৭ উইকেট নিয়ে মিঠুনের চমক

ব্যাট হাতে এবারের জাতীয় লিগ মোটেও ভালো কাটছে না মোহাম্মদ মিঠুনের। আট ইনিংসে নেই কোনো ফিফটি। তবে এবার তিনি চমক দেখালেন বোলিংয়ে। খুলনা বিভাগের হয়ে এক ইনিংসেই নিলেন ৭ উইকেট!

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 Nov 2021, 02:38 PM
Updated : 23 Nov 2021, 02:44 PM

লিগের ষষ্ঠ ও শেষ রাউন্ডে মঙ্গলবার বিকেএসপিতে ঢাকা বিভাগের বিপক্ষে দ্বিতীয় ইনিংসে সাত নম্বর বোলার হিসেবে বোলিংয়ে আসেন মিঠুন। অফ স্পিনে ২০.৫ ওভারের টানা স্পেলে ৭৫ রানে নেন ৭ উইকেট।

মূলত তিনি ব্যাটসম্যান, করেন উইকেটকিপিংও। ঘরোয়া ক্রিকেটে মাঝেমধ্যে হাত ঘোরাতে দেখা যায় তাকে। তবে এর আগে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ১৩ ইনিংসে বোলিং করে তার উইকেট ছিল মোটে ৬টি। এবার এক ইনিংসেই নিলেন এর বেশি।

তার দলের সামনে অবশ্য বড় রান তাড়ার চ্যালেঞ্জ। প্রথম স্তরের ম্যাচে ৩৭৯ রানের লক্ষ্য তাড়ায় খুলনা তৃতীয় দিন শেষ করেছে বিনা উইকেটে ৭ রান তুলে। শেষ দিনে দরকার আরও ৩৭২ রান।

বিকেএসপির তিন নম্বর মাঠে ৮ উইকেটে ১৮০ রান নিয়ে তৃতীয় দিন শুরু করে খুলনার প্রথম ইনিংসে থামে ২১৩ রানে।

আগের দিন ৬ উইকেট নেওয়া শুভাগত হোম এ দিন নেন আরও একটি। ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়ে ৪৮ রানে নেন ৭ উইকেট।

১২২ রানের লিড নিয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে নেমে রনি তালুকদারের আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে ভালো সূচনা পায় ঢাকা। রনি ফিফটি পূর্ণ করেন ৪২ বলে। ২৫ ওভারে দলের স্কোর স্পর্শ করে শতরান।

২৭তম ওভারে বোলিংয়ে আসেন মিঠুন। একটু পর তিনিই ১৩৯ রানের উদ্বোধনী জুটি ভাঙেন আব্দুল মজিদকে বোল্ড করে। ১৩০ বলে ৬ চার ও একটি ছক্কায় ঢাকার ওপেনার করেন ৬১ রান।

এরপর মিঠুন নিজের এক ওভারের মধ্যে ফিরিয়ে দেন মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন ও সেঞ্চুরির পথে থাকা রনিকে। ছক্কার চেষ্টায় দুজনই ধরা পড়েন বাউন্ডারিতে। ৯১ বলে ৬ চার ও ৫ ছক্কায় ৮৭ রান করেন রনি।

পরে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারায় ঢাকা। মিঠুন এলবিডব্লিউ করে দেন শুভাগত, নাদিফ চৌধুরি ও সুমন খানকে। তার বলেই তাইবুর (৩৭) ক্যাচ দেওয়ার পর ৮ উইকেটে ২৫৬ রানে ইনিংস ঘোষণা করে ঢাকা।

রান তাড়ায় দিনের ৯ ওভার কাটিয়ে দেন ইমরুল কায়েস (১*) ও অমিত মজুমদার (২*)।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

ঢাকা ১ম ইনিংস: ৩৩৫

খুলনা ১ম ইনিংস: ৫৭.৪ ওভারে ২১৩ (আগের দিন ১৮০/৮) (মৃত্যুঞ্জয় ২৬, টিপু ১৮*, আল আমিন ৩; সুমন ১২-৩-৫২-৩, সালাউদ্দিন ৫-০-২৭-০, এনামুল ৮-২-৩০-০, শুভাগত ১৮.৪-৫-৪৮-৭, নাজমুল ১৪-১-৪৮-০)

