ইংলিশ চ্যালেঞ্জের জন্য প্রস্তুত ইংলিস

ইংল্যান্ডে তার শেকড়। জন্ম, বেড়ে ওঠা ও ক্রিকেটের হাতেখড়ি সবই সেখানে। কিন্তু জশ ইংলিস এখন অপেক্ষায় অস্ট্রেলিয়ার হয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পা রাখার। এই কিপার-ব্যাটসম্যান বললেন, আসছে অ্যাশেজ সিরিজের দলে সুযোগ পেলে জন্মভূমির বিপক্ষে নিজেকে মেলে ধরতে আত্মবিশ্বাসী তিনি।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 Nov 2021, 12:50 PM
Updated : 29 Nov 2021, 12:50 PM

ইংলিশ বাবা-মায়ের ঘরে ইংলিসের জন্ম ইংল্যান্ডের লিডসে। ক্রিকেট শিখেছেন ইয়র্কশায়ারের একাডেমিতে। এই কাউন্টির বিভিন্ন বয়সভিত্তিক দলে খেলেছেন চার মৌসুম।

ইংল্যান্ডের হয়েই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পা রাখার কথা ছিল ইংলিসের। কিন্তু জীবনের পথচলায় তিনি হয়ে গেছেন অস্ট্রেলিয়ার। তার বাবা-মা ছুটি কাটাতে প্রায়ই যেতেন অস্ট্রেলিয়ায়। দেশটিকে তাদের এতটা ভালো লেগে যায় যে, সেখানেই থিতু হওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তারা। ইংলিসের বয়স যখন ১৪, পুরো পরিবার পাকাপাকিভাবে পাড়ি জমায় সেখানে।

এরপর অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেট কাঠামোতেই নিজেকে গড়ে তোলা, এগিয়ে চলা এবং এখন অস্ট্রেলিয়ার হয়েই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের সীমানায়। দলটির টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ দলে চমক হয়ে এসেছিলেন তিনি। যদিও সেখানে মাঠে নামা হয়নি তার। অ্যাশেজের প্রথম দুই টেস্টের মূল দলে জায়গা না পেলেও আছেন অস্ট্রেলিয়ার ‘এ’ স্কোয়াডে।

এখন মূল দলেও জায়গা করে নেওয়ার সম্ভাবনা তার উজ্জ্বল। বিতর্কিত কাণ্ডে কিপার-ব্যাটসম্যান টিম পেইনের অধিনায়কত্ব ছাড়া ও অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য ক্রিকেট থেকে সরে দাঁড়ানো দরজা খুলে দিয়েছে ইংলিসের। তার সঙ্গে কিপারের জায়গার লড়াইয়ে আছেন অভিজ্ঞ অ্যালেক্স কেয়ারিও।

লাল বলের ক্রিকেটে নিজের পারফরম্যান্সের জোরেই টেস্ট দলে ডাক পাওয়ার আশায় আছেন ইংলিস। ৪৫টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচে ৩৪ গড়ে রান করেছেন দুই হাজার ২৪৬। গত বছর শেফিল্ড শিল্ডে ৮ ম্যাচে ৩ সেঞ্চুরিতে ৫৮৫ রান করেছেন ৭৩.১২ গড়ে। আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়েরও ছাপ রাখেন, স্ট্রাইক রেট ছিল ৮৫.০২!

অল্প সময়ের মধ্যে অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটের প্রথম সারিতে উঠে আসার পথটা ইংলিসের কাছে দারুণ রোমাঞ্চের, ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়াকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সেই গল্পই শোনালেন তিনি।

“শেষ (ঘরোয়া) মৌসুমটি নিশ্চিতভাবে আমার দুর্দান্ত কাটে। সম্ভবত এটাই আমার ক্যারিয়ারে সত্যিকারের প্রথম ভালো মৌসুম।”

“এই স্কোয়াডে জায়গা পাওয়া মানে সম্ভবত একটা সাফল্য, প্রমাণ করে যে সঠিক পথে আছি …আর এই অল্প সময়ের মধ্যে আমি এতদূর আসতে পেরেছি, এটা ভাবতেই অবিশ্বাস্য লাগে। আমার জন্য সত্যিই অনেক রোমাঞ্চের ব্যাপার।”

টেস্টের জন্য নিজেকে উপযুক্ত করে গড়ে তুলতে আগে থেকেই কাজ শুরু করেছেন ইংলিশ। সেই লক্ষ্যেই একসঙ্গে অনেক কিছু নিয়ে না ভেবে কাজের ও ভাবনার পরিসরকে সীমিত করে এনেছেন তিনি।

“আমাদের মনস্তাত্ত্বিক বিশেষজ্ঞ ও ব্যাটিং কোচ বিউ ক্যাসনের সঙ্গে এ নিয়ে অনেক কাজ করেছি।”

“(শেফিল্ড শিল্ডে) আমি সত্যিই আরও অনেক বলের মুখোমুখি হতে চেয়েছিলাম এবং আমার ইনিংসকে বড় করতে চেয়েছিলাম। মনোযোগের সীমানাকে ছোট করে আমি তা করতে সক্ষমও হয়েছিলাম এবং কয়েকটি সেঞ্চুরি করতে পেরেছিলাম, যা সত্যিই আনন্দদায়ক ছিল।”

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ দলে জায়গা পেলেও এক ম্যাচও খেলার সুযোগ আসেনি ইংলিসের। ফাইনালে কিপার-ব্যাটসম্যান ম্যাথু ওয়েড চোট নিয়ে না খেললে অস্ট্রেলিয়ার হয়ে অভিষেক হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল ছিল তার। তবে দলের সঙ্গে থেকে নিজেকে অনেক গুছিয়ে নিয়েছেন ২৬ বছর বয়সী এই ক্রিকেটার। জানালেন, টেস্টের পরীক্ষার জন্য তৈরি আছেন তিনি।

“আমি (বিশ্বকাপে) একাদশে জায়গা করে নিতে পারিনি।  তবে আমি খুব ভালো অনুশীলন করছি, দারুণভাবে বলে মারতে পারছি।”

“এই মুহুর্তে নিজের খেলা নিয়ে আমি খুব আত্মবিশ্বাসী। তাই সুযোগ পেলে দায়িত্বটা ভালোভাবে পালন করতে পারব বলে আমার বিশ্বাস। লাল বলের ক্রিকেটে অনেক খেলেছি। এখন আমি প্রস্তুত।”