নিউ জিল‍্যান্ডে অনেক সমস্যার পরও নিরুপায় বাংলাদেশ

টানা জৈব সুরক্ষা বলয়ে থাকা এমনিতেই ক্লান্তিকর। সেখানে কোয়ারেন্টিনের মেয়াদ বৃদ্ধি ক্রিকেটারদের মনের ওপর ফেলছে বাড়তি চাপ। বাংলাদেশ দলের অনেকেই নাকি ভাবছিলেন, নিউ জিল‍্যান্ড সিরিজ বাদ দেওয়া বা মাঝপথ থেকে ফিরে আসা যায় কি না। আপাতত এর বাস্তবিক কোনো সুযোগ দেখছেন না নাজমুল হাসান।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 Dec 2021, 02:19 PM
Updated : 18 Dec 2021, 02:19 PM

বিসিবি প্রধান জানালেন, নিউ জিল‍্যান্ড বোর্ডের সঙ্গে কোনো আলোচনায় যেতে সোমবারের নতুন করোনাভাইরাস পরীক্ষার দিকে তাকিয়ে আছেন তারা।

অনেক দিন ধরে টানা খেলার মধ্যে আছেন বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা। এক সিরিজ শেষ করেই ঢুকছেন আরেক সিরিজের জৈব সুরক্ষা বলয়ে। দেশের মাটিতে নিউ জিল‍্যান্ডের বিপক্ষে পাঁচ ম‍্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলেই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলতে দেশ ছাড়ে বাংলাদেশ দল। সেখান থেকে ফিরেই খেলে পাকিস্তানের বিপক্ষে। দ্বিতীয় টেস্টের পঞ্চম দিনের খেলা শেষ করে ওই দিনই নিউ জিল‍্যান্ডের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়ে মুমিনুল হকের দল।

যে উড়ানে ক্রাইস্টচার্চে পৌঁছায় বাংলাদেশ দল, সেই ফ্লাইটেই একজন যাত্রীর শরীরে করোনাভাইরাসের ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হয়। শুরুতে বিমানে সেই যাত্রীর আশেপাশে থাকা সবার জন্য আইসোলেশনের মেয়াদ বাড়ানো হয়। পরে বাংলাদেশ দলের সবার ক্ষেত্রেই একই নিয়ম প্রয়োগ করে নিউ জিল‍্যান্ডের স্বাস্থ‍্য মন্ত্রণালয়।

কোয়ারেন্টিনের মধ্যে থেকে আগের কয়েকদিন জিম করার অনুমতি ছিল যাদের, তারা মাঠে গিয়ে অনুশীলনের অনুমতিও পেয়েছিলেন। যদিও বিরূপ প্রকৃতির কারণে বৃহস্পতিবার তা সম্ভব হয়নি। পরদিন সেটাও বাতিল হয়ে যাওয়ার পর সিরিজ নিয়ে জাগে সংশয়। শনিবার মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বিসিবি প্রধান নাজমুল হাসান জানান, এখনই কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় আসেনি। তারা তাকিয়ে আছেন সোমবারের করোনাভাইরাস পরীক্ষার দিকে। 

“মঙ্গলবার সবাই নেগেটিভ হলে আশা করি, কোয়ারেন্টিন থেকে বের হয়ে অনুশীলন করতে পারবে।”

“আমাদের খেলোয়াড়রা খুব কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। ওরা টানা কোয়ারেন্টিনে আছে। মানসিক ও শারীরিকভাবে তারা একেবারেই ক্লান্ত। অনেক খেলোয়াড় চিন্তা করছিল, চলে আসা যায় কি না, সিরিজ বাদ দেওয়া যায় কি না। আসলে এটার কোনো সুযোগ নেই। ২১ তারিখের পর আবার কোয়ারেন্টিন বাড়ানো হলে তখন নিউ জিল‍্যান্ড ক্রিকেটের সঙ্গে আলোচনায় যেতে পারব।”

বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজের পরপরই দেশের মাটিতে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে খেলবে নিউ জিল‍্যান্ড। সূচি ঠাসা হলেও বিসিবি প্রধানের আশা, প্রয়োজন বাংলাদেশের সিরিজ কয়েক দিন পিছিয়ে দিতে পারে স্বাগতিকরা।

“কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার জন্যই (দলকে) আগেভাগে পাঠিয়েছিলাম। একে তো নিউ জিল্যান্ড, এর মধ্যে এত শর্ত। এই কন্ডিশনে ওদের খেলাটা কঠিন। ছেলেরা মানসিক ও শারীরিকভাবে খুবই খারাপ অবস্থায় আছে। আমাদের কাজ হবে ওদের উদ্বুদ্ধ করা। তাও তো দুটি প্র্যাকটিস ম্যাচ ছিল। একটা তো হবেই। আমরা চেষ্টা করছি আরেকটা রাখা যায় কি না। দলের প্রত্যেকের জন্য খুব খারাপ লাগছে। খুব কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে ওরা।”

“২১ তারিখের পর যদি আবার ২-৪ দিন বাড়ায়? এজন্য ওরা কিছু বলতে পারছে না। তাই ২১ তারিখের আগে কেউই কিছু বলতে পারছি না। ওরা যদি সিরিজ ৩-৪ দিন পিছিয়ে দেয় তাহলে তো আমাদের না করার কোনো পথ নেই। তবে আমাদের পর্যাপ্ত অনুশীলন সুবিধা না দিলে খেলা কঠিন- এটা আমরা ওদের জানিয়ে দিয়েছি।”

করোনাভাইরাস পরীক্ষায় উতরাতে না পারলে কাউকে দেশে আনারও উপায় দেখছেন না নাজমুল হাসান। তাই সব পথ খোলা রেখে তিনি পরবর্তী পরীক্ষার ফলের দিকে তাকিয়ে।  

“ফিরিয়ে আনা তো সম্ভব না। কীভাবে আনবেন? আপনাদের কি মনে হয় নিউ জিল্যান্ড সরকার ওমিক্রনের সাথে সংস্পর্শ আছে এমন কাউকে বের হতে দিবে? এয়ারপোর্টে যেতে দিবে? এমন কোনো এয়ারক্রাফট আছে, যেটা আনবে ওদেরকে? আগে ২১ তারিখ পর্যন্ত দেখি। আর তো ২ দিন।”

নিউ জিল‍্যান্ডে যাওয়ার পর করোনাভাইরাস পরীক্ষায় পজিটিভ হন বাংলাদেশের স্পিন কোচ রঙ্গনা হেরাথ। দলের বাকি সবাই এখন পর্যন্ত পরীক্ষায় নেগেটিভ হয়েছেন। 

নিউ জিল্যান্ডে এবার দুটি টেস্ট খেলবে বাংলাদেশ, যে সিরিজটি আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের অংশ। ১ জানুয়ারি থেকে শুরু হওয়ার কথা সিরিজটি।