ফজলে মাহমুদের সেঞ্চুরি, ‘হ্যাটট্রিক’ হলো না মাহমুদুলের

বারবার থেমে যাচ্ছিলেন ৭০-এর ঘরে গিয়ে। এবার আর ভুল করলেন না ফজলে মাহমুদ রাব্বি। দলের বিপর্যয়ের মুখে তুলে নিলেন দারুণ এক সেঞ্চুরি। জাতীয় ক্রিকেট লিগে টানা তিন ম্যাচে সেঞ্চুরির আশা জাগিয়েও অল্পের জন্য পারলেন না মাহমুদুল হাসান জয়।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 Nov 2021, 03:02 PM
Updated : 21 Nov 2021, 03:35 PM

লিগের ষষ্ঠ রাউন্ডে দ্বিতীয় স্তরে রাজশাহী বিভাগের বিপক্ষে ৭ উইকেটে ৯৩ রানের বিপর্যয় থেকে বরিশাল বিভাগ প্রথম দিন শেষে করেছে ৭ উইকেটে ২২৫ রানে। যেখানে বড় অবদান ফজলে মাহমুদের। তিন নম্বরে ব্যাটিংয়ে নেমে ২১২ বলে ১৩ চার ও একটি ছক্কায় ১২২ রানে অপরাজিত আছেন তিনি।

৯ নম্বরে নেমে ৫০ রানে অপরাজিত আছেন অফ স্পিনার ইসলামুল আহসান। অধিনায়কের সঙ্গে অষ্টম উইকেটে তার অবিচ্ছিন্ন জুটি ১৩২ রানের।   

দ্বিতীয় স্তরের আরেক ম্যাচে ঢাকা মেট্রোর বিপক্ষে ৮৩ রান করে আউট হয়েছেন আগের দুই ম্যাচে সেঞ্চুরি করা তরুণ ব্যাটসম্যান মাহমুদুল।

সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের একাডেমি মাঠে রোববার টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে দ্বিতীয় ওভারেই আবু সায়েমকে হারায় বরিশাল। টিকতে পারেননি আরেক ওপেনার মোহাম্মদ আশরাফুলও (৯)। দুজনই এলবিডব্লিউ হন বাঁহাতি পেসার শফিকুল ইসলামের বলে।

এরপর শুরু হয় রাজশাহীর স্পিনারদের দাপট। সালমান হোসেন ও সোহাগ গাজীকে বোল্ড করে দেন বাঁহাতি স্পিনার সানজামুল ইসলাম। আরেক বাঁহাতি স্পিনার সাকলাইন সজিবের শিকার শামসুল ইসলাম, মইন খান ও মনির হোসেন। এর মধ্যে দুই অঙ্কে যেতে পারেন কেবল মইন (১৩)।

৯৩ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে তখন অল্পতে গুটিয়ে যাওয়ার শঙ্কায় বরিশাল। এরপরই শুরু ফজলে মাহমুদ ও ইসলামুলের লড়াই।

ফজলে মাহমুদ তখন ব্যাট করছিলেন ৪৯ রানে। ৮৮ বলে পঞ্চাশে পা রাখা বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান চা বিরতির পর ১৭৩ বলে পূর্ণ করেন সেঞ্চুরি। ৯৪ থেকে সাকলাইনকে লং অফ দিয়ে ছক্কা হাঁকিয়ে তিন অঙ্ক স্পর্শ করেন তিনি।

প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ফজলে মাহমুদের এটি দশম সেঞ্চুরি। এই ম্যাচের আগে লিগে সবশেষ ছয় ইনিংসের চারটিতে তার রান ছিল যথাক্রমে ৭৩, ৭৬, ৭৬ ও ৭০। অবশেষে যেতে পারলেন তিন অঙ্কে।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

বরিশাল বিভাগ ১ম ইনিংস: ৯০ ওভারে ২২৫/৭ (সায়েম ০, আশরাফুল ৯, ফজলে মাহমুদ ১২২*, সালমান ৮, শামসুল ৭, সোহাগ ৫, মইন ১৩, মনির ০, ইসলামুল ৫০*; ফরহাদ রেজা ৯-৪-১৮-০, শফিকুল ১৫-৩-৫২-২, সানজামুল ৯.৩-১-৩৯-২, আসাদুজ্জামান ১৩-৪-২৭-০, সাকলাইন ৩০-৬-৫৯-৩, মোহাইমিনুল ৭.৩-৩-১২-০, ফরহাদ ৬-১-৯-০)।

