা বললেন, ভিভিএস (লক্ষ্মণ), রাহুল (দ্রাবিড়), ভিরু (বিরেন্দর শেবাগ)…পরে অবসর নেওয়া আরও অনেকেই এই সুযোগ পায়নি।”

মাঠ ও মাঠের বাইরের নিজের জীবন সবার সামনে তুলে ধরতে চান হরভজন। সেই লক্ষ্যে একটি পরিকল্পনাও করেছেন তিনি।

“আমার জীবনের ওপর একটি চলচ্চিত্র বা একটি ওয়েব সিরিজ তৈরি হলে ভালোই হবে, তাতে মানুষ আমার বলা গল্পটা জানতে পারবে-আমি কেমন মানুষ ছিলাম এবং কী করেছি।”

“আমার বায়োপিকে কে ভিলেন হতে পারে বলতে পারছি না। হয়তো একজন হবে না, অনেকজন হতে পারে।”