ইতিহাস গড়ে অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক কামিন্স

ফাস্ট বোলারদের কি অধিনায়কের দায়িত্ব দেওয়া যায়? ভালো অধিনায়ক হতে পারেন তারা? অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটের চিরন্তন দুই প্রশ্নের একটির উত্তর মিলল। আরেকটির উত্তর পাওয়ার পালাও শুরু হলো। সাম্প্রতিক গুঞ্জনকে সত্যি প্রমাণ করে অস্ট্রেলিয়ার টেস্ট নেতৃত্ব পেলেন প্যাট কামিন্স। ২০১৮ সালে বল টেম্পারিং কাণ্ডে নেতৃত্ব হারানো স্টিভেন স্মিথ এবার পেলেন সহ-অধিনায়কের দায়িত্ব।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 Nov 2021, 06:04 AM
Updated : 26 Nov 2021, 06:04 AM

চার বছর আগের বিতর্কিত টেক্সট ম্যাসেজের জের ধরে টিম পেইন নেতৃত্ব ছাড়ার পর অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটে চলছিল নতুন অধিনায়কের সন্ধান। শুক্রবার ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া ঘোষণা করে কামিন্সের নাম।

অস্ট্রেলিয়ার সুদীর্ঘ ক্রিকেট ইতিহাসে কোনো ফাস্ট বোলার পূর্ণকালীন অধিনায়ক হলেন এই প্রথম। এমনকি ভারপ্রাপ্ত দায়িত্বেও কোনো ফাস্ট বোলারের অস্ট্রেলিয়ার হয়ে টস করার সবশেষ ঘটনা ৬৫ বছর আগের। ১৯৫৬ সালের ভারত সফরে দ্বিতীয় টেস্টে মূল অধিনায়ক ইয়ান জনসন ও সহকারী কিথ মিলার চোটে পড়ায় নেতৃত্ব দিয়েছিলেন রে লিন্ডওয়াল।

পেইনের উত্তরসূরী হওয়ার লড়াইয়ে মূলত কামিন্স ও স্মিথই ছিলেন। নতুন নেতা বাছাইয়ের জন্য গঠিত ৫ সদস্যের কমিটি কেবল এই দুজনের সাক্ষাৎকারই নেন। এই কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতেই বৃহস্পতিবার কামিন্সের নাম ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার বোর্ডে অনুমোদন পায় বৃহস্পতিবার রাতে।

গত কিছুদিনের ঘটনাপ্রবাহে কামিন্সের দায়িত্ব প্রত্যাশিতই, তবে তিনি নিজে এটা আশা করেননি বলেই দাবি করলেন।

“দারুণ একটি অ্যাশেজ গ্রীষ্মের আগে এই দায়িত্ব পেয়ে আমি সম্মানিত। অপ্রত্যাশিত এই সম্মান পেয়ে আমি দারুণ কৃতজ্ঞ ও আগ্রহভরে সামনে তাকিয়ে আছি। গত কয়েক বছরে টিম পেইন যেভাবে নেতৃত্ব দিয়েছেন, আশা করি আমিও তেমনভাবে দিতে পারব।”

স্বীকৃত ক্রিকেটে নেতৃত্বের অভিজ্ঞতা খুব একটা নেই কামিন্সের। পেশাদার ক্রিকেটে তার একমাত্র নেতৃত্বের অভিজ্ঞতা নিউ সাউথ ওয়েলসের হয়ে গত মৌসুমে ঘরোয়া একদিনের ম্যাচের টুর্নামেন্টে চারটি ম্যাচ। তবে জাতীয় দলে তিনি লিডারশিপ গ্রুপের অংশ কয়েক বছর ধরেই। ২০১৮ সালে স্মিথের নেতৃত্ব যাওয়ার পর কামিন্সের নামও এসেছিল সম্ভাব্য অধিনায়ক হিসেবে। ফাস্ট বোলার বলেই হয়তো তখন পাননি দায়িত্ব। তবে ২০১৯ সাল থেকেই তিনি সহ-অধিনায়ক।

ফাস্ট বোলারদের অধিনায়ক করার ক্ষেত্রে বাধা মূলত যে কোনো সময় চোটে পড়ার দুর্ভাবনা। কামিন্সের চোটের ইতিহাসও আছে। তবে ক্যারিয়ারের শুরুর তুলনায় তিনি এখন অনেক ফিট। অস্ট্রেলিয়ার সবশেষ ৩৫ টেস্টের মাত্র দুটি তিনি খেলতে পারেননি।

তবে কামিন্স ফাস্ট বোলার বলেই হয়তো সহ-অধিনায়ক করা হয়েছে স্মিথকে। অস্ট্রেলিয়া সাধারণত ভবিষ্যৎ ভাবনায় রেখেই কাউকে সহ-অধিনায়কের দায়িত্ব দেয়। তবে কামিন্স চোটে পড়লে যে কোনো সময় নেতৃত্ব দিতে হতে পারে ভেবেই সহকারী হিসেবে বেছে নেওয়া হতে পারে স্মিথকে।

বল টেম্পারিং কাণ্ডের পর স্মিথ আবার নেতৃত্বে ফিরবেন, অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটে অনেকটা অভাবনীয়ই ছিল এটা। সময়ের স্রোতে এটিই এখন বাস্তব। তিনি নিজেও উচ্ছ্বসিত দায়িত্ব পেয়ে।

“দলের নেতৃত্বে ফিরতে পেরে আমি খুশি এবং যেকোনো ভাবে প্যাটকে সাহায্য ও সহায়তা করতে মুখিয়ে আছি। আমরা অনেক বছর ধরে একসঙ্গে খেলছি, নিজেদের নেতৃত্বের ধরন আমরা জানি।”