শেষের বিপর্যয়ে ২২৩ রানে শেষ চট্টগ্রাম

ঢাকা মেট্রোর বিপক্ষে পিনাক ঘোষ ও মাহমুদুলের ব্যাটে শক্ত ভীত পেয়েও বড় সংগ্রহ গড়তে পারেনি চট্টগ্রাম বিভাগ। মাত্র ১৬ রানে শেষ ৫ উইকেট হারিয়ে ২২৩ রানে অলআউট হয়েছে তারা।

প্রথম দিন শেষে ঢাকা মেট্রোর সংগ্রহ ২ উইকেটে ৫২ রান। এখনও ১৭১ রানে পিছিয়ে আছে দলটি।

সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুটা ভালো করে চট্টগ্রাম। প্রথম ঘণ্টায় ১৫ ওভারে পিনাক ও জসিমউদ্দিন যোগ করেন ৪৮ রান। পানি পানের বিরতির পরই জসিমউদ্দিনকে (৩১) কট বিহাইন্ড করে শুরুর জুটি ভাঙেন আবু হায়দার।

পিনাক ফেরেন ফিফটির কাছে গিয়ে। ৪৭ রানে কট বিহাইন্ড হন তিনি বাঁহাতি স্পিনার শরফুদ্দৌলার বলে। পিনাকের ৮৮ বলের ইনিংসে বাউন্ডারি ৪টি। তার বিদায়ের পর টিকতে পারেননি শাহাদাত হোসেন, ইরফান শুক্কুর ও সৈকত আলি।

সাজ্জাদুল ইসলামকে সঙ্গে নিয়ে দলের স্কোর দুইশ পার করেন মাহমুদুল। ৮৩ বলে ফিফটি করে এই ব্যাটসম্যান এগিয়ে যাচ্ছিলেন সেঞ্চুরির দিকেই। কিন্তু ৮৩ রানে মেহরাব হোসেনের বলে বোল্ড হয়ে যান তিনি। ১১৬ বলের ইনিংসটি গড়া ৯টি চারে।

মাহমুদুলের এবারের জাতীয় লিগ শুরু হয়েছিল জোড়া শূন্য দিয়ে। পরের ম্যাচে মেট্রোর বিপক্ষে করেন ১১২ ও ২৯ রান। এরপর বরিশালের বিপক্ষে একমাত্র ইনিংসে ১২১। এবার আর সেঞ্চুরি হলো না।

মাহমুদুলের ফেরার পর দ্রুতই গুটিয়ে যায় চট্টগ্রামের ইনিংস। সাজ্জাদুল করেন ২৫ রান।

৬২ রানে ৪ উইকেট নিয়ে মেট্রোর সফলতম বোলার শরফুদ্দৌলা। আরেক বাঁহাতি স্পিনার শাহবাজ চৌহান ৩৫ রানে নেন ৩টি।

জবাবে ব্যাটিংয়ে নেমে ১০ রানেই দুই ওপেনার মুনিম শাহরিয়ার ও আজমির আহমেদকে হারায় মেট্রো। দিন শেষে দুই অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান শামসুর রহমান ১৭ ও মার্শাল আইয়ুব ২৪ রানে অপরাজিত আছেন।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

চট্টগ্রাম বিভাগ ১ম ইনিংস: ৭১.১ ওভারে ২২৩ (পিনাক ৪৭, জসিমউদ্দিন ৩১, মাহমুদুল ৮৩, শাহাদাত ১, ইরফান ১২, সৈকত ৮, সাজ্জাদুল ২৮, মুরাদ ১, মেহেদি ২, সামাদ ৪, নোমান ৭*; আবু হায়দার ১১-২-৪৩-১, মেহরাব ১২-৪-৩৩-১, ইফতেখার ১৪-১-৪৫-১, শরফুদ্দৌলা ২২-৫-৬২-৪, শাহবাজ ১২.১-৩-৩৫-৩)

ঢাকা মেট্রো ১ম ইনিংস: ১৪ ওভারে ৫২/২ (মুনিম ০, আজমির ৪, শামসুর ১৭*, মার্শাল ২৪*; মেহেদি ৫-১-১৪-১, সামাদ ৬-১-১৭-১, নোমান ৩-০-২১-০)