সিলেটের রেজাউর এখন বাংলাদেশ টেস্ট দলের পেসার। এবার জাতীয় লিগে তার পারফরম্যান্স এমনিতেই নজর কেড়েছিল নির্বাচকদের। পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজের আগে তাসকিন আহমেদ ও শরিফুল ইসলামের চোটও খুলে দিল দুয়ার। সেই পথ ধরেই প্রথমবার টেস্ট দলে আশ্রয় হলো রেজাউরের।
এবার জাতীয় লিগের প্রথম ম্যাচেই সিলেটের হয়ে খুলনার বিপক্ষে ৮ উইকেট নেন রেজাউর। পরের দুই ম্যাচে নেন চার উইকেট। সব মিলিয়ে ১০টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচে তার উইকেট ৩৩টি। এইচপি স্কোয়াডের আঙিনা ঘুরে এসেছেন এর মধ্যে, আয়ারল্যান্ড ‘এ’ দলের হয়ে লিস্ট ‘এ’ ম্যাচ খেলেছেন বাংলাদেশ ইমার্জিং দলের হয়ে।
এখন তিনি টেস্ট দলের অংশ। অথচ কয়েক বছর আগেও দেশের লাখো কিশোর-তরুণের মতো তিনিও ছিলেস স্রেফ টেপ টেনিসের ক্রিকেটার। সেই ভীড় থেকে সামনে এগিয়ে আলাদা একজন হয়ে ওঠার গল্প শোনালেন রেজাউর নিজেই।
“টেপ টেনিস ক্রিকেট থেকে অনুপ্রাণিত হওয়া…আমাদের এলাকায় টেপ টেনিস খেলার পর একটি টুর্নামেন্ট হয়েছিল ক্রিকেট বলে। সেখানে অংশগ্রহণ করি। আমার বোলিং দেখার পর এলাকার বড় ভাইরা বলেন যে, ‘তোর বোলিং ভালো হয়েছে। চাইলে তুই স্টেডিয়ামে গিয়ে ক্রিকেট প্র্যাকটিস করতে পারিস।’ বড় ভাইদের কথা শুনে প্র্যাকটিসে গেলাম। তার পর আমার মনে হলো যে আমি পারব ক্রিকেটে কিছু করতে। সেখান থেকেই ক্রিকেটে আসা আমার।”
ক্রিকেট বলে শুরুর পর সিলেট বিভাগীয় দলে আসতেও খুব সময় লাগেনি। সিলেটে গত কয়েক বছরে পেস বোলিংয়ের দারুণ এক সংস্কৃতি গড়ে উঠেছে। এই অঞ্চল থেকেই শীর্ষ পর্যায়ে উঠে আসছে একের পর এক পেসার। রেজাউর বললেন, এই পারিপার্শ্বিকতাও তাকে প্রেরণা জুগিয়েছে।
“চ্যালেঞ্জ নেওয়া আমি পছন্দ করি। আসলে আমাদের বড় ভাইদের কাছ থেকে অনুপ্রাণিত হয়েছি। আমাদের সিলেটের রাহি ভাই (আবু জায়েদ চৌধুরি), ইবাদত ভাই, খালেদ ভাই, তাদের কাছ থেকে প্রেরণা পেয়েছি। এখান থেকেই বাংলাদেশের ক্রিকেটে পেস বোলার হওয়ার উৎসাহ জেগেছে আমার।”
১০টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচের সঙ্গে রেজাউর লিস্ট ‘এ’ ম্যাচ খেলেছেন মোটে ৩টি, টি-টোয়েন্টি ১৬টি। এখনও যথেষ্ট পরীক্ষিত তিনি নন। তবে আত্মবিশ্বাসের কমতি নেই তার। তুলে ধরলেন নিজের শক্তির জায়গাগুলো।
“টেস্ট খেলা (বড় দৈর্ঘ্যের ম্যাচ) আমি উপভোগ করি। প্রথম শ্রেণিতে ঘরোয়া ক্রিকেটে ভালো করেছি। চার দিনের খেলায় দিনে কয়েকটা স্পেলে বোলিং করতে পারি। আমার নিজের কাছে যেটা মনে হয়, এক জায়গায় ধারাবাহিকভাবে বল করতে পারি।”
“কিছু মুভমেন্ট করাইতে পারি। লম্বা সময় এক রিদমে বল করতে পারি। দিনের শুরুতে যে পেসে বোলিং করি, দিনের শেষে তার চেয়ে একটু বেশি পেসে বল করতে পারি।”
দিনের শুরুর চেয়ে শেষে আরও গতিতে বোলিং করা একটু কঠিন বটে। তবে তার আত্মবিশ্বাসের ঝলকানিই ফুটে উঠছে এতে। সেখানে মিশে আছে উজ্জ্বল ভবিষ্যতের বার্তাও।