জাকিরের ১৫৮ রানের পর আফিফের দৃঢ়তা

আগের দিন জাগানো সম্ভাবনাকে বাস্তবে রূপ দিলেন জাকির হাসান। কাঙ্ক্ষিত তিন অঙ্ক ছুঁয়ে খেললেন দেড়শ ছাড়ানো ইনিংস। তাতে বিসিবি দক্ষিণাঞ্চল পেল বড় লিড। জবাবে ইসলামী ব্যাংক পূর্বাঞ্চলকে টানছেন আফিফ হোসেন।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 Dec 2021, 01:29 PM
Updated : 14 Dec 2021, 01:30 PM

বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগের (বিসিএল) প্রথম রাউন্ডের ম্যাচে মঙ্গলবার ৪২৯ রানে থেমেছে দক্ষিণাঞ্চলের প্রথম ইনিংস। ৫ উইকেটে ১৯৫ রান নিয়ে তৃতীয় দিন শেষ করেছে পূর্বাঞ্চল। প্রথম ইনিংসে ২৬০ রানে গুটিয়ে যাওয়া দলটি এখনও পিছিয়ে ২৬ রানে।

দক্ষিণাঞ্চলকে ১৬৯ রানের লিড এনে দেওয়ার কারিগর জাকির ১৯ চার ও ২ ছক্কায় খেলেন ১৫৮ রানের ইনিংস। নবম উইকেটে তাকে দারুণ সঙ্গ দেওয়া নাসুম আহমেদ করেন ৫৯। বল হাতেও এ ম্যাচে বেশ উজ্জ্বল বাঁহাতি এই স্পিনার।

দ্বিতীয় ইনিংসে খেলতে নামা পূর্বাঞ্চল ভালো শুরুর পর দ্রুত কয়েকটি উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে। ৭৩ রানে অপরাজিত থেকে দলকে টানছেন আফিফ। তার সঙ্গে ১৮ রানে খেলছেন ইরফান শুক্কুর।

রাজশাহীর শহিদ কামরুজ্জামান স্টেডিয়ামে ৬ উইকেটে ২৮৮ রান নিয়ে দিন শুরু করা দক্ষিণাঞ্চল চতুর্থ বলেই হারায় উইকেট। মোহাম্মদ এনামুল হকের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে যান মেহেদি হাসান। পরে এনামুলের বলেই কট বিহাইন্ড হয়ে দ্রুত ফেরেন কামরুল ইসলাম রাব্বি।

সতীর্থদের আসা-যাওয়ায় ৯১ রানে দিন শুরু করা জাকিরের সেঞ্চুরি নিয়ে জাগে শঙ্কা। দারুণ ব্যাটিংয়ে তাকে সঙ্গ দেন ১০ নম্বরে নামা নাসুম। এই জুটিতে ১৯৭ বলে ক্যারিয়ারে নবমবার তিন অংকে পা রাখেন জাকির।

তাদের দুইজনের ব্যাটে রান আসতে থাকে দ্রুত। এই পথচলায় ৬১ বলে ফিফটি স্পর্শ করেন নাসুম। প্রথম শ্রেণির ক্যারিয়ারে যা তার তৃতীয়।

নাসুম-জাকিরের ১০৪ রানের জুটি ভাঙেন রেজাউর রহমান রাজা। এই পেসারের বাউন্সারে কিপারের গ্লাভসে ধরা পড়েন ৫৯ রান করা নাসুম।

মেহেদি হাসান রানাকে নিয়ে দলের রান চারশ পার করেন জাকির। ১৫০ রানে তিনি পা রাখেন ২৭০ বলে। এরপরই শেষ হয়ে যায় তার লড়াই। মোহাম্মদ আশরাফুলকে সুইপ করতে গিয়ে কট বিহাইন্ড হয়ে যান তিনি।

প্রথম ইনিংসের মতো দ্বিতীয় ভাগেও পূর্বাঞ্চলকে ভালো শুরু এনে দেন আশরাফুল ও ইমরুল কায়েস। তাদের ৬১ রানের উদ্বোধনী জুটি ভাঙে আশরাফুলের বিদায়ে। মেহেদিকে এগিয়ে এসে স্লগ শট খেলে নাহিদুল ইসলামের হাতে ক্যাচ দেন তিনি।

এরপর টিকতে পারেননি ইমরুলও। নাসুমের বাড়তি বাউন্স করা বলে লেগ গালিতে ধরা পড়েন তিনি। যদিও আম্পায়ারের সিদ্ধান্তে অসন্তুষ্ট দেখা যায় তাকে। থাই প্যাডে বল লাগার কথা আঙুল দিয়ে দেখান তিনি। পরে হতাশায় মাথা নিচু করে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকেন উইকেটে।

শাহাদাত হোসেনকে টিকতে দেননি মেহেদি। যদিও কৃতিত্ব শর্ট লেগ ফিল্ডারের। উইকেটের ওপর ঝাঁপিয়ে ব্যাটসম্যানের পায়ের কাছের বল তালুবন্দি করেন তিনি। নাসুমের লাফিয়ে ওঠা বলে রনি তালুকদার হন কট বিহাইন্ড।

২৮ রানের মধ্যে ৪ উইকেট হারানো দলের হাল ধরার চেষ্টায় ব্যর্থ হন নাদিফ চৌধুরীও। নাহিদুলের দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে বোল্ড হয়ে যান তিনি।

সতীর্থদের আসা-যাওয়ার মাঝে এক প্রান্ত আগলে রাখেন আফিফ। ৭২ বলে তিনি পৌঁছান ফিফটিতে। দিনের শেষ বলে নাসুমকে ছক্কায় ওড়ানো বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান ৩ ছক্কা ও ৫ চারে ৭৩ রান নিয়ে আছেন অপরাজিত। ম‍্যাচ বাঁচাতে তার ও ইরফানের ব্যাটে তাকিয়ে পূর্বাঞ্চল।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

পূর্বাঞ্চল ১ম ইনিংস: ২৬০

দক্ষিণাঞ্চল ১ম ইনিংস: (আগের দিন ২৮৮/৬) ১১৮.২ ওভারে ৪২৯ (জাকির ১৫৮, মেহেদি ৩২, কামরুল ১, নাসুম ৫৯, মেহেদি রানা ৬*; নাঈম ২৯-৬-১২৭-৩, রুয়েল ১৫-২-৬০-০, মোহাম্মদ এনামুল ২২-৩-৬৯-৩, রেজাউর ২২-৪-৬৯-১, আশরাফুল ২৬.২-৪-৮২-৩, আফিফ ৪-১-১১-০)

পূর্বাঞ্চল ২য় ইনিংস: ৫৩ ওভারে ১৯৫/৫ (ইমরুল ৩৯, আশরাফুল ২৫, রনি ১২, শাহাদাত ৫, আফিফ ৭৩*, নাদিফ ১৭, ইরফান ১৮*; মেহেদি রানা ৩-০-২৫-০, কামরুল ৭-০-৩৪-০, নাসুম ১৭-২-৬৫-২, মেহেদি ১৮-৩-৪৭-২, নাহিদুল ৮-২-২০-১)