জাতীয় লিগের প্রথম স্তরের ম্যাচে সোমবার ৩৩৫ রানে থেমেছে ঢাকার প্রথম ইনিংস। এরপর ব্যাটিংয়ে নেমে খুলনা ৮ উইকেট হারিয়ে ১৮০ রান নিয়ে দ্বিতীয় দিন শেষ করেছে। তারা এখনও পিছিয়ে ১৫৫ রানে।
খুলনাকে অল্পতে আটকে রাখার সম্ভাবনা জাগানোর মূল কারিগর শুভাগত। ৪৬ রান দিয়ে ৬ উইকেট নিয়েছেন তিনি। প্রথম শ্রেণির ক্যারিয়ারে যা তার ইনিংসে অষ্টম পাঁচ উইকেট।
বিকেএসপির ৩ নম্বর মাঠে ষষ্ঠ ও শেষ রাউন্ডের খেলায় অলরাউন্ড পারফরম্যান্স উপহার দিয়েছেন সৌম্য সরকার। বল হাতে ৩৬ রান দিয়ে ৩ উইকেট নেওয়ার পর খুলনার ইনিংসে একমাত্র ফিফটি তার। আগের রাউন্ডে সিলেটের বিপক্ষেও পঞ্চাশ ছোঁয়া ইনিংস ছিল বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যানের।
দিনের শুরুটাও সৌম্যর জন্য ছিল দারুণ। ৬ উইকেটে ২৬৩ রান নিয়ে খেলতে নামা ঢাকা শিবিরে দিনের দশম ওভারে জোড়া আঘাত হানেন তিনি। ডিপ পয়েন্টে ক্যাচ তুলে দেন সুমন খান, আর নাজমুল ইসলাম অপু হন বোল্ড।
ওই ধাক্কা সামলে পেসার এনামুল হককে নিয়ে দলের রান তিনশ পার করেন নাদিফ চৌধুরি। ৪৫ রানের ওই জুটিতে তিনি ফিফটি তুলে নেন ৯১ বলে। মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরি পরপর দুই ওভারে এনামুল ও ৫৩ রান করা নাদিফকে ফিরিয়ে শেষ করে দেন ঢাকার ইনিংস।
জবাবে খুলনার ইনিংসে পরপর দুই ওভারে ছোবল দেন সুমন। এই পেসার এনামুল হককে বোল্ড করার পর কট বিহাইন্ড করে ফেরান অমিত মজুমদারকে।
৩৬ রানে ২ উইকেট হারানো দলের হাল ধরেন ইমরুল কায়েস ও সৌম্য। তাদের জুটি পঞ্চাশ পেরিয়ে এগিয়ে যেতে থাকে। তখনই দৃশ্যপটে আসেন শুভাগত। ২৩ রান করা ইমরুলকে বোল্ড করে ধরেন নিজের প্রথম শিকার, ভাঙেন ৬৪ রানের জুটি।
এরপর শুভাগতর সামনে দাঁড়াতেই পারেনি খুলনার ব্যাটসম্যানরা। একে একে ফিরিয়ে দেন তিনি মোহাম্মদ মিঠুন, নাহিদুল ইসলাম, ইমরানুজ্জামান ও রবিউল ইসলামকে।
সতীর্থদের আসা-যাওয়ার মাঝে ৬০ বলে ফিফটি তুলে নেন সৌম্য। তাকেও ইনিংস বড় করতে দেননি শুভাগত। দিনের শেষ দিকে ৭ চারে ৬৫ রান করা সৌম্য হন এলবিডব্লিউ।
টিপু সুলতান ও মৃত্যুঞ্জয় আছেন উইকেটে। শেষ দুই উইকেটে কতদূর যেতে পারে খুলনা, এটাই দেখার বিষয়।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ঢাকা ১ম ইনিংস: (আগের দিন ২৬৩/৬) ১১৮.১ ওভারে ৩৩৫ (নাদিফ ৫৩, সুমন ১৮, নাজমুল ০, এনামুল ১৩, সালাউদ্দিন ০*; আল আমিন ২৮-১০-৬৭-৩, মৃত্যুঞ্জয় ১৯.১-১-৮৩-২, টিপু ২৮-৩-৮৩-২, সৌম্য ২১-৭-৩৬-৩, নাহিদুল ১৫-৪-৩৭-০, রবিউল ৪-১-১৪-০, মিঠুন ৩-০-১২-০)।
খুলনা ১ম ইনিংস: ৫২.১ ওভারে ১৮০/৮ (এনামুল ১৭, অমিত ১৬, ইমরুল ২৩, সৌম্য ৬৫, মিঠুন ৩, নাহিদুল ৮, ইমরানুজ্জামান ১২, রবিউল ১১, মৃত্যুঞ্জয় ৯*, টিপু ৫*; সুমন ৯.১-৩-৩০-২, সালাউদ্দিন ৫-০-২৭-০, এনামুল ৮-২-৩০-০, শুভাগত ১৭-৫-৪৬-৬, নাজমুল ১৩-১-৩৯-০)
