ব্রিজবেনে অ্যাশেজের প্রথম টেস্ট ৯ উইকেটে জিতেছে অস্ট্রেলিয়া। ইংলিশদের বিপক্ষে গ্যাবায় ৩৫ বছর ধরে অপরাজিত স্বাগতিকরা। সবশেষ হেরেছিলে ১৯৮৬ সালে।
প্রথম ইনিংসে ১৪৭ রানে গুটিয়ে যাওয়া ইংল্যান্ড এবার আভাস দিয়েছিল বড় রান করার। কিন্তু আশা জাগিয়ে চতুর্থ দিন ২৯৭ রানেই শেষ হয়ে যায় তাদের দ্বিতীয় ইনিংস। তাতে প্রথম ইনিংসে ৪২৫ রান করা অস্ট্রেলিয়ার সামনে লক্ষ্য দাঁড়ায় কেবল ২০ রান। যা তারা ছুঁয়ে ফেলে ৬ ওভারেই।
দারুণ এক জয় দিয়ে অধিনায়কত্বের পথচলা শুরু হলো প্যাট কামিন্সের। পাঁচ টেস্টের সিরিজে তার দল এগিয়ে ১-০ ব্যবধানে।
সফরকারীদের তিনশর আগে থামিয়ে দেওয়ার পথে বড় অবদান রাখেন ন্যাথান লায়ন। ৯১ রান দিয়ে ৪ উইকেট নেওয়া এই অফ স্পিনার গড়েন দারুণ এক কীর্তি। অস্ট্রেলিয়ার তৃতীয় বোলার হিসেবে নাম লেখান ৪০০ উইকেটের ক্লাবে।
২ উইকেটে ২২০ রান নিয়ে শনিবার দিন শুরু করা ইংল্যান্ডের ইনিংস প্রথম সেশনেই শেষ হয়ে যায়। রুট-মালানের ১৬২ রানের জুটি ভাঙার পর হুড়মুড় করে ভেঙে পড়ে তাদের ব্যাটিং। মাত্র ৭৪ রান তুলতেই ৮ উইকেট হারায় তারা।
তৃতীয় দিন শেষ মনে হচ্ছিল, দ্বিতীয় নতুন বল হতে পারে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। তবে এর আগেই ইংল্যান্ডকে নাড়িয়ে দেন লায়ন। ৩২৬ দিন ধরে ৩৯৯ উইকেটে আটকে থাকা এই স্পিনার দাভিদ মালানকে ফিরিয়ে মাতেন ৪০০ উইকেটের মাইলফলকে পা রাখার উল্লাসে। উইকেট ছেড়ে বেরিয়ে এসে খেলার চেষ্টায় ব্যাট-প্যাডে বল লেগে সিলি পয়েন্টে ধরা পড়লে শেষ হয় মালানের ১০ চারে ৮২ রানের লড়াই।
অস্ট্রেলিয়ায় প্রথম সেঞ্চুরি অধরাই রয়ে গেল রুটের। ১০ চারে ৮৯ রান করা ইংলিশ অধিনায়ককে কট বিহাইন্ড করে দেন ক্যামেরন গ্রিন।
এরপর আর পথে ফিরতে পারেনি ইংল্যান্ড। আসা-যাওয়ার মধ্যে থাকেন বাকি ব্যাটসম্যানরা। শেষের সাত ব্যাটসম্যানের কেউ করতে পারেননি ২৫ রানও।
লায়নের বাড়তি লাফানো বল কাট শট খেলতে গিয়ে স্লিপে ধরা পড়েন অলি পোপ। কামিন্সের বলে গালিতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান বেন স্টোকস। জশ হেইজেলউডের বলে অ্যালেক্স কেয়ারির গ্লাভসে ধরা পড়েন জস বাটলার।
শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে ক্রিস ওকসকে থামিয়ে ইংলিশদের ইনিংস গুটিয়ে দেন গ্রিন। এই পেস-বোলিং অলরাউন্ডার ও কামিন্স নেন দুটি করে উইকেট।
পাঁজরে চোট থাকায় ছোট্ট লক্ষ্য তাড়ায় ডেভিড ওয়ার্নারকে ব্যাটিংয়ে নামায়নি অস্ট্রেলিয়া। মার্কাস হ্যারিসের সঙ্গে ওপেন করতে পাঠানো হয় কেয়ারিকে। প্রথম শ্রেণির ক্যারিয়ারে তৃতীয়বার ওপেন করলেন এই কিপার-ব্যাটসম্যান।
কিন্তু অভিষেক টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসেও ব্যর্থ হন কেয়ারি। অলিভার রবিনসনের বলে হয়ে যান কট বিহাইন্ড। পরে হ্যারিস দলকে পৌঁছে দেন জয়ের বন্দরে।
আগামী বৃহস্পতিবার অ্যাডিলেইডে শুরু হবে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্ট।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ইংল্যান্ড ১ম ইনিংস: ১৪৭
অস্ট্রেলিয়া ১ম ইনিংস: ৪২৫
ইংল্যান্ড ২য় ইনিংস: (আগের দিন ২২০/২) ১০৩ ওভারে ২৯৭ (মালান ৮২, রুট ৮৯, স্টোকস ১৪, পোপ ৪, বাটলার ২৩, ওকস ১৬, রবিনসন ৮, উড ৬, লিচ ০*; স্টার্ক ২০-৩-৭৭-১, হেইজেলউড ১৪-৬-৩২-১, কামিন্স ২০-৬-৫১-২, লায়ন ৩৪-৫-৯১-৪, গ্রিন ১২-৩-২৩-২, লাবুশেন ৩-০-১৪-০)
অস্ট্রেলিয়া ২য় ইনিংস: (লক্ষ্য ২০) ৫.১ ওভারে ২০/১ (কেয়ারি ৯, হ্যারিস ৯*, লাবুশেন ০*; রবিনসন ৩-০-১৩-১, ওকস ২-০-৩-০, উড ০.১-০-৪-০)
ফল: অস্ট্রেলিয়া ৯ উইকেটে জয়ী
ম্যান অব দা ম্যাচ: ট্রাভিস হেড
সিরিজ: ৫ টেস্টের সিরিজের অস্ট্রেলিয়া ১-০ তে এগিয়ে