ঢাকা ২য় ইনিংস: ৬৭.৫ ওভারে ২৫৬/৮ ডিক্লে. (মজিদ ৬১, রনি ৮৭, মাহিদুল ০, রকিবুল ১৬, তাইবুর ৩৭, শুভাগত ৩৩, নাদিফ ১১, সুমন ৬, নাজমুল ৩*; আল আমিন ৪-১-১৭-০, সৌম্য ৭-১-২৩-০, মৃত্যুঞ্জয় ২.১-০-১৪-০, টিপু ২৬-৪-৭৭-১, নাহিদুল ১.৫-০-১৩-০, রবি ৬-০-৩৬-০, মিঠুন ২০.৫-২-৭৫-৭)

খুলনা ২য় ইনিংস: (লক্ষ্য ৩৭৯) ৯ ওভারে ৭/০ (ইমরুল ১*, অমিত ২*; শুভাগত ৫-৫-০-০, নাজমুল ৪-২-৩-০)

অমিত-জাকিরের সেঞ্চুরিতে সিলেটের লিড

আগের দিনের সম্ভাবনাকে পূর্ণতা দিয়ে সেঞ্চুরিতে পা রাখলেন অমিত হাসান। তবে অল্পের জন্য পেলেন না ডাবল সেঞ্চুরি। তার সঙ্গে জাকির হাসানের সেঞ্চুরিতে রংপুর বিভাগের বিপক্ষে প্রথম ইনিংসে লিড নিল সিলেট বিভাগ।

প্রথম স্তরের এই ম্যাচে বিকেএসপির চার নম্বর মাঠে ২ উইকেটে ১৯০ রান নিয়ে তৃতীয় দিন শুরু করে সিলেট। দিন শেষ করেছে তারা ৫ উইকেটে ৪৫৫ রানে। লিড ৬২ রানের।

৪২২ বলে ১৯ চারে অমিত খেলেন ১৮৬ রানের দুর্দান্ত ইনিংস। ২৪৮ বলে ১৪ চারে ১২২ রান করেন কিপার-ব্যাটসম্যান জাকির।

আগের দিন ৯০ রানে অপরাজিত থাকা অমিত প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে তৃতীয় সেঞ্চুরিতে পা রাখেন ১৯৭ বলে। জাকির অপরাজিত ছিলেন ২৩ রানে। লাঞ্চের পর তিনি ২১৬ বলে তুলে নেন অষ্টম সেঞ্চুরি।   

জাকিরকে ফিরতি ক্যাচ নিয়ে ২৪৩ রানের বড় জুটি ভাঙেন জাহিদ জাভেদ। ডাবল সেঞ্চুরির আশা জাগিয়ে অমিত কট বিহাইন্ড হন তানবীর হায়দারের বলে।

টিকতে পারেননি অলক কাপালি। দিন শেষে জাকের আলি ৩৭ ও আসাদুল্লাহ গালিব ১৮ রানে অপরাজিত আছেন।

তিন দিনে দুই দলের প্রথম ইনিংস শেষ না হওয়ায় ড্রই হতে পারে এই ম্যাচের সম্ভাব্য ফল। সেক্ষেত্রে শেষ দিনে খুলনাকে হারিয়ে পয়েন্ট টেবিলে রংপুরকে টপকে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার হাতছানি আছে ঢাকার সামনে।

পাঁচ রাউন্ড শেষে ২৮.৮৯ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে রংপুর। ২৫.৪ পয়েন্ট নিয়ে তাদের পরে আছে ঢাকা। গতবারের চ্যাম্পিয়ন খুলনা ১৮.৮২ পয়েন্ট নিয়ে তিনে, ১৭.০৪ পয়েন্ট নিয়ে সিলেট চারে আছে। 

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

রংপুর ১ম ইনিংস:

সিলেট ১ম ইনিংস: ১৪৮.২ ওভারে ৪৫৫/৫ (আগের দিন ১৯০/২) (সায়েম ৪৯, তৌফিক ১৭, অমিত ১৮৬, জাকির ১২২, জাকের ৩৭*, কাপালি ৮, গালিব ১৮*; মুকিদুল ৬-২-২০-০, রবিউল ১৬-০-৫১-১, সোহরাওয়ার্দী ৩৪-৭-৯১-০, আলাউদ্দিন ১৬.১-০-৬৪-০, নাসির ৩৭-৭-৮৬-২, তানবীর ২১-২-৬৩-১, আরিফুল ৮.১-০-৩২-০, নাঈম ৩-১-১৩-০, জাহিদ ৭-১-২০-১)।