শেফার্ডের দারুণ লড়াইয়েও পাকিস্তানের বিপক্ষে পারল না উইন্ডিজ

চ‍্যালেঞ্জিং রান তাড়ায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের আশা বাঁচিয়ে রেখেছিলেন ব্রেন্ডন কিং। কিন্তু এক ওভারে তিন উইকেট নিয়ে ম‍্যাচ অনেকটাই পাকিস্তানের মুঠোয় নিয়ে আসেন শাহিন শাহ আফ্রিদি। শেষ ওভার পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যান রোমারিও শেফার্ড। তবে পারেননি সিরিজে দলের টানা দ্বিতীয় হার এড়াতে।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 Dec 2021, 05:12 PM
Updated : 14 Dec 2021, 06:10 PM

করাচিতে মঙ্গলবার দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে ৯ রানে জিতেছে পাকিস্তান। ১৭৩ রানের লক্ষ্য দিয়ে ক্যারিবিয়ানদের তারা থামিয়ে দিয়েছে ১৬৩ রানে।

টানা দুই জয়ে তিন ম্যাচের সিরিজটি ঘরে তুলেছে বাবর আজমের দল।

শেষ ১৮ বলে ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রয়োজন ছিল ৪২ রান, হাতে তখন কেবল দুই উইকেট। সেখান থেকে দ্রুত রান তুলে ব্যবধান কমাতে থাকেন শেফার্ড। শেষ ওভারে যখন দরকার ২৩ রান প্রথম বলেই জীবন পান তিনি। পরের তিন বলের মধ্যে মারেন একটি করে ছক্কা ও চার। কিন্তু শেষ দুই বলে ১১ রানের সমীকরণ আর মেলাতে পারেননি তিনি।

শেফার্ড ১৯ বলে দুটি করে ছক্কা-চারে অপরাজিত থাকেন ৩৫ রান করে। ওপেনিংয়ে নেমে ৬৭ রান করেন কিং। তার ৪৩ বলের ইনিংসটি গড়া ৩ ছক্কা ও ৬ চারে।

এর আগে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে ভালো শুরু পেলেও বড় ইনিংস খেলতে পারেননি মোহাম্মদ রিজওয়ান, হায়দার আলিরা। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৩৮ রান আসে রিজওয়ানের ব্যাট থেকে। তবে শেষ দিকে ১২ বলে ২৮ রানের ক্যামিও ইনিংস খেলা শাদাব খান জেতেন ম্যাচ সেরার পুরস্কার।

পাকিস্তান এই ম্যাচেও দ্রুত হারায় বাবর আজমকে। ইনিংসের তৃতীয় ওভারে রান আউটে কাটা পড়েন স্বাগতিক অধিনায়ক। আকিল হোসেনকে উইকেট ছেড়ে বেরিয়ে এসে খেলার চেষ্টায় স্টাম্পড হয়ে যান ফখর জামান।

ছন্দে থাকা রিজওয়ান খেলে যান নিজের মতো। ওশেন টমাসকে এক ওভারে দুই চার ও এক ছক্কা হাঁকান তিনি। এই কিপার-ব্যাটসম্যানের নৈপুণ্যেই পাওয়ার প্লেতে দুই উইকেট হারালেও ৫০ রান তুলে পাকিস্তান।

আগের ম্যাচে ফিফটি করা রিজওয়ানকে এবার আর পঞ্চাশ ছুঁতে দেননি ওডিন স্মিথ। এই পেসারের অফ স্টাম্পের অনেক বাইরের শর্ট বল তাড়া করে শর্ট কাভারে ধরা পড়া রিজওয়ান। ৪ চার ও এক ছক্কায় তিনি করেন ৩৮ রান। ভাঙে হায়দার আলির সঙ্গে তার ৪৮ রানের জুটি।

স্মিথ পরের ওভারে ফিরিয়ে দেন আগের ম্যাচে ফিফটি করা হায়দারকেও। ডিপ পয়েন্টে ধরা পড়েন ৩১ রান করা হায়দার।

