১৭৬ রানে থামলেন মিঠুন, ১৬২ রানে মিজানুর

জাতীয় ক্রিকেট লিগের বিবর্ণ দুই ব্যাটসম্যান মোহাম্মদ মিঠুন ও মিজানুর রহমান ফিরলেন স্বরূপে। বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগের (বিসিএল) নতুন আসরের প্রথম রাউন্ডেই মধ্যাঞ্চলের হয়ে দুজন খেললেন দেড়শ ছাড়ানো ইনিংস। দুজন মিলে গড়লেন এই টুর্নামেন্টের প্রথম তিনশ ছোঁয়া উদ্বোধনী জুটি।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 Dec 2021, 01:37 PM
Updated : 13 Dec 2021, 01:37 PM

দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষে মধ্যাঞ্চলের সংগ্রহ ২ উইকেটে ৪৩০ রান। প্রথম দিন উত্তরাঞ্চলকে ২১৯ রানে গুটিয়ে দেওয়া দলটি এগিয়ে ২১১ রানে।  

২১ চার ও ২ ছক্কায় মিঠুন করেন ১৭৬, সমান চার ও একটি বেশি ছক্কায় মিজানুর খেলেন ১৬২ রানের ইনিংস।

দুজনের জুটিতে আসে ৩২৭ রান। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে বাংলাদেশের তৃতীয় সর্বোচ্চ উদ্বোধনী জুটি এটি, বিসিএলে এটিই সেরা।  

চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামে সোমবার বিনা উইকেটে ৬১ রান নিয়ে দিন শুরু করে মধ্যাঞ্চল। এ দিন ৮৬ ওভার খেলে দুই ওপেনারকে হারিয়ে তারা যোগ করে ৩৬৯ রান।

এই ম্যাচের আগে নিয়মিত ওপেনার আব্দুল মজিদ কোভিড সংক্রান্ত জটিলতায় ছিটকে গেলে মিঠুন প্রথমবারে মতো নামেন ওপেন করতে। মিজানুরের সঙ্গে দারুণ জুটিতে জায়গা করে নেন রেকর্ড বইয়ে।

আগের দিন ওয়ানডের গতিতে রান করা মিঠুন সকালে পৌঁছান ফিফটিতে, ৬৪ বলে। সাবধানী ব্যাটিংয়ে এগোনো মিজানুর পঞ্চাশ স্পর্শ করেন ৮৯ বলে, আরিফুল হকের শর্ট বলে চার মেরে।

সদ্য সমাপ্ত জাতীয় লিগে খুলনার হয়ে ৯ ইনিংস মিলিয়ে কেবল ১৫৮ রান করা মিঠুন তিন অঙ্কে পা রাখেন ১৪৫ বলে। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে তার ত্রয়োদশ সেঞ্চুরি এটি।

সাবধানী শুরুর পর মিজানুর বাড়ান রানের গতি। এবার জাতীয় লিগে রাজশাহীর হয়ে ৮ ইনিংসে কোনো ফিফটি করতে না পারা এই ওপেনার লাঞ্চের আগে শেষ বলে পৌঁছান সেঞ্চুরিতে। তানবীর হায়দারের বল স্লগ সুইপে ছক্কায় উড়িয়ে তিনি শতরান পূর্ণ করেন ১৬৩ বলে। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে এটি তার দ্বাদশ সেঞ্চুরি।

শতরানের পরও থামাথামি নেই তাদের, দুই জনই ছাড়িয়ে যান দেড়শ। জুটির রান পার হয় তিনশর সীমানা।

প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে তৃতীয়বারের মতো তিনশ ছাড়ানো উদ্বোধনী জুটিতে থাকলেন মিজানুর। এর আগে যেহেতু লাল বলের ক্রিকেটে কখনও ওপেনিংয়ে নামেননি মিঠুন, স্বাভাবিকভাবেই এই তালিকায় প্রথম এলেন তিনি।

বাংলাদেশের প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে এ নিয়ে সাত বার উদ্বোধনী জুটিতে হলো তিনশ রান। এর পাঁচটি জাতীয় লিগে। একটি পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্টে। বিসিএলে হলো এই প্রথম।

শুরুর জুটিতে সর্বোচ্চ রানের আশা জাগালেও ৩২৭ রানে থামে মিঠুন ও মিজানুরের জুটি। নাঈম ইসলামের অফ স্পিনে ডিফেন্স করতে গিয়ে লাইন মিস করে এলবিডব্লিউ হন মিজানুর।

২৪৩ বলে ১৬২ রানে থামে তার ইনিংস।

২০১৮ সালে ঢাকা বিভাগের হয়ে আব্দুল মজিদ ও রনি তালুকদার জুটি ৩৫০ রানের রেকর্ড অক্ষত থেকে যায়।

মিজানুর আছেন দ্বিতীয় সর্বোচ্চ জুটিতেও। রাজশাহীর হয়ে ২০১৭ সালে নাজমুল হোসেন শান্তর সঙ্গে তিনি গড়েন ৩৪১ রানের জুটি।

ক্যারিয়ারের প্রথম ডাবল সেঞ্চুরির আশা জাগিয়ে ১৭৬ রানে থামেন মিঠুন। নোমান চৌধুরির কোমড় উচ্চতার আগের শর্ট বলে বাউন্ডারি মারেন তিনি। পরের বলটি ছিল বাউন্সার। বুক উচ্চতার বলে ঠিক মতো শট খেলতে না পেরে ধরা পড়েন কিপারের গ্লাভসে। শেষ হয় সাড়ে ৬ ঘণ্টায় তার ২৫৭ বলের ইনিংস।

দ্বিতীয় দিনে সেটাই উত্তরাঞ্চলের শেষ সাফল্য। তৃতীয় উইকেটে সৌম্য সরকার ও সালমান হোসেন এগিয়ে নেন মধ্যাঞ্চলকে। জাতীয় লিগে তিন ইনিংসে দুটি ফিফটি করা সৌম্য তিন চারে ৬৫ বলে করেন ৩৯। তার সঙ্গে ৭৪ রানের জুটিতে সালমানের অবদান ৫৪ বলে ৪০।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

উত্তরাঞ্চল ১ম ইনিংস: ২১৯

মধ‍্যাঞ্চল ১ম ইনিংস: (আগের দিন শেষে ৬১/০) ১০৩ ওভারে ৪৩০/২ (মিজানুর ১৬২, মিঠুন ১৭৬, সৌম্য ৩৯*, সালমান ৪০*; শফিকুল ২১-২-৮৯-০, নোমান ২০-২-৭৯-১, আরিফুল ১০-০-৪৪-০, সানজামুল ২৮-৩-১০২-০, আমিনুল ১১-২-৫৫-০, তানবীর ৪-০-১৭-০, নাঈম ৯-১-৩৩-১)