২-০ এর পথে অস্ট্রেলিয়া

দিনের শুরুতে ৭ রানের মধ্যে প্রতিপক্ষের ৩ উইকেট তুলে নিয়ে ভিন্ন কিছুর আভাস দিয়েছিল ইংল্যান্ড। সেই স্বস্তি যদিও পরে থাকেনি। ট্রাভিস হেড ও মার্নাস লাবুশেনের ফিফটিতে অস্ট্রেলিয়া পায় বড় পুঁজি। পরে বোলারদের নৈপুণ্যে অ্যাডিলেইড টেস্টে জয়ের পথে অনেকটাই এগিয়ে গেছে স্বাগতিকরা।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 Dec 2021, 01:14 PM
Updated : 19 Dec 2021, 01:44 PM

অ্যাশেজ সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে ৪৬৮ রানের বিশাল লক্ষ্য তাড়ায় চতুর্থ দিনের শেষ ওভারে অধিনায়ক জো রুটকে হারিয়ে ভীষণ বিপদে পড়েছে ইংল্যান্ড। দিন শেষে সফরকারীদের রান ৪ উইকেটে ৮২। এখনও দরকার ৩৮৬ রান, ম্যাচ বাঁচাতে কাটিয়ে দিতে হবে তিন সেশন।

দিবা-রাত্রির টেস্টে রোববার অস্ট্রেলিয়া দ্বিতীয় ইনিংস ঘোষণা করে ৯ উইকেটে ২৩০ রানে। প্রথম ইনিংসে ২৩৭ রানের লিড পাওয়া দলটির পুঁজি দাঁড়ায় ৪৬৭। লাবুশেন ও হেড দুজনই করেন ৫১ রান।

অ্যাডিলেইড ওভালে চতুর্থ দিন পেসাররা পেয়েছেন মুভমেন্ট, স্পিন বোলিংয়ের জন্যও ছিল সহায়তা। ১ উইকেটে ৪৫ রান নিয়ে দিন শুরু করা অস্ট্রেলিয়ার স্কোর দ্রুত হয়ে যায় ৫৫/৪।

দিনের প্রথম বলে রান আউট হতে হতে বেঁচে যাওয়া মাইকেল নিসারকে পরের ওভারে বোল্ড করে দেন জেমস অ্যান্ডারসন।

পরের ওভারে আরেক পেসার স্টুয়ার্ট ব্রডের বলে জস বাটলারের অসাধারণ ক্যাচে বিদায় নেন মার্কাস হ্যারিস। ব্যাটের কানা ছুঁয়ে যাওয়া বল বাঁ দিকে ঝাঁপিয়ে এক হাতে গ্লাভসে জমান ইংলিশ কিপার। পরের বলে আউট হতে পারতেন স্টিভেন স্মিথও। অস্ট্রেলিয়ার ভারপ্রাপ্ত অধিনায়কের ক্যাচ গ্লাভসে জমাতে পারেননি বাটলার।

জীবন পেয়েও অবশ্য বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি স্মিথ। অলি রবিনসনের বলে সেই বাটলারের আরেকটি দারুণ ক্যাচেই বিদায় নেন তিনি ৬ রান করে।

এরপর প্রতিরোধ গড়েন লাবুশেন ও হেড। তাদের দারুণ ব্যাটিংয়ে বাড়তে থাকে অস্ট্রেলিয়ার লিড। ওয়ানডে ঘরানার ব্যাটিংয়ে হেড ফিফটি পূর্ণ করেন ৪৯ বলে। এরপর বেন স্টোকসের দুর্দান্ত ক্যাচে বিদায় নেন তিনি। ৫৪ বলে ৭ চারে সাজানো তার ৫১ রানের ইনিংস।

প্রথম ইনিংসের সেঞ্চুরিয়ান লাবুশেনের ফিফটি করতে লাগে ৯৪ বল। তাকে ফিরিয়ে প্রথম টেস্ট উইকেটের স্বাদ পান দাভিদ মালান। ডিপ মিড উইকেটে স্টোকসের হাতে ক্যাচ দেওয়া ব্যাটসম্যান ৯৬ বলে ৬ চারে করেন ৫১ রান।

