বোলারদের দাপটের পর ওপেনারদের দৃঢ়তায় বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগের (বিসিএল) শেষ রাউন্ড শুরুর দিনেই চালকের আসনে উত্তরাঞ্চল।
রাজশাহীর শহীদ কামরুজ্জামান স্টেডিয়ামে শফিকুলের দারুণ বোলিংয়ে প্রথম ইনিংসে কেবল ১৬৬ রানে থমকে যায় পূর্বাঞ্চল।
ওপেনিংয়ে নেমে আশরাফুল করেন ১৬০ বলে ৭০ রান।
৩৫ রানে ৫ উইকেট শফিকুলের। স্বীকৃত ক্রিকেটে ২৪ বছর বয়সী পেসার প্রথমবার পেলেন ৫ উইকেটের স্বাদ। এর মধ্যেই বাংলাদেশ ইমার্জিং ও ‘এ’ দলে খেলা এই বোলার প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে আগের ১১ ম্যাচে কখনোই ইনিংসে ৩ উইকেটের বেশি পাননি।
চট্টগ্রামে এবারের বিসিএলের প্রথম ম্যাচে ১১১ রান দিয়ে উইকেটশূন্য ছিলেন শফিকুল। পরের ম্যাচে ৫১ রান দিয়ে নেন কেবল একটি। তবুও তার ওপর আস্থা রাখে উত্তরাঞ্চল। চমৎকার বোলিংয়ে তিনি দিলেন প্রতিদান।
শফিকুলের পেসের পাশাপাশি বাঁহাতি স্পিনে সানজামুল নেন ৩ উইকেট, অফ স্পিনে শরিফউল্লাহ ২টি।
বোলারদের সাফল্যের পর উত্তরাঞ্চল ব্যাটিংয়ে নেমে জুনায়েদ সিদ্দিক ও তানজিদ হাসানের ব্যাটিং দৃঢ়তায় রোববার দিন শেষ করে কোনো উইকেট না হারিয়ে ৭১ রান নিয়ে।
উইকেটে এ দিন ছিল সবজু ঘাসের ছোঁয়া। সঙ্গে সকালের আর্দ্রতা কাজে লাগিয়ে পূর্বাঞ্চলের ব্যাটসম্যানদের কঠিন পরীক্ষায় ফেলেন শফিকুল। এমন কিছুর জন্যই হয়তো টস জিতে ফিল্ডিং নেন অধিনায়ক মার্শাল আইয়ুব।
ড্রাইভ করার চেষ্টায় দ্বিতীয় স্লিপে ধরা পড়েন ইমরুল। খোঁচা মেরে একই জায়গায় ক্যাচ দিয়ে ‘গোল্ডেন ডাক’-এর স্বাদ পান শামসুর। বল বাইরে যাবে ভেবে ছেড়ে দিয়ে এলবিডব্লিউ হয়ে যান শাহাদাত। তিনি অনুমানই করতে পারেননি, বল ভেতরে ঢোকাবেন শফিকুল।
১০ রানে ৩ উইকেট হারানো দল প্রতিরোধ গড়ে আশরাফুল ও আফিফ হোসেনের ব্যাটে। প্রথম ১৭ বলে ১ রান করা আফিফ পরে রান তোলেন ওয়ানডের গতিতে। সানজামুলকে ছক্কার পর চার মেরে গা ঝাড়া দেওয়া বাঁহাতি ব্যাটসম্যান মনোযোগী ছিলেন রানের গতি বাড়ানোর দিকে।
দারুণ এক ইয়র্কারে আফিফকে বোল্ড করে ৫৫ রানের জুটি ভাঙেন শফিকুল। ৫৪ বলে এক ছক্কা ও চারটি চারে ৩৭ রান করেন আফিফ।
অনেকটা শাহাদাতের মতোই এলবডব্লিউ হয়ে ফেরেন অফ স্পিনিং অলরাউন্ডার মাহমুদুল হাসান। শফিকুলের বল তাকে কিছুটা অবাক করে ভেতরে ঢুকে ছোবল দেয় প্যাডে।
অন্য প্রান্তে লড়াই চালিয়ে যেতে থাকেন আশরাফুল। প্রিতম কুমারের সঙ্গে গড়েন ৪৭ রানের জুটি।
কিপার-ব্যাটসম্যান প্রিতমকে এলবিডব্লিউ করে প্রতিরোধ ভাঙেন সানজামুল। পরে বাঁহাতি এই স্পিনার কট বিহাইন্ড করে থামান আশরাফুলকে। তার ৭০ রানের ইনিংসে ৯ চারের পাশে ছক্কা একটি।
অলরাউন্ড নৈপুণ্যে আগের ম্যাচে পূর্বাঞ্চলের জয়ে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখা নাঈম হাসানকে এবার বেশিদূর যেতে দেননি সানজামুল। পরে চার বলের মধ্যে তানভির ইসলাম ও ইফরান হোসেনকে ফিরিয়ে পূর্বাঞ্চলের ইনিংশ শেষ করে দেন অফ স্পিনিং অলরাউন্ডার শরিফউল্লাহ।
শেষ সেশনে ২৮ ওভার বোলিং করে কোনো উইকেট নিতে পারেননি পূর্বাঞ্চলের বোলাররা। দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে উত্তরাঞ্চলকে ভালো শুরু এনে দেন দুই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান তানজিদ ও জুনায়েদ। ৯০ বলে ছয় চারে ৩৫ রানে অপরাজিত তানজিদ। ৮০ বলে ১ চারে জুনায়েদের রান ৩০।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
পূর্বাঞ্চল ১ম ইনিংস: ৫৫.৫ ওভারে ১৬৬ (ইমরুল ৫, আশরাফুল ৭০, শামসুর ০, শাহাদাত ০, আফিফ ৩৭, মাহমুদুল ৫, প্রিতম ২৬, নাঈম ১৫, তানভির ১, ইফরান ০, পায়েল ১ *; শফিকুল ১৪-৪-৩৫-৫, তারেক ৯-৪-২৮-০, সানজামুল ১৫-৪-৪৭-৩, নোমান ১১-২-৩৪-০, শরিফউল্লাহ ৬.৫-১-১৯-২)
উত্তরাঞ্চল ১ম ইনিংস: ২৮ ওভারে ৭১/০ (তানজিদ ৩৫*, জুনায়েদ ৩০*; পায়েল ৩-০-৮-০, নাঈম ১৩-১-৩৭-০, ইফরান ৫-১-৯-০, তানভির ৬-০-১১-০, মাহমুদুল ১-০-২-০)