ভারতের ক্রিকেট ইতিহাসের সফল বোলারদের একজন হরভজন ক্রিকেটকে আনুষ্ঠানিক বিদায় জানান গত শুক্রবার। জাতীয় দলের বাইরে ছিলেন তিনি বছর ৫ বছরের বেশি সময় ধরে। সবশেষ টেস্ট খেলেছেন সেই ২০১৫ সালে। গত কয়েক বছরে স্রেফ আইপিএলই খেলছিলেন। সেই অধ্যায়ও এবার শেষ করে দিলেন।
দীর্ঘদিন জাতীয় দলের বাইরে থাকলেও তার আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার অর্জনে সমৃদ্ধ। বিশেষ করে টেস্টে তিনি ইতিহাসের সেরা অফ স্পিনারদের একজন। তবে বিদায় ঘোষণার পর ৪১ বছর বয়সী ক্রিকেটার বড় এক আক্ষেপের কথা শোনালেন ভারতীয় এক দৈনিককে। অর্জনের পাল্লা আরও ভারী হতো পারত বলেই বিশ্বাস তার।
“কেউ যখন চারশর বেশি উইকেট নেয় এবং এরপর আর সুযোগ পায় না, এমনকি বাদ পড়ার কারণও জানানো হয় না, মাথায় অনেক প্রশ্ন তখন আসেই। আমার দল থেকে বাদ পড়া নিয়ে অনেককে জিজ্ঞেস করেছি, কোনো জবাব পাইনি।”
“সমর্থন পেলে সবসময়ই ভালো লাগে। আমি বলতে পারি, যদি সঠিক সময়ে সেরকম সমর্থন পেতাম, তাহলে ৫০০-৫৫০ উইকেট নিয়ে আরও আগেই অবসরে যেতে পারতাম। কারণ ৪০০ উইকেট পাওয়ার সময় আমার বয়স ছিল স্রেফ ৩১। আরও ৩-৪ বছর খেলতে পারলে (টানা) ৫০০ উইকেট পেতে পারতাম। কিন্তু তা হয়নি।”
২০১১ সালের জুলাইয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে হরভজন ৪০০ উইকেট পূর্ণ করেন ডমিনিকা টেস্টের প্রথম ইনিংসে ২ উইকেট নিয়ে। দ্বিতীয় ইনিংসে নেন আরও ৪ উইকেট।
তবে বাস্তবতা বলছে, এরপর থেকেই তার ফর্ম ছিল পড়তির দিকে। ওই বছরই ইংল্যান্ড সফরে দুই টেস্টে দারুণ খরুচে বোলিংয়ের পর জায়গা হারান দলে। রবিচন্দ্রন অশ্বিনের উত্থানও হরভজনকে দূর রাখে দল থেকে। পরের বছর দেশের মাঠে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে একটি টেস্টে সুযোগ পেয়ে ভালো করেননি। আরও কখনও সেভাবে দলে নিয়মিত হতেই পারেননি। ৪০০ উইকেট পাওয়া টেস্টের পর আরও ৭ টেস্ট খেলে তার শিকার ছিল স্রেফ ১৩ উইকেট।
তবে হরভজনের মূল আক্ষেপ, ওই সময়টায় তাকে পুরো চিত্র পরিষ্কারভাবে ব্যাখ্যা না করায়। ভারতীয় ক্রিকেটের এই দিকটিই তাকে ব্যথিত করে প্রবলভাবে।
“তাদেরকে জিজ্ঞেস করেছি যে, আমি কি নিজেকে হারিয়ে ফেলেছি নাকি বোলিং খারাপ হয়ে গেছে কিংবা কী হয়েছে যে তারা আমাকে একেবারেই নিচ্ছে না। এটির কোনো উত্তর পাইনি।”
“৪০০ উইকেট শিকারি একজনের সঙ্গে এরকম হলে ৪০ উইকেট পাওয়া কাউকে কেউ জিজ্ঞেসই করবে না। এটা ভারতীয় ক্রিকেটের একটি হতাশার গল্প যে, কেউ এত অর্জনের পর তাকে যখন আর প্রয়োজন হয় না, কেউ ভালোভাবে কথাও বলে না।”