বোলিংয়ে অনেকটা সময় পর্যন্ত প্রতিপক্ষের ওপর ছড়ি ঘুরিয়ে শেষ দিকে ধরে রাখা গেল না ছন্দ। ব্যাটিং হলো ভীষণ বাজে। একজন ছাড়া বাকিরা কেউ সেভাবে দাঁড়াতেই পারলেন না। ভারতের কাছে বড় হারে যুব এশিয়া কাপের সেমি-ফাইনাল থেকে বিদায় নিল বাংলাদেশ।
Published : 30 Dec 2021, 05:19 PM
শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় সেমি-ফাইনালে ১০৩ রানে হারে বাংলাদেশের যুবারা। ২৪৪ রানের লক্ষ্য তাড়ায় গুটিয়ে যায় তারা ১৪০ রানে।
পাঁচ নম্বরে নেমে ৭৭ বলে সর্বোচ্চ ৪২ রান করে শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হন আরিফুল ইসলাম। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২৬ রান আসে ওপেনার মাহফিজুল ইসলামের ব্যাট থেকে।
আরও একবার যুব এশিয়া কাপ থেকে শূন্য হাতে ফিরছে বাংলাদেশ। ২০১৯ সালে সবশেষ আসরের ফাইনালে ভারতের বিপক্ষেই ৫ রানে হেরে শিরোপা স্বপ্ন ভেঙেছিল তাদের।
টস জিতে বোলিং নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক রকিবুল হাসান। নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে ভারতের ব্যাটসম্যানদের বেঁধে রাখেন আশিকুর জামান, তানজিম হাসান সাকিবরা। প্রথম ১০ ওভারে ১ উইকেট হারিয়ে ভারত তুলতে পারে কেবল ৩১ রান।
অষ্টম ওভারে হারনুর সিংকে কট বিহাইন্ড করে বাংলাদেশকে প্রথম সাফল্য এনে দেন গত যুব বিশ্বকাপ জয়ী পেসার তানজিম। প্রথম ৫ ওভারে ১৮ রানে তার প্রাপ্তি এই উইকেটটি। আরেক পেসার আশিকুর ৫ ওভারে দেন স্রেফ ১১ রান।
এরপর নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে ভারত। তিনে নেমে বলতে গেলে দলকে একাই টানেন শেখ রাশিদ। ফিফটি তুলে নেন তিনি ৭৬ বলে।
৪১ ওভারে ভারতের স্কোর ছিল ৬ উইকেটে ১৬২। পরের ৯ ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে তারা তোলে ৮১ রান।
১০৮ বলে ৩ চার ও একটি ছক্কায় ৯০ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন রাশিদ। ১৮ বলে ২৮ রান করেন ভিকি ওস্তওয়াল।
নিজের পরের ৩ ওভারে আশিকুর দেন ২৮ রান, তানজিম ৪ ওভারে ৩৩। বাঁহাতি স্পিনে ৪১ রানে ৩ উইকেট নিয়ে দলের সফলতম বোলার অধিনায়ক রকিবুল।
রান তাড়ায় মাহফিজুলের ব্যাটে বাংলাদেশের শুরুটা হয় আশা জাগানিয়া। প্রথম ৫ ওভারে মাহফিজুল মারেন পাঁচটি চার। দলের রান বিনা উইকেটে ৩১।
পথ হারানোর শুরু এরপরই। পরের ওভারে রবি কুমারের প্রথম বলে তাহজিবুল ইসলাম হন এলবিডব্লিউ। পরের ওভারে ক্যাচ দিয়ে থামেন মাহফিজুল। ৩ চারে ১২ রান করে এলবিডব্লিউ হন প্রান্তিক নওরোজ নাবিল।
টিকতে পারেননি আইচ মোল্লা, মোহাম্মদ ফাহিম ও মেহরব হাসান। সবাই আউট হন ক্যাচ দিয়ে। বিনা উইকেটে ৩১ থেকে বাংলাদেশের স্কোর হয়ে যায় ৬ উইকেটে ৬৮!
এরপর আশিকুরের ১৫, রকিবুলের ১৬ ও আরিফুলের ৪২ রানে পরাজয়ের ব্যবধানই কমে শুধু। ভারতের হয়ে ২টি করে উইকেট নেন চার বোলার।
গ্রুপ পর্বে ব্যাটিংই বড় দুটি জয়ের ভিত গড়ে দিয়েছিল বাংলাদেশের। নেপালের বিপক্ষে ১৫৪ রানে, কুয়েতের বিপক্ষে ২২২ রানে জিতেছিল দল। প্রথমটিতে সেঞ্চুরি করেছিলেন নাবিল, পরেরটিতে মাহফিজুল।
নক আউটে পর্বে এসে সেই ব্যাটিংই ডুবাল দলকে।
যুব বিশ্বকাপের শিরোপা ধরে রাখার অভিযানে সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকেই ওয়েস্ট ইন্ডিজে উড়াল দেবে বাংলাদেশের যুবারা।
আরেক সেমি-ফাইনালে পাকিস্তানকে ২২ রানে হারিয়েছে শ্রীলঙ্কা। দুবাইয়ে শুক্রবার ফাইনালে ভারতের মুখোমুখি হবে লঙ্কান যুবারা।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ভারত অনূর্ধ্ব-১৯ দল: ৫০ ওভারে ২৪৩/৮ (অঙ্কুরিশ ১৬, হারনুর ১৫, রাশিদ ৯০, নিশান্ত ৫, দুল ২৬, রাজ ২৩, তাম্বে ৩, অরাধ্য ৮, রাজবর্ধন ১৬, ভিকি ২৮*; আশিকুর ৮-১-৩৯-০, তানজিম ৯-০-৫১-১, নাইমুর ৯-০-৩৬-১, রকিবুল ১০-১-৪১-৩, মেহরব ৬-০-৩৬-১, আরিফুল ৮-০-৩৭-১)
বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব ১৯ দল: ৩৮.২ ওভারে ১৪০ (মাহফিজুল ২৬, তাহজিবুল ৩, নাবিল ১২, আইচ ০, আরিফুল ৪২, ফাহিম ৫, মেহরব ৭, আশিকুর ১৫, নাইমুর ৬, রকিবুল ১৬, তানজিম ০* রাজবর্ধন ৮-০-৩৬-২, রবি ৫-১-২২-২, রাজ ৬-১-২৬-২, ভিকি ১০-২-২৫-২, নিশান্ত ৭.২-০-২৫-১, তাম্বে ২-০-৫-১)
ফল: ভারত অনূর্ধ্ব-১৯ দল ১০৩ রানে জয়ী।