আগের ম‍্যাচে শেষ দিকে ঝড় তোলা মোহাম্মদ নওয়াজকে এদিন টিকতে দেননি হেইডেন ওয়ালশ। স্মিথকে মিডউইকেট দিয়ে ছক্কায় ওড়ানো আসিফ আলি পরের ওভারে ধরা পড়েন ওই জায়গাতেই।

টমাসকে তিন বলের মধ্যে দুই ছক্কা হাঁকিয়ে ডানা মেলার আভাস দেন ইফতিখার আহমেদ। কিন্তু ওই ওভারের শেষ বলে তিনি কট বিহাইন্ড হয়ে যান ২ ছক্কা ও এক চারে ১৯ বলে ৩২ করে।

শেষ দিকে নেমে ঝড় তোলেন শাদাব। ডমিনিক ড্রেকসকে ওভারে দুই চার ও এক ছক্কা মারেন। শেষ ওভারে শেফার্ডকে ওড়ান দুই ছক্কায়। তার ১২ বলে ২৮ রানের ক্যামিওতেই মূলত বড় সংগ্রহ দাঁড় করায় পাকিস্তান।

রান তাড়ায় মোহাম্মদ ওয়াসিমের করা তৃতীয় ওভারে ক্যাচ তুলে নেন শেই হোপ। ওই ওভারেই এই পেসারকে তিন বলের মধ্যে একটি করে চার ও ছক্কা মারেন শামারা ব্রুকস।

ঝড়ের আভাস দেওয়া এই ব্যাটসম্যানকে পরের ওভারে ফিরিয়ে দেন নওয়াজ। দ্রুত দুই উইকেট হারানো দলের হাল ধরেন কিং ও নিকোলাস পুরান। তাদের ব্যাটে প্রথম ১০ ওভারে ৭১ রান তোলে ক্যারিবিয়ানরা।

পুরানের বিদায়ে ভাঙে ৫৪ রানের জুটি। ৩৫ বলে ফিফটি তুলে নেন কিং। টি-টোয়েন্টিতে যা তার প্রথম। হারিস রউফকে ছক্কায় ওড়ানোর চেষ্টায় লং অনে ধরা পড়ে শেষ হয় তার লড়াই।

পরের ওভারে ক্যারিবিয়ান ব্যাটিংয়ে ধস নামান আফ্রিদি। শিকার করেন স্মিথ, ড্রেকস ও ওয়ালশকে। শেষ দিকে লড়াই চালালেও পেরে ওঠেননি শেফার্ড।

আগামী বৃহস্পতিবার সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে মুখোমুখি হবে দুই দল।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

পাকিস্তান: ২০ ওভারে ১৭২/৮ (রিজওয়ান ৩৮, বাবর ৭, ফখর ১০, হায়দার ৩১, ইফতিখার ৩২, নওয়াজ ১, আসিফ ৯, শাদাব ২৮*, ওয়াসিম ৫, হারিস ০*; আকিল ৪-০-১৬-১, ওশেন টমাস ৩-০-৩৫-১, শেফার্ড ৩-০-২৯-১, ওয়ালশ ৪-০-৩০-১, ড্রেকস ৩-০-৩৪-০, স্মিথ ৩-০-২৪-২)

ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ২০ ওভারে ১৬৩ (হোপ ১, কিং ৬৭, ব্রুকস ১০, পুরান ২৬, পাওয়েল ৪, স্মিথ ১২, শেফার্ড ৩৫*, ড্রেকস ০, ওয়ালশ ০, আকিল ২, টমাস ০; আফ্রিদি ৪-০-২৬-৩, নওয়াজ ৪-০-৩৬-২, ওয়াসিম ৪-০-৩৯-২, হারিস ৪-০-৪০-২, শাদাব ৪-০-২২-০)

ফল: পাকিস্তান ৯ রানে জয়ী

ম্যান অব দা ম্যাচ: শাদাব খান

সিরিজ: তিন ম্যাচের সিরিজে ২-০ তে এগিয়ে পাকিস্তান