২০১৩ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির পর কোনো বিশ্ব আসরের শিরোপা পায়নি ভারত। সামনে সাদা বলের দুই সংস্করণের বিশ্বকাপ আছে একের পর এক। রোহিত তাকিয়ে আছেন সেই আসরগুলোর দিকে। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের ওয়েবসাইটে সাক্ষাৎকারে নতুন অধিনায়ক জানালেন নেতৃত্ব পাওয়ার প্রতিক্রিয়া, কথা বললেন সামনের চ্যালেঞ্জ, কোচের সঙ্গে সম্ভাব্য রসায়ন ও প্রাসঙ্গিক আরও অনেক কিছু নিয়ে।
নেতৃত্ব পাওয়ার অনুভূতি:
রোহিত শর্মা: প্রথমত, আমি দারুণ সম্মানিত ও কৃতজ্ঞ সুযোগটি পেয়ে। বিশাল এক দায়িত্ব এটি। আমি অবশ্যই উচ্ছ্বসিত। ভারতকে সাদা বলের ক্রিকেটে নেতৃত্ব দিতে মুখিয়ে আছি। রোমাঞ্চকর এক অভিযান হতে যাচ্ছে এটি। আগ্রহভরে তাকিয়ে আছি আমি।
নেতৃত্বের ধরন:
রোহিত: ভারতকে নেতৃত্ব দেওয়ার সীমিত কিছু সুযোগ আমি পেয়েছি। যখনই নেতৃত্ব দিয়েছি, চেষ্টা করেছি সবকিছু সাধারণ রাখতে। একটা ব্যাপার সবসময় বজায় রাখার চেষ্টা করেছি, ক্রিকেটারদের সঙ্গে যোগাযোগ যেন খুব পরিষ্কার থাকে। নিশ্চিত করতে চেয়েছি, নিজেদের ভূমিকা নিয়ে যেন তারা স্পষ্ট থাকে। এটিই আসলে সবকিছু, নিজের ভূমিকা সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা থাকা ও মাঠে নেমে তা করতে পারা।
কোচ রাহুল দ্রাবিড়ের সঙ্গে রসায়ন:
রোহিত: রাহুল ভাইয়ের সঙ্গে কাজ করা… স্রেফ তিনটি ম্যাচে কাজ করেছি, সেই অভিজ্ঞতা দারুণ ছিল। আমরা দেখেছি, তিনি কীভাবে ক্রিকেট খেলেছেন। খুব কঠিন ও শক্ত… পাশাপাশি নির্ভার একটা পরিবেশও থাকে, কারণ দলের আবহ হালকা ও আনন্দময় রাখা জরুরি। মাঠে যখন কাজটা খুব কঠিন, তখন নিজেদের চনমনে থাকাটা জরুরি। একটু মজা করা বা ওইরকম কিছু করা।
মাত্রই কদিন হয়েছে, তবে তার (দ্রাবিড়) সঙ্গে আগে এত সম্পৃক্ততা ছিল খেলাটা নিয়ে, নিজের খেলা নিয়ে, তাকে পাওয়াটা দারুণ। আশা করি, তার সঙ্গে সময়টা দারুণ কার্যকর হবে।
সামনের চ্যালেঞ্জ :
রোহিত: যখন চ্যালেঞ্জ আসে, কঠিন চ্যালেঞ্জ, সেখান থেকে বের হয়ে আসার পথটা জানা জরুরি। অতীতে এরকম হয়েছে, যখন আমাদের রান এরকম হয়ে গেছে যে ৩ উইকেটে ১০ বা ২ উইকেটে ১৫ কিংবা এরকম কিছু, সেখান থেকে আমরা ঘুরে দাঁড়াতে ব্যর্থ হয়েছি। সামনে এগিয়ে চলার পথে এটা আমাদের মাথায় রাখতে হবে।
এটা একটা জায়গা। আরও কিছু জায়গায় দল হিসেব উন্নতি করতে হবে। কারণ, দল হিসেবে উন্নতির কোনো শেষ নেই। বিভিন্ন জায়গায় আমাদের আরও ভালো হয়ে উঠতে হবে। উন্নতির অনেক জায়গা আছে। নিজে একজন ক্রিকেটার হিসেবে, এরপর দল হিসেবে আরও ভালো করার পথ সবসময় খুঁজতে হবে।
বিরাট কোহলির নেতৃত্বের অধ্যায়:
রোহিত: সে দলকে এমন একটা জায়গায় নিয়ে গেছে, যেখান থেকে পেছন ফিরে তাকানোর সুযোগ নেই। যে ৫ বছর অধিনায়কত্ব করেছে, সবসময়ই আমাদের সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছে সে। প্রতিটি ম্যাচ জয়ের দৃঢ়প্রতিজ্ঞা সেখানে স্পষ্ট ফুটে উঠেছে। পুরো দলের জন্যই এই বার্তা থাকত।
সামনে অনেক বিশ্ব আসর:
রোহিত: হ্যাঁ, সামনে অনেক বিশ্বকাপ আছে এবং ভারত অবশ্যই সবগুলো বিশ্বকাপে ভালো করতে চাইবে।
আমাদের অবশ্যই চ্যাম্পিয়নশিপ জিততে হবে, তবে সেটির একটি প্রক্রিয়া আছে। যেটি দল হিসেবে আমাদের অনুসরণ করতে হবে। কারণ, শিরোপা জিততে হলে অন্য অনেক কিছুরই খেয়াল রাখতে হবে আগে। তার পর চূড়ান্ত লক্ষ্যে মনোযোগ দিতে হবে। অনেক কিছুই তাই আমাদের করতে হবে।
সবশেষ আইসিসি ট্রফি আমরা জিতেছি ২০১৩ সালে। এরপর আর জিততে পারিনি। তবে ওই চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির (২০১৩) পর আমার মনে হয় না, আমরা ভুল কিছু করেছি। দল হিসেবে আমরা খেলেছি ও পারফর্ম করেছি। স্রেফ সামনে এগিয়ে যেতে যে বাড়তি জিনিসটুকু দরকার ছিল, সেটি করতে পারিনি। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট অনেক কঠিন, এরকম হতেই পারে।
তবে হ্যাঁ, এটা একটা চ্যালেঞ্জ তো বটেই। তবে আমরা সবাই পেশাদার। সবকিছু ঠিকঠাক করার পথে সঠিক পদক্ষেপে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করতে হবে আমাদের। সবকিছু ভালোভাবে করা গুরুত্বপূর্ণ। আমার দিক থেকে ছেলেদের প্রতি বার্তা হবে, ফাইনাল ও চূড়ান্ত লক্ষ্য নিয়ে না ভেবে প্রক্রিয়ায় মনোযোগ রাখা। সামনে ছোট ছোট দিকগুলো ঠিক রাখা। তার পর চূড়ান্ত লক্ষ্যে তাকাব।