ভারতের বিপক্ষে মুম্বাই টেস্টের দ্বিতীয় দিন এই মাইলফলক স্পর্শ করেন এজাজ। ৪৭.৫ ওভার বোলিংয়ে ১১৯ রানে নেন ১০ উইকেট। টেস্ট ইতিহাসের তৃতীয় সেরা বোলিং এটি, নিউ জিল্যান্ডের সর্বকালের সেরা।
এবারের আগে একাই কোনো বোলারের ১০ উইকেট টেস্ট ক্রিকেট দেখেছিল ১৯৯৯ সালে। ঘরের মাঠে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানকে গুঁড়িয়ে ৭৪ রানে ১০ উইকেট নিয়েছিলেন ভারতীয় লেগ স্পিনার অনিল কুম্বলে। এবারও ভারতের মাটিতে কীর্তিটির পুনরাবৃত্তি হলেও এই দফায় ভুক্তভোগী স্বাগতিকরাই।
১০ উইকেটের চোখধাঁধানো কীর্তি টেস্ট ক্রিকেটে প্রথম দেখিয়েছিলেন জিম লেকার। ১৯৫৬ অ্যাশেজে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে ৫৩ রানে ১০ উইকেট নিয়েছিলেন ইংলিশ অফ স্পিনার।
ছোট্ট এই তালিকায় এবার যোগ দিলেন এজাজ। অকল্পনীয় এক অর্জন তো বটেই, তার জন্য এই প্রাপ্তির মাহাত্ন্য বেড়ে যায় আরেকটি কারণেও। নিজের জন্মশহর মুম্বাইয়েই যে তার হাতে ধরা দিল অসাধারণ এই কীর্তি।
সব কিছু মিলিয়ে, এজাজের এই অর্জনকে স্বপ্ন সত্যি হওয়ার মতো বললেন ভারতের সাবেক ক্রিকেটার ভিভিএস লক্ষ্মণ। টুইট করে কুর্নিশ জানালেন তিনি কিউই স্পিনারকে।
“সেনসেশনাল! জাস্ট সেনসেশনাল!! টেস্টের এক ইনিংসে ১০ উইকেট নেওয়াই স্বপ্ন সত্যি হওয়ার মতো। কুর্নিশ এজাজ প্যাটেল। তুমি এখন জিম লেকার ও অনিল কুম্বলের অভিজাত ক্লাবে। আর এটা তুমি করলে যেই শহরে জন্ম নিয়েছিলে, সেখানে। ওয়াও!”
টেস্টের প্রথম দিন ৪ উইকেট নেওয়া এজাজ দ্বিতীয় দিন নেন বাকি ছয়টি। লাল বলের ক্রিকেটে ভারতের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি কুম্বলের চোখে প্রথম দুই দিনে ১০ উইকেট নেওয়া আরও বিশেষ কিছু। দারুণ এই অর্জনের পর এজাজকে তিনি স্বাগত জানালেন নিজের ক্লাবে।
“এই ক্লাবে তোমাকে স্বাগতম। দারুণ বোলিং করেছো! টেস্টের প্রথম ও দ্বিতীয় দিনে এই অর্জনে বিশেষ প্রচেষ্টা লাগে।”
ভারতীয় স্পিনার হরভজন সিং বললেন, ২২ বছর পর টেস্ট ক্রিকেটে গড়া এজাজের এই কীর্তি স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
“এজাজ প্যাটেল। এটা চিরকাল (মানুষের) মনে থাকবে। ৪৭.৫-১২-১১৯-১০, স্রেফ অসাধারণ। তোমার জন্য দাঁড়িয়ে করতালি।”
ভারতের সাবেক অলরাউন্ডার ও সাবেক কোচ রবি শাস্ত্রীর দৃষ্টিতে, প্রতিপক্ষের সব উইকেট নেওয়া এক কথায় একজন বোলারের জন্য অবিশ্বাস্য এক অর্জন।
“এটা ক্রিকেটে সবচেয়ে কঠিন কাজগুলোর একটি। এক ইনিংসে (প্রতিপক্ষের) পুরো দলকে নিজের ঝুলিতে রাখাটা সত্যিই অসাধারণ। এক কথায় অবিশ্বাস্য। দারুণ দেখিয়েছো এজাজ প্যাটেল।”
ইংল্যান্ডের সাবেক স্পিনার গ্রায়েম সোয়ান টুইট করে বললেন, তার মুগ্ধতা সীমা ছাড়িয়ে গেছে।
“চালিয়ে যাও বন্ধু। এখনও পর্যন্ত স্মরণীয় এক অর্জন, তোমাকে নিয়ে এর চেয়ে বেশি মুগ্ধ আর হতে পারতাম না…”
অস্ট্রেলিয়ার সীমিত ওভার ক্রিকেটের অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চের কাছে এটা তার দেখা সবচেয়ে অসাধারণ এক অভিজ্ঞতা।
“এটা আমার দেখা সবচেয়ে দারুণ পারফরম্যান্স!! এজাজ প্যাটেল…কী অসাধারণ পারফরম্যান্স।”
কুম্বলের ইনিংসে ১০ উইকেট নেওয়ার কীর্তি গড়ার সাক্ষী ছিলেন শহিদ আফ্রিদি। দিল্লিতে হওয়া ওই টেস্টের পাকিস্তান একাদশে ছিলেন তিনি। এবার একই কীর্তি চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের বিপক্ষে এজাজের করা দেখে পুরনো দুঃস্মৃতি মনে পড়ল পাকিস্তানের সাবেক এই অলরাউন্ডারের।
“দারুণ কাজ এজাজ!! দুর্দান্ত একটি কৃতিত্বের জন্য অভিনন্দন, আমার এখনও ১৯৯৯ সালের দিল্লি টেস্টের কিছু স্মৃতি মনে আছে, কুম্বলের অসাধারণ স্পেল। দ্বিতীয় শতক করার পথেই ছিলাম(৪১ রানে ছিলেন তিনি) তখন আমাকে আউট করা হয়েছিল।”