দিনের খেলা শুরুর আগে ওয়ার্ম-আপের সময় তলপেটে বলের আঘাত পাওয়ায় শুরুতে মাঠে ছিলেন না রুট। পরে মাঠে ফেরেন ইংলিশ অধিনায়ক। বোলিংয়ে এসে তিনি বোল্ড করে দেন আলেক্স কেয়ারিকে।

পরে তিনি ফিরিয়ে দেন ১৯ বলে ২০ রান করা মিচেল স্টার্ককেও। পরের ওভারে মালানকে ছক্কা হাঁকানোর পর ঝাই রিচার্ডসন কট বিহাইন্ড হলে ইনিংস ঘোষণা করে অস্ট্রেলিয়া। ক্যামেরন গ্রিন অপরাজিত ছিলেন ৩৩ রানে।

বিশাল লক্ষ্য তাড়ায় দ্বিতীয় ওভারেই হাসিব হামিদকে হারায় ইংল্যান্ড। রিচার্ডসনের আউট-সুইঙ্গারে কট বিহাইন্ড হন তিনি শূন্য রানে।

প্রতিরোধের চেষ্টা করেন ররি বার্নস ও মালান। তাদের ১১৫ বলে ৪৪ রানের জুটি ভাঙেন নিসার। আগের ওভারে স্লিপে স্মিথের হাতে সহজ ক্যাচ দিয়ে বেঁচে যাওয়া মালান হন এলবিডব্লিউ (২০)। রিচার্ডসনের দারুণ ডেলিভারিতে স্লিপে ক্যাচ দিয়ে থামেন বার্নস (৯৫ বলে ৩৪)।

স্টোকসকে সঙ্গে নিয়ে দিনের বাকিটা কাটিয়ে দেওয়ার পথেই ছিলেন রুট। দিনের শেষ দিকে স্টার্কের বলে তলপেটে আঘাত পান তিনি। এই পেসারের পরের ওভারেই দারুণ ডেলিভারিতে কট বিহাইন্ড হন তিনি ২৪ রানে। দিনের খেলা শেষ সেখানেই।

এই ইনিংসের পথে অ্যালেস্টার কুককে (৪ হাজার ৮৪৪) ছাড়িয়ে ইংলিশ অধিনায়ক হিসেবে সবচেয়ে বেশি টেস্ট রানের রেকর্ড নিজের করে নেন রুট (৪ হাজার ৮৫৯)। তার দল অবশ্য সিরিজে ২-০ ব্যবধানে পিছিয়ে পড়ার পথে।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

অস্ট্রেলিয়া ১ম ইনিংস: ৪৭৩/৯ ডিক্লে.

ইংল্যান্ড ১ম ইনিংস: ২৩৬

অস্ট্রেলিয়া ২য় ইনিংস: ৬১ ওভারে ২৩০/৯ ডি. (আগের দিন ৪৫/১) (হ্যারিস ২৩, নিসার ৩, লাবুশেন ৫১, স্মিথ ৬, হেড ৫১, গ্রিন ৩৩*, কেয়ারি ৬, স্টার্ক ১৯, রিচার্ডসন ৮; অ্যান্ডারসন ১০-৬-৮-১, ব্রড ১০-৩-২৭-১, রবিনসন ১৫-২-৫৪-২, ওকস ১২-৩-৪৬-০, রুট ৬-১-২৭-২, স্টোকস ২-০-২৪-০, মালান ৬-০-৩৩-২)

ইংল্যান্ড ২য় ইনিংস: (লক্ষ্য ৪৬৮) ৪৩.২ ওভারে ৮২/৪ (বার্নস ৩৪, হামিদ ০, মালান ২০, রুট ২৪, স্টোকস ৩*; স্টার্ক ১১.২-৪-২১-১, রিচার্ডসন ৮-৪-১৭-২, লায়ন ১৪-৩-২৮-০, নিসার ৫-২-৭-১, গ্রিন ৫-২-৮-০)।