নাটকীয়ভাবে ছিটকে গেলেন কামিন্স, নেতৃত্বে স্মিথ

২০১৮ সালের সেই বল টেম্পারিং কাণ্ডের পর আবার অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক হিসেবে মাঠে নামলেন স্টিভেন স্মিথ। অনেক অপেক্ষার পর অবশেষে স্বপ্নের ব্যাগি গ্রিন ক্যাপ পেলেন মাইকেল নিসার। তবে সবই হলো নাটকীয় কয়েকটি ঘণ্টার চমকপ্রদ পালাবদলের পর। মূল অধিনায়ক প্যাট কামিন্স কোভিড আক্রান্ত একজনের সংস্পর্শে আসায় বাধ্য হয়েই অ্যাডিলেইড টেস্ট শুরুর ঠিক আগে এতটা পরিবর্তনে মধ্য দিয়ে যেতে হলো অস্ট্রেলিয়াকে।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 Dec 2021, 05:21 AM
Updated : 16 Dec 2021, 05:21 AM

অ্যাডিলেইডের একটি রেস্তোরাঁয় ঘনিষ্ঠ বন্ধু ও নিউ সাউথ ওয়েলসের ফাস্ট বোলার হ্যারি কনওয়ের সঙ্গে ডিনারে গিয়েছিলেন কামিন্স। তাদের লাগোয়া এক টেবিলের একজনের কোভিড পজিটিভ হওয়ার খবর জানা যায় তখন।

কামিন্স তখনই রেস্তোরাঁ ত্যাগ করে সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষকে জানান। পরে পিসিআর পরীক্ষায় নেগেটিভও হন। কিন্তু সাউথ অস্ট্রেলিয়ার স্বাস্থ্য কতৃপক্ষের নিয়ম অনুযায়ী, সাত দিনের আইসোলেশনে থাকতে হবে এই ফাস্ট বোলারকে। অস্ট্রেলিয়ান অধিনায়ক তাই ছিটকে যান ইংল্যান্ডের বিপক্ষে এই টেস্ট থেকে।

ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া জানায়, মিচেল স্টার্ক ও ন্যাথান লায়নও ওই রেস্তোরাঁয় ছিলেন তখন। তবে তারা আক্রান্ত ব্যক্তির কাছাকাছি ছিলেন না বলে তাদেরকে কোনো বিধিনিষেধে পড়তে হয়নি।

ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার প্রধান নির্বাহী নিক হকলি জানান, কামিন্সরা কোনো নিয়ম ভাঙেননি। সিরিজটি জৈব-সুরক্ষা বলয়ে আয়োজন করা হলেও তা অনেকটা শিথিল। ছোট ছোট গ্রুপে বাইরে খেতে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া আছে।

কামিন্সের দুর্ভাগ্যই সৌভাগ্য হয়ে এসেছে নিসারের জন্য। ১১ বছরের প্রথম শ্রেণির ক্যারিয়ারে ৭০ ম্যাচ খেলে ২৩৬ উইকেট নেওয়ার পর অবশেষে টেস্ট ক্যাপ পেয়েছেন এই পেসার। ৩১ বছর বয়সী পেসারকে ব্যাগি গ্রিন ক্যাপ পরিয়ে দেন অস্ট্রেলিয়ার টেস্ট ইতিহাসের সফলতম পেসার গ্লেন ম্যাকগ্রা।

চোটের কারণে আগেই এই টেস্ট থেকে ছিটকে গেছেন জশ হেইজেলউড। অস্ট্রেলিয়ার পেস আক্রমণ তাই এখানে বেশ অনভিজ্ঞ। মিচেল স্টার্কের সঙ্গী দুই টেস্ট খেলা জাই রিচার্ডসন ও অভিষিক্ত নিসার।

ফাস্ট বোলার কামিন্সকে অধিনায়ক করার সময় স্মিথকে সহকারী করা হয়েছিল এটা মাথায় রেখেই যে, মাঝেমধ্যেই কামিন্সের চোট বা বিশ্রামের সময় আসবে। স্মিথের তাই তৈরিই থাকার কথা। তবে সবার ভাবনার চেয়ে অনেক দ্রুতই এসে গেল সময়টি। বল টেম্পারিং কাণ্ডের পর আনুষ্ঠানিকভাবেই নেতৃত্ব থেকে ২ বছর দূরে রাখা হয়েছিল এই ব্যাটসম্যানকে। এবার অধিনায়কত্বে ফেরায় একটি চক্র পূরণ হলো তার।

নেতৃত্বে ফেরার টেস্টে টস জেতেন স্মিথ। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে আগে ব্যাট করছে অস্ট্রেলিয়া।

এভাবে ছিটকে পড়ায় স্বাভাবিকভাবেই হতাশ কামিন্স। তবে টুইটারে তিনি শুভ কামনা জানালেন সতীর্থদের।

“টেস্ট মিস করায় ভীষণ হতাশ। তবে নিসারকে শেষ পর্যন্ত ব্যাগি গ্রিন ক্যাপে দেখতে রোমাঞ্চিত হয়ে আছি। অনেক কষ্ট করেছে সে এবং দারুণ স্কিলফুল একজন ক্রিকেটার।”

“আমি খুবই হতাশ তবে কোভিড গত দুই বছরে আমাদের সবাইকেই কঠিন পরিস্থিতিতে ফেলেছে। একসঙ্গেই হলা ফাটাব (দলের জন্য)।”

কামিন্সের নেতৃত্বে প্রথম টেস্ট সিরিজে সিরিজে এগিয়ে আছে অস্ট্রেলিয়া। বৃহস্পতিবার স্মিথ টসের সময় বললেন, একই পথে তিনি এই টেস্টে নেতৃত্বে দেবেন দলকে।

“এটা (নেতৃত্ব) অবশ্যই অনেক বড় সম্মান। যা কিছু হয়ে গেল, দারুণ কৌতূহল জাগানিয়া এক সকাল গেল। প্যাটির (কামিন্স) প্রতি সমব্যথী। তবে গত সপ্তাহে সে দলকে যেভাবে নেতৃত্ব দিয়েছে, চেষ্টা করব সেভাবে দিতে এবং আশা করি ভালো একটি সপ্তাহ যাবে আমাদের।”