ক্রিকেটকে ডি ভিলিয়ার্সের বিদায়

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের পাঠ চুকিয়ে ফেলেছেন তিন বছর পেরিয়ে গেছে। খেলছিলেন কেবল ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটে। এবার সব কিছুর ইতি টেনে দিলেন এবি ডি ভিলিয়ার্স। বিদায় জানালেন সব ধরনের ক্রিকেটকেই।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 Nov 2021, 08:15 AM
Updated : 19 Nov 2021, 12:47 PM

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শুক্রবার অবসরের ঘোষণা দেন দক্ষিণ আফ্রিকার এই বিস্ফোরক ব্যাটসম্যান। আইপিএলে গত অক্টোবরে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালোরের হয়ে কলকাতা নাইট রাইডার্সের বিপক্ষে খেলা ম্যাচটি হয়ে রইল তার ক্যারিয়ারের শেষ।

২০১৮ সালে অনেকটা আচমকাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানান ডি ভিলিয়ার্স। ওয়ানডে বিশ্বকাপের আগের বছরে তার অমন সিদ্ধান্ত চমকে দিয়েছিল অনেককেই। তবে অবসরের কিছুদিন পর থেকেই উঠতে থাকে তার ফেরার গুঞ্জন।

২০১৯ বিশ্বকাপের আগে আগে ডি ভিলিয়ার্স নিজে থেকেই ফেরার আগ্রহের কথা জানান। তবে বিশ্বকাপের ঠিক আগে দলীয় পরিকল্পনা ও সংহতিতে ব্যাঘাত না ঘটানোর কথা ভেবে তার ফেরার প্রস্তাবে রাজি হয়নি বোর্ড।

২০১৯ সালের শেষ দিকে দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিকেট বোর্ডে ক্রিকেট পরিচালক হিসেবে গ্রায়েম স্মিথ ও দলের প্রধান কোচ হিসেবে মার্ক বাউচার দায়িত্ব নেওয়ার পর আবার ডি ভিলিয়ার্সের ফেরার গুঞ্জন শুরু হয়। তখন মূলত ২০২০ সালে হওয়ার কথা থাকা টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপকে ঘিরে চলতে থাকে ৭৮টি আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি খেলা এই ব্যাটসম্যানের ফেরার আলোচনা। তবে কোভিডের প্রকোপে বিশ্বকাপ পিছিয়ে গেলে তার ফেরার আলোচনাও থমকে যায়।

শেষ পর্যন্ত গত মে মাসে ক্রিকেট দক্ষিণ আফ্রিকা জানিয়ে দেয়, সাবেক এই অধিনায়কের অবসরের সিদ্ধান্ত পাকাপাকিভাবেই থেকে যাচ্ছে। ফলে জাতীয় দলে আর ফেরা হয়নি ডি ভিলিয়ার্সের।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় বলার পর ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটে দাপটের সঙ্গেই খেলে যাচ্ছিলেন তিনি। খেলছিলেন বিগ ব্যাশ, পিএসএল, ভাইটালিটি ব্লাস্ট, বিপিএল ও এমএসএলে। আইপিএলের সবশেষ আসরেও তার ব্যাটে ছিল রান। দুই ফিফটিতে ১৪ ইনিংসে করেন ৩১৩।

তবে ৩৭ বছর বয়সে এসে এখন আর আগের মতো তাকে টানছে না ক্রিকেট। সেকারণেই অবসরের সিদ্ধান্ত নেওয়া বলে জানালেন ১১৪ টেস্ট ও ২২৮টি ওয়ানডে খেলা ডি ভিলিয়ার্স।

“এটা ছিল অবিশ্বাস্য এক পথচলা, তবে আমি সব ধরনের ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। বড় ভাইদের সঙ্গে বাড়ির পেছনে খেলা শুরুর পর থেকে আমি ক্রিকেটকে নিখাদভাবে উপভোগ করেছি এবং প্রবল উদ্দীপনার সঙ্গে খেলেছি। এখন ৩৭ বছর বয়সে এসে ওই চাওয়া আর আগের মতো নেই।”

ক্যারিয়ারে ৩৪০ টি-টোয়েন্টি খেলেছেন ডি ভিলিয়ার্স। ১৫০.১৩ স্ট্রাইক রেটে ৪ সেঞ্চুরি ও ৬৯ ফিফটিতে রান তার ৯ হাজার ৪২৪।

আইপিএলেই সবচেয়ে বেশি খেলেছেন ডি ভিলিয়ার্স। ১৮৪ ম্যাচ খেলে ৩ সেঞ্চুরি ও ৪০ ফিফটিতে রান করেছেন ৫ হাজার ১৬২। টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকের তালিকায় আছেন ছয় নম্বরে।

বেঙ্গালোরের ফ্র্যাঞ্