ভঙ্গুর টপ অর্ডার ও মুমিনুলের ‘দায়’

যেখানে প্রয়োজন ভিত গড়া, সেখানেই শুরু হয় ভেঙে পড়া! চট্টগ্রাম টেস্টে দুই ইনিংসেই স্রেফ বিধ্বস্ত হয়েছে বাংলাদেশের টপ অর্ডার। মুমিনুল হকের মতে, বাংলাদেশের সম্ভাবনাও মুখ থুবড়ে পড়েছে সেখানেই। তিনি নিজে ব্যাট করেছেন চার নম্বরে। তবে ব্যর্থতার দায় বাংলাদেশ অধিনায়ক সবচেয়ে বেশি দিচ্ছেন নিজেকেই।

ক্রীড়া প্রতিবেদকচট্টগ্রাম থেকে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 Nov 2021, 11:39 AM
Updated : 30 Nov 2021, 11:39 AM

চোটের কারণে এবার অভিজ্ঞ ওপেনার তামিম ইকবালকে পায়নি বাংলাদেশ। অন্যরা পারেননি সেই ঘাটতি পুষিয়ে দিতে। দুই ওপেনার সাদমান ইসলাম ও সাইফ হাসান ব্যর্থ পুরোপুরি। তিনে নামা নাজমুল হোসেন শান্তও পারেননি প্রত্যাশা পূরণ করতে।

ম্যাচের প্রথম সকালে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামা দল টপ অর্ডার হারিয়ে ফেলে ঘণ্টাখানেকের মধ্যে। লিটন দাস ও মুশফিকুর রহিমের দারুণ ব্যাটিংয়ে সেই বিপর্যয় থেকে রক্ষা মেলে। পরে বোলারদের সৌজন্যে লিডও ধরা দেয় ৪৪ রানে। কিন্তু এগিয়ে থাকা বাংলাদেশ আবার পিছিয়ে যায় দ্বিতীয় ইনিংসেও টপ অর্ডার হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ায়। ৬ ওভারের মধ্যে পড়ে যায় ৩ উইকেট। এবার আর সেখান থেকে উদ্ধার হয়নি দল।

পাকিস্তানের শুরুর চিত্র ছিল ঠিক উল্টো। আবিদ আলি ও অভিষিক্ত আব্দুল্লাহ শফিক প্রথম ইনিংসে শুরুর জুটিতে তোলেন ১৪৬ রান, দ্বিতীয় ইনিংসে ১৫১। মুমিনুলের মতে, টপ অর্ডারের এই সাফল্য-ব্যর্থতাই হয়ে উঠেছে ম্যাচের নিয়ামক।

“অবশ্যই পার্থক্য এখানেই গড়ে দিয়েছে। দুই ইনিংসেই খেলার অর্ধেক শেষ শুরুতে। প্রথম ইনিংসে ৪০ রানে ৪ উইকেট নেই (আসলে ৪৯ রানে)। দ্বিতীয় ইনিংসেও ওরকম (২৫ রানে ৪ উইকেট)। ওপরের দিকে এই অবস্থা হলে ব্যাট করাটা খুব কঠিন। একাদশে ৭-৮ জন ব্যাটসম্যান থাকে। সবার পক্ষে প্রতি ইনিংসে অবদান রাখা কঠিন। ওপরের দিকে দায়িত্ব নিয়ে ব্যাটিং করলে খেলাটা আরও ভালো হতে পারত।”

টপ অর্ডার সাধারণত গড়া প্রথম তিন ব্যাটসম্যানকে নিয়ে। মুমিনুল ব্যাট করেছেন চার নম্বরে। তবে দুই ইনিংসেই তিনি আউট হয়েছেন তিন নম্বর ব্যাটসম্যান হিসেবে। ব্যর্থতার এই কাঠগড়ায় তাই নিজেকেও তুলছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক।

“টপ অর্ডারে আমিও আছি। টপ অর্ডারে বাকি সবাই ছিল অনভিজ্ঞ, ১০-১২ টেস্ট খেলা। আমিই একমাত্র ছিলাম ৪৫-৪৭ টেস্ট খেলা (৪৬তম টেস্ট ছিল এটি তার)। আমার ওপর দায়িত্ব বেশি ছিল, আমি দায়িত্বটা নিতে পারিনি। কাজেই দায়টা আমার নিজের ওপরই নিচ্ছি।”

“আমি বলব, আমার আরও দায়িত্ব নিয়ে ব্যাট করা উচিত ছিল। চার নম্বরে যদি বড় ইনিংস খেলতে পারতাম, তাহলে ভালো দিকে যেতে পারতাম।

তামিমকে পাওয়া যাবে না পরের টেস্টেও। বাইরে এমন কেউ অপেক্ষায় নেই, যার ওপর নির্ভর করা যায়। প্রথম টেস্টের স্কোয়াডে ছিলেন তরুণ মাহমুদুল হাসান জয়। তাকে নিয়ে কিছু আশা করা যেতে পারে, তবে ‘ভরসা’ চাপিয়ে দেওয়া হবে অন্যায়।

পরের টেস্টের আগে স্রেফ দুই দিনের অনুশীলন সেশন আছে। ভুল শোধরানোর বা দুর্বলতা কাটানোর জন্য যথেষ্ট অনুশীলনের সুযোগও নেই। রাতারাতি সমাধান দেখছেন না মুমিনুল। পরের টেস্টের আগে তাই মানসিক প্রস্তুতিকেই গুরুত্বপূর্ণ মনে করেন অধিনায়ক।

“এই দুই দিনে অনুশীলন করে খুব বেশি অর্জন করতে পারবেন না। সোজা বাংলায় যদি বলি, এই দুদিনে অত বেশি উন্নতি করতে পারবেন না। তাই বেশি চিন্তা না করে মানসিকভাবে নিজেকে শক্ত রাখা জরুরি। কোন জায়গাগুলোয় তারা আক্রমণ করতে পারে, এসব নিয়ে একটু চিন্তা করা।”

“মানসিকভাবে নিজেকে ঠিক রাখা যে এই বলের বিপক্ষে খেলব, সেটার জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকা। মানসিকভাবে ফিট থাকতে পারলে ঘুরে দাঁড়ানো যায়।”