শ্রেয়াসের সেঞ্চুরি, ল্যাথাম-ইয়াংয়ের ব্যাটে কিউইদের জবাব

আসলাম, দেখলাম, জয় করলাম; টেস্ট ক্রিকেটে শ্রেয়াস আইয়ারের শুরুটাকে এভাবে দেখাই যায়। তার দারুণ সেঞ্চুরিতে ভারত পেয়েছে সাড়ে তিনশর কাছে পুঁজি। টম ল্যাথাম ও উইল ইয়াংয়ের ব্যাটে দারুণভাবে এগিয়ে চলেছে নিউ জিল্যান্ডও। উদ্বোধনী জুটিতেই একশ পেরিয়ে গেছে তারা।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 Nov 2021, 12:32 PM
Updated : 26 Nov 2021, 12:54 PM

কানপুরে শুক্রবার ভারতকে ৩৪৫ রানে থামিয়ে ব্যাট করছে নিউ জিল্যান্ড। কোনো উইকেট না হারিয়ে ১২৯ রান নিয়ে দ্বিতীয় দিন শেষ করেছে সফরকারীরা।

নিউ জিল্যান্ডকে শক্ত ভিত গড়ে দেওয়া ইয়াং খেলছেন ৭৫ রানে। আর ৫০ রান নিয়ে অপরাজিত আছেন ল্যাথাম।

ভারতকে বড় সংগ্রহ এনে দেওয়ার মূল নায়ক শ্রেয়াস খেলেছেন ১০৫ রানের ইনিংস। টেস্ট অভিষেকে সেঞ্চুরি করা ভারতের ষোড়শ ক্রিকেটার তিনি। দেশটির হয়ে লাল বলের ক্রিকেটে পা রেখেই সেঞ্চুরি করার আগের কীর্তি পৃথ্বী শয়ের, ২০১৮ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে।

ভারতের ষোড়শ ক্রিকেটার হিসেবে টেস্ট অভিষেকে সেঞ্চুরি করেছেন শ্রেয়াস আইয়ার। ছবি: বিসিসিআই।

এদিনও স্পিনারদের জন্য কিছুটা সহায়তা ছিল উইকেটে। ৪ উইকেটে ২৫৮ রান নিয়ে খেলতে নামা ভারতের ব্যাটিংয়ে অবশ্য সকালের ১১ ওভারের এক স্পেলেই ধস নামান টিম সাউদি। এই সময় ৪ উইকেট তুলে নিয়ে টেস্ট ক্যারিয়ারে নিজের ১৩তম পাঁচ উইকেট পূর্ণ করেন তিনি। ৬৯ রান খরচায় ৫ উইকেট, ভারতের মাটিতে এই পেসারের দ্বিতীয় সেরা। ২০১৪ সালে ৭ উইকেট নিয়েছিলেন ৬৪ রান দিয়ে।

লাঞ্চ বিরতির পরপরই ভারতকে গুটিয়ে দেয় নিউ জিল্যান্ড। এদিন ৮৭ রান তুলতেই হাতে থাকা ৬ উইকেট হারায় স্বাগতিকরা।

দিনের তৃতীয় ওভারেই রবীন্দ্র জাদেজাকে হারায় তারা। আগের দিনের ৫০ রানের সঙ্গে কোনো রান যোগ না করেই তিনি বোল্ড হয়ে যান সাউদির বলে ব্যাটের কানায় লেগে। দলে ফেরা ঋদ্ধিমান সাহাকে কট বিহাইন্ড করে দ্রুত সাজঘরে ফেরান সাউদি।

শ্রেয়াস ছিলেন আত্মবিশ্বাসী। ৭৫ রান নিয়ে দিন শুরু করা ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান কাঙ্ক্ষিত সেঞ্চুরি তুলে নেন ১৫৭ বলে। এরপর তাকেও বেশিক্ষণ উইকেটে থাকতে দেননি সাউদি। শ্রেয়াসের ১৩ চার ও ২ ছক্কায় ১০৫ রানের ইনিংসটি শেষ হয় বাজে শটে কাভারে সহজ ক্যাচ দিয়ে।

এক ওভার পরই আবার দৃশ্যপটে সাউদি। এবার এই পেসারের শিকার আকসার প্যাটেল। কিপার টম ব্লান্ডেলের গ্লাভসে ধরা পড়েন তিনি।

সতীর্থদের আসা-যাওয়ার মাঝে দলের রান বাড়াতে থাকেন রবিচন্দ্রন অশ্বিন। কিন্তু লাঞ্চ বিরতির পরের ওভারেই তার ৩৮ রানের প্রতিরোধ ভাঙেন এজাজ প্যাটেল। অশ্বিনকে বোল্ড করার পর বাঁহাতি এই স্পিনার পরের ওভারে ইশান্ত শর্মাকে এলবিডব্লিউ করে ইতি টেনে দেন ভারতের ইনিংসের।

জবাব দিতে নেমে ল্যাথাম ও ইয়াং সাবধানী ব্যাটিংয়ে এগোতে থাকেন। উইকেটের খোঁজে ভারত অষ্টম ওভারেই আক্রমণে আনে অশ্বিনকে। কিন্তু স্পিন-পেস সব বোলারকেই দারুণভাবে সামাল দেন কিউই দুই ওপেনার।

সকালে দুর্দান্ত এক স্পেলে ভারতের ব্যাটিং গুঁড়িয়ে দিয়েছেন টিম সাউদি। ছবি: আইসিসি।

ইয়াংয়ের ব্যাটে কিছুটা রান আসলেও ল্যাথাম ছিলেন একেবারেই মন্থর। উইকেট ধরে রাখাতেই ছিল তার মনোযোগ। দুইবার তাকে এলবিডব্লিউ দিয়েছিলেন আম্পায়ার। কিন্তু রিভিউ নিয়ে বেঁচে যান তিনি প্রতিবারই।

ক্যারিয়ারের চতুর্থ টেস্ট খেলতে নামা ইয়াং দারুণ ব্যাটিংয়ে এগিয়ে যেতে থাকেন ফিফটির দিকে। চা বিরতির পর টেস্টে দ্বিতীয় পঞ্চাশ তিনি স্পর্শ করেন ৮৮ বলে। ইনিংসের ৫৫তম ওভারে ল্যাথামের ফিফটি আসে ১৫৭ বলে।

এই দুইজনের প্রতিরোধ শেষ পর্যন্তও ভাঙতে পারেনি ভারত। নতুন সকালে ভালো কিছুর আশায় থাকবে স্বাগতিকরা। নিউ জিল্যান্ডের এভাবেই এগিয়ে যাওয়ার।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

ভারত ১ম ইনিংস: (আগের দিন ২৫৮/৪) ১১১.১ ওভারে ৩৪৫ (শ্রেয়াস ১০৫, জাদেজা ৫০, ঋদ্ধিমান ১, অশ্বিন ৩৮, আকসার ৩, উমেশ ১০*, ইশান্ত ০; সাউদি ২৭.৪-৬-৬৯-৫, জেমিসন ২৩.২-৬-৯১-৩, এজাজ ২৯.১-৭-৯০-২, সমারভিল ২৪-২-৬০-০, রাচিন ৭-১-২৮-০)।

নিউ জিল্যান্ড ১ম ইনিংস: ৫৭ ওভারে ১২৯/০ (ল্যাথাম ৫০*, ইয়াং ৭৫*; ইশান্ত ৬-৩-১০-০, উমেশ ১০-৩-২৬-০, অশ্বিন ১৭-১-৩৮-০, জাদেজা ১৪-৪-২৮-০, আকসার ১০-১-২৬-০)