সেঞ্চুরি হাতছানি দিচ্ছে অমিতকে
প্রথম স্তরের আরেক ম্যাচে রংপুর বিভাগের বিপক্ষে ব্যাট হাতে দলকে টানছেন অমিত হাসান। সিলেট বিভাগের তরুণ এই ব্যাটসম্যান দাঁড়িয়ে কাঙ্ক্ষিত সেঞ্চুরির সামনে।
বিকেএসপির ৪ নম্বর মাঠে মাইশুকুর রহমানের দেড়শ ছাড়ানো ইনিংসে প্রথম ইনিংসে ৩৯৩ রান করেছে রংপুর। বিশাল এই রানের জবাবে ভালোই লড়ছে সিলেট। ২ উইকেটে ১৯০ রান নিয়ে দ্বিতীয় দিন শেষ করেছে তারা।
৯০ রান নিয়ে খেলছেন অমিত। তার সঙ্গে উইকেটে আছেন জাকির হাসান।
৭ উইকেটে ৩০৪ নিয়ে দিন শুরু করা রংপুরের প্রথম ইনিংস শেষ হয়ে যায় প্রথম সেশনেই। এদিন ২৪.৩ ওভার খেলতে পারে তারা।
দিনের সপ্তম ওভারেই তারা হারায় আলাউদ্দিন বাবুকে। এরপর ১৩১ রান নিয়ে খেলতে নামা মাইশুকুরকে সঙ্গ দেন রবিউল হক। দুইজনে গড়েন ৪৪ রানের জুটি। এই সময়ই ৩০২ বলে ১৫০ রান স্পর্শ করেন মাইশুকুর।
এরপর তাকে বেশিদূর এগোতে দেননি শাহানুর রহমান। এলবিডব্লিউ করে দেন ১৪ চারে ১৫৭ রান করা মাইশুকুরকে।
দলের রান চারশর কাছে যায় মূলত রবিউলের দারুণ ব্যাটিংয়ে। ৩ চারে ও ২ ছক্কায় ৪৪ রানে অপরাজিত ছিলেন তিনি।
ব্যাটিংয়ের শুরুটা ভালো হয়নি সিলেটের। দ্রুত হারায় তৌফিক খানকে। সেখান থেকে সায়েম আলম ও অমিতের ব্যাটে ঘুরে দাঁড়ায় দলটি।
দারুণ ব্যাটিংয়ে দুইজন বাড়াতে থাকেন দলের রান। এগিয়ে যেতে থাকেন ফিফটির দিকে। ৮১ বলে অমিত ফিফটি তুলে নিলেও এই স্বাদ পাননি সায়েম। নাসির হোসেনের বলে লং অনে ধরা পড়লে শেষ হয় তার ৩ ছক্কা ও ২ চারে ৪৯ রানের লড়াই।
এরপর অমিতের সঙ্গে দলের হাল ধরেন জাকির। রংপুরের বিপক্ষেই চলতি আসরে প্রথম দেখায় প্রথম শ্রেণির ক্যারিয়ারে দ্বিতীয় সেঞ্চুরি করা অমিত দাঁড়িয়ে আরেকটি কাঙ্ক্ষিত তিন অঙ্কের সামনে।
২৩ রান নিয়ে অমিতের সঙ্গী অধিনায়ক জাকির। ৬৭ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে দিন শেষ করেছেন দুইজন। বড় সংগ্রহের জন্য তৃতীয় দিনে তাদের দিকেই তাকিয়ে থাকবে সিলেট।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
রংপুর ১ম ইনিংস: (আগের দিন ৩০৪/৭) ১১৪.৩ ওভারে ৩৯৩ (মাইশুকুর ১৫৭, আলাউদ্দিন ২৬, রবিউল ৪৪*, মুকিদুল ৮; জয়নুল ২০-২-৭৫-৩, আবিদুল ২২-১-৯৮-৩, সায়েম ৬-১-৯-০, এনামুল জুনি ৩৩.৩-৩-৯০-৩, শাহানুর ২৬-৩-৯২-১, কাপালী ৩-০-১১-০, আসাদুল্লাহ ৪-১-৯-০)
সিলেট ১ম ইনিংস: ৬৩ ওভারে ১৯০/২ (সায়েম ৪৯, তৌফিক ১৭, অমিত ৯০*, জাকির ২৩*; মুকিদুল ৬-২-২০-০, রবিউল ৯-০-৩১-১, সোহরাওয়ার্দী ১৭-৪-৫২-০, আলাউদ্দিন ১০-০-৩৭-০, নাসির ১৪-৪-১৮-১, তানভির ৭-০-২১-০)।