উইকেট ‘ভালো’, একাদশে তিন পেসার এক স্পিনার

‘দল চূড়ান্ত হয়ে গেছে’, একাদশের প্রশ্নে হাসতে হাসতে বললেন মুমিনুল হক। তবে তা খোলাসা করতে চান না বাংলাদেশ অধিনায়ক। ম্যাচের আগের দিন বা আরও আগে দল বা একাদশ ঘোষণার যে রীতি ইংল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়ার, কিংবা যে পথে এখন হাঁটছে ভারত, সেটির অনুসারী হতে নারাজ বাংলাদেশ। কোচ রাসেল ডমিঙ্গো অবশ্য বোলিং আক্রমণের সম্ভাব্য ছবিটা তুলে ধরার চেষ্টা করলেন।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 31 Dec 2021, 08:14 AM
Updated : 31 Dec 2021, 12:34 PM

টেস্ট শুরুর আগের দিন যখন ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলন করলেন মুমিনুল, নিউ জিল্যান্ডে তখন সন্ধ্যা প্রায় ৭টা। টিম মিটিং হয়ে যাওয়ার কথা। বাংলাদেশ অধিনায়ক তবু একটা রহস্য রেখে দিলেন একাদশ নিয়ে।

“দল চূড়ান্ত, তবে কালকে সকালে উইকেট আরেকবার দেখে হয়তো একাদশ বলতে পারব।”

বে ওভালের উইকেট কেমন, সেটি নিয়েও মুমিনুল হকের উত্তরটি হলো কৌতূহল জাগানিয়া। বাংলাদেশ অধিনায়কের মতে, উইকেটের আচরণের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ নিজেদের মানসিকতা।

“উইকেট বরাবরই… আমার কাছে মনে হয়, আপনি নিউ জিল্যান্ডে আসার আগে উইকেট যেভাবে চিন্তা করবেন, সেরকমই হবে। বিদেশে খেলার সময় মাইন্ড সেট আপটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। উইকেট যদি চিন্তা করেন যে খুব চ্যালেঞ্জিং হবে, তাহলে ওরকমই হবে।”

“যেহেতু রোদ আছে, আমার কাছে মনে হয় উইকেট ভালো হবে। ব্যাটিং করে ব্যাটসম্যানরা উপভোগ করবে, বোলারদেরও সহায়তা থাকবে। হার্ড বাউন্স ও সুন্দর উইকেট থাকবে। প্রথম দিকে এক-দেড় ঘণ্টা হয়তো চ্যালেঞ্জটা একটু বেশি থাকবে। যেটা সবসময় নিউ জিল্যান্ডে বা বিশ্বের সব উইকেটেই হয়।”

রাসেল ডমিঙ্গোর সংবাদ সম্মেলন যখন হয়, তখনও তিনি উইকেট দেখার সুযোগ পাননি। তবে উইকেটের ধারণা পেয়ে আগেই বোলিং আক্রমণ সাজিয়ে ফেলেছেন বাংলাদেশ কোচ।

পেস আক্রমণের নেতা তাসকিন আহমেদের সঙ্গে একাদশে থাকতে পারেন তরুণ সেনানী শরিফুল ইসলাম।

“উইকেট এখনও দেখিনি, অপেক্ষা করছি কিউরেটর এসে আমাদের দেখাবেন। ধারণা করছি, ভালো উইকেট হবে। প্রথম দিনে একটু ঘাসের ছোঁয়া থাকবে। আমাদের হয়তো এরকম একটি দল বাছাই করতে হবে যা দুই দিকই কাভার করবে, কিছুটা পেস ও কিছুটা স্পিন। কারণ, আমার মনে হয়, এখানে চতুর্থ ও পঞ্চম দিনে উইকেটে স্পিন ধরে।

চতুর্থ ও পঞ্চম দিনে যদি সত্যি স্পিন ধরেও, ম্যাচে ততক্ষণে বাংলাদেশ কতটা টিকে থাকবে, এই প্রশ্নও থাকছে। তবে শুধু উইকেটের কথা ভেবেই নয়, কোচ ভাবছেন নিজেদের শক্তির জায়গাও। নিউ জিল্যান্ড তাদের স্কোয়াডেই কোনো বিশেষজ্ঞ স্পিনার রাখেনি। কিন্তু বাংলাদেশ স্পিনার নিয়ে নামতে চায় ভারসাম্যের জন্য।

“বাংলাদেশের জন্য পরিস্থিতি ‘ট্রিকি।’ এমনিতে আমাদের শক্তির জায়গা ম্পিন। তবে এখানে আমাদের বেশ কিছু ভালো সিমার আছে, যাদেরকে নিয়ে আমরা রোমাঞ্চিত। সত্যি বলতে, সম্ভবত তিন সিমার ও একজন স্পিনার নিয়ে খেলব আমরা।”

“তবে পরে নির্বাচকদের সঙ্গে আলোচনা করতে হবে। কিন্তু আক্রমণে ব্যালান্স রাখতে হবে। শুধু সিমার নিয়ে খেলা যাবে না। তাই সম্ভবত তিন পেসার ও এক স্পিনার নিয়েই খেলব।”

কোচের কথার সূত্র ধরে বাংলাদেশের একাদশের একটা সম্ভাব্য চিত্র দাঁড় করানো যেতে পারে। ফর্ম খুব ভালো না হলেও উপযুক্ত বিকল্পের অভাবে সাদমান ইসলাম টিকে যাচ্ছেন একাদশে। ওপেনিংয়ে তার সঙ্গী হবেন প্রস্তুতি ম্যাচে ভালো করা মাহমুদুল হাসান জয়।

পরের পজিশনগুলোয় নাজমুল হোসেন শান্ত, মুমিনুল হক, মুশফিকুর রহিম, লিটন দাস ও ইয়াসির আলি চৌধুরি একরকম নিশ্চিত।

বড় কৌতূহলের জায়গা থাকবে, একমাত্র স্পিনার কে। দেশের বাইরে মেহেদী হাসান মিরাজ ও তাইজুল ইসলাম, কারও রেকর্ড ভালো নয়। টেস্টের আগে দুই দিনের প্রস্তুতি ম্যাচে স্বল্প সুযোগে ভালো করেছেন মিরাজ, ভালো করতে পারেননি তাইজুল। নিউ জিল্যান্ডের সম্ভাব্য ব্যাটিং অর্ডারে প্রথম পাঁচজনের তিনজন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান, এখানেও একটু এগিয়ে থাকার কথা অফ স্পিনার মিরাজের।

পেস আক্রণের নেতা তাসকিন আহমেদ। প্রস্তুতি ম্যাচের দারুণ পারফরম্যান্সে আবু জায়েদ চৌধুরিও হয়তো থাকছেন একাদশে। তৃতীয় পেসারের জায়গা নিয়ে লড়াইয়ে থাকবেন ইবাদত হোসেন চৌধুরি ও শরিফুল ইসলাম। ইবাদত এগিয়ে থাকবেন অভিজ্ঞতায়। যদিও তার পারফরম্যান্স খুব ভালো নয়। শরিফুল প্রস্তুতি ম্যাচে উইকেট না পেলেও দারুণ বোলিং করেছেন। বোলিংয়ের ধার ও বাঁহাতি পেসার হিসেবে বৈচিত্রের বিবেচনায়ও তিনি পেতে পারেন বাড়তি কিছু নম্বর।