মাশরাফি কাজ করতে চান ডেভেলপমেন্ট নিয়ে

কখনও ‘মেন্টর’, কখনও ‘ম্যানেজার’, কখনও আবার ‘যে কোনো ভূমিকা।’ বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান নানা সময়ে গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে বলেছেন, জাতীয় দলের জন্য মাশরাফি বিন মুর্তজার দুয়ার খোলা। কিন্তু মাশরাফি বলছেন, সেই দুয়ারে প্রবেশের ইশারাই তাকে কখনও দেওয়া হয়নি! সুযোগ পেলেও অবশ্য জাতীয় দল নিয়ে খুব একটা আগ্রহ নেই বাংলাদেশের সফলতম ওয়ানডে অধিনায়কের। তিনি কাজ করতে চান জাতীয় দলের জন্য ক্রিকেটার প্রস্তুত করে তোলায়।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 Dec 2021, 07:32 AM
Updated : 15 Dec 2021, 07:32 AM

মাশরাফিকে জাতীয় দলে সম্পৃক্ত করতে চাওয়ার কথা সংবাদমাধ্যমের সামনে বেশ কবারই বলেছেন নাজমুল হাসান। তবে দুজনের আলাপচারিতায় সরাসরি কখনও কোনো প্রস্তাব দেওয়া হয়নি বলেই দাবি মাশরাফির।

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দলের ব্যর্থতার পর মাশরাফি ও তামিম ইকবালকে বাসায় ডেকে কথা বলেন বিসিবি সভাপতি। সদ্য সমাপ্ত পাকিস্তান সিরিজেও মিরপুর টেস্টের সময় আবার তিনি মাশরাফিকে ডেকে নিয়ে কথা বলেন। নানাসময়ে ফোনালাপ তো আছেই।

তবে কোনোবারই কোনো দায়িত্ব বা ভূমিকা দেওয়া নিয়ে কথা হয়নি, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বললেন মাশরাফি।

“দুয়ার খোলা বা বন্ধ নিয়ে কোনো আলোচনা এখনও হয়নি। এটা হলো সত্যি কথা। পাপন ভাইয়ের সঙ্গে যতটা কথা হয়েছে… যেহেতু ব্যক্তিগতভাবে কথা হয়েছে, সেটা গোপনই রাখা উচিত। তবে সুনির্দিষ্ট বা আলাদা করে বলার মতো কিছু হয়নি।”

“আমার ভূমিকা কি হতে পারে, তা নিয়ে আলোচনা হয়নি। সুনির্দিষ্ট করে কিছু যে ‘তুমি এখানটায় কি মনে করো’ বা বদল কিছু করা, এরকম আলোচনাই হয়নি। স্রেফ ‘কী অবস্থা’, ‘কী খবর’, এই ধরনের কথাই হয়েছে। সিরিয়াস ইস্যু কিছুই হয়নি।”

কোনো দায়িত্ব দেওয়ার কথা গণমাধ্যমের সামনে বোর্ড সভাপতি স্রেফ সৌজন্য দেখিয়ে বলেছেন বলে ধারণা মাশরাফির।

“হয়েছে কী, যখন মিডিয়া প্রশ্ন করে, তখন হয়তো বলতে হয় বলার খাতিরে। উনার জায়গায় আমি হলেও হয়তো বলতাম যে, মাশরাফির দরজা খোলা।”

“সত্যি বলতে, আমি এমন একটা প্ল্যাটফর্মে আছি, আমি তো বলতে পারব না কিছু। ক্রিকেট বোর্ড চিন্তা করবে যে তারা আমাকে কোন জায়গায় কাজে লাগাতে চায়।”

বোর্ডের চিন্তা-ভাবনা পরিষ্কার না হলেও নিজের চাওয়ার কথা মাশরাফি জানালেন স্পষ্ট করেই। বোর্ড সভাপতিকেও সেটি জানিয়েছেন তিনি।

“জাতীয় দল নিয়েই কাজ করার জায়গা নেই, আমরা ভুল ধারণা নিয়ে দৌড়াচ্ছি। জাতীয় দল হলো সবশেষ পর্যায়, প্রস্তুত হয়ে সেখানে খেলবে ক্রিকেটাররা। এটা হলো ক্যান্সারের ফোর্থ স্টেজের মতো, ওখানে ক্রিকেটারা হয় বাঁচবে, অথবা মরবে। এর আগের স্টেজে কাজ করার সুযোগ আছে অনেক।”

“এ ধরনের আলাপই তো হয় না! আমি নিজে তবু পাপন ভাইকে বলেছি যে ডেভেলপমেন্ট নিয়ে কাজ করতে পারলে আমার নিজের কাছে ভালো লাগবে।”

তবে বোর্ড সভাপতির সঙ্গে আলাপচারিতার আগের অভিজ্ঞতায় কোনো দায়িত্ব পাওয়া নিয়ে আশার কোনো ছবি ফুটে উঠল না মাশরাফির কথায়।

“আমি ব্যক্তিগতভাবে ইতিবাচকভাবেই নিয়েছি যে আমাকে ডেকেছেন এবং আমি স্বতস্ফূর্তভাবে আলোচনা করতে চেয়েছি। কিন্তু প্রতিটি আলোচনার পর আমার মনে হয়েছে, কেন গিয়েছিলাম বা কি অর্জন হলো, কিছুই পেলাম না। আমার কাছে মনে হয়েছে, আমি ওখানকার মানুষ নই। ওই সম্পর্কিত বা বোর্ডের কেউ নই।”

“আমাকে ডেকেছেন, অবশ্যই সম্মানিত বোধ করেছি। কিন্তু আমার কোনো ভূমিকা নেই, এটাও সত্যি। আমি একটা কথা বলব, কিন্তু আমাকে যদি ওই অথোরিটি না দেওয়া হয়, তাহলে তো কাজ করা যায় না।”