কোহলি-পুজারা শূন্য, মায়াঙ্কের দুর্দান্ত সেঞ্চুরি

ফেরার ম্যাচের প্রথম ধাপটা রাঙাতে পারলেন না বিরাট কোহলি। অধিনায়কের মতো শূন্য রানে ফিরলেন চেতেশ্বর পুজারাও। ভালো শুরুর পর শূন্য রানে তিন উইকেট হারানোর ধাক্কা ভারত কাটিয়ে উঠল মায়াঙ্ক আগারওয়ালের দুর্দান্ত সেঞ্চুরিতে।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 Dec 2021, 12:32 PM
Updated : 3 Dec 2021, 03:31 PM

ওপেনার মায়াঙ্কের ব্যাটেই নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে মুম্বাই টেস্টে বড় সংগ্রহের সম্ভাবনা জাগিয়েছে স্বাগতিকরা। সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম দিন শেষে ভারতের রান ৪ উইকেটে ২২১।

ক্যারিয়ারের চতুর্থ টেস্ট সেঞ্চুরিতে ১২০ রানে অপরাজিত আছেন মায়াঙ্ক। তার ২৪৬ বলের ইনিংসটি গড়া ১৪ চার ও ৪ ছক্কায়।

ভারতের ৪টি উইকেটই নিয়েছেন মুম্বাইয়ে জন্ম নেওয়া নিউ জিল্যান্ডের বাঁহাতি স্পিনার এজাজ প্যাটেল।

ম্যাচ শুরুর আগেই দুই দলের জন্য আসে দুঃসংবাদ। চোট নিয়ে ভারত দল থেকে ছিটকে যান অজিঙ্কা রাহানে, ইশান্ত শর্মা ও রবীন্দ্র জাদেজা। কনুইয়ের পুরনো চোটে মাঠের বাইরে চলে যান নিউ জিল্যান্ড অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন।

ভারতের নেতৃত্বে ফেরেন কিউইদের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ ও শুরুর টেস্টে না খেলা কোহলি। নিউ জিল্যান্ডকে নেতৃত্ব দেওয়ার ভার পড়ে টম ল্যাথামের কাঁধে। তাতে এই টেস্ট মনে করিয়ে দেয় ১৩২ বছরের পুরনো স্মৃতি।

সুদীর্ঘ টেস্ট ইতিহাসে দুই ম্যাচের সিরিজে চার জনের নেতৃত্ব দেওয়ার ঘটনা এটা দ্বিতীয়বার। প্রথমবার এমনটা দেখা গিয়েছিল ১৮৮৮-৮৯ মৌসুমে দক্ষিণ আফ্রিকা-ইংল্যান্ড সিরিজে।

আগের রাতের বৃষ্টিতে ভেজা আউটফিল্ডের কারণে প্রথম সেশনে একটি বলও খেলা হয়নি। ভারত টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামে লাঞ্চের পর।

এই ম্যাচ দিয়ে পাঁচ বছর পর টেস্ট ফিরেছে ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে। নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে ভারত এই মাঠে খেলছে ১৯৮৮ সালের পর প্রথমবার।

প্রথম দিনের উইকেটে পেসারদের জন্য ছিল না তেমন সহায়তা। স্পিনাররা কিছুটা টার্ন ও বাউন্স অবশ্য পেয়েছেন।

ভারতের শুরুটা হয় দারুণ। প্রথম টেস্টে দুই ইনিংসেই কাইল জেমিসনের বলে বোল্ড হয়েছিলেন শুবমান গিল। এবার দীর্ঘদেহী কিউই পেসারের প্রথম ওভারে তিনটি চার মারেন ভারত ওপেনার। টেস্টে সম্প্রতি বাজে সময় কাটানো মায়াঙ্ক শুরুতে ছিলেন কিছুটা সতর্ক।

ফিফটির পথে থাকা শুবমান আগের বলে স্টাম্পিং থেকে বেঁচে যাওয়ার পরই বিদায় নেন ৪৪ রানে। এজাজের অফ স্টাম্পের বাইরের বল জায়গায় দাঁড়িয়ে খেলে স্লিপে ক্যাচ দেন তরুণ ব্যাটসম্যান। তার ৭১ বলের ইনিংসে ৭টি চারের পাশে ছক্কা একটি।

স্কোর ৮০ রেখেই এজাজের পরের ওভারে কোহলি ও পুজারাকেও হারায় ভারত। বেরিয়ে এসে খেলার চেষ্টায় বলের লাইন মিস করে বোল্ড হন পুজারা। ডিফেন্স করার চেষ্টায় কোহলি হন এলবিডব্লিউ।                                

আউটটি নিয়ে অবশ্য খানিকটা সংশয়ের অবকাশ রয়ে যায়। টিভি রিপ্লেতে দেখা যায়, বল প্রায় একইসঙ্গে ব্যাট ও প্যাডে লাগে। মাঠের আম্পায়ার আউট দেন, কোহলি রিভিউ নিয়ে রক্ষা পাননি। বল আগে ব্যাটে লেগেছে কি না, তার যথেষ্ট প্রমাণ না পাওয়ায় মাঠের আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত বহাল রাখেন থার্ড আম্পায়ার।

এজাজের পরের ওভারে পরপর ছক্কা-চার মেরে চাপ সরানোর চেষ্টা করেন মায়াঙ্ক। টেস্টে ১০ ইনিংস পর তিনি ফিফটি স্পর্শ করেন ১১৯ বলে। চা বিরতিতে ভারতের রান ছিল ৩ উইকেটে ১১৩।

আগের টেস্টে অভিষেকে সেঞ্চুরি ও ফিফটি করা শ্রেয়াস আইয়ার এবার ইনিংস বড় করতে পারেননি। ১৮ রান করে এজাজের বলে তিনি ধরা পড়েন কিপারের গ্লাভসে। ভাঙে ৮০ রানের চতুর্থ উইকেট জুটি।

এরপর ঋদ্ধিমান সাহাকে সঙ্গী করে এগিয়ে যান মায়াঙ্ক। ৯৬ থেকে ড্যারিল মিচেলকে দারুণ এক কাভার ড্রাইভে চার মেরে তিন অঙ্ক স্পর্শ করেন ৩০ বছর বয়সী ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান।

দিনের শেষের আগের বলে এজাজকে বেরিয়ে এসে মায়াঙ্ক ছক্কা মারেন লং অফের ওপর দিয়ে। মাঝে ঋদ্ধিমানও খেলেন দারুণ কিছু শট। এই কিপার-ব্যাটসম্যান ৫৩ বলে ৩ চার ও একটি ছক্কায় অপরাজিত আছেন ২৫ রানে। পঞ্চম উইকেটে দুজনের অবিচ্ছিন্ন জুটির রান ৬১।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

ভারত ১ম ইনিংস: ৭০ ওভারে ২২১/৪ (মায়াঙ্ক ১২০*, শুভমান ৪৪, পুজারা ০, কোহলি ০, শ্রেয়াস ১৮, ঋদ্ধিমান ২৫*; সাউদি ১৫-৫-২৯-০, জেমিসন ৯-২-৩০-০, এজাজ ২৯-১০-৭৩-৪, সমারভিল ৮-০-৪৬-০, রাচিন ৪-০-২০-০, মিচেল ৫-৩-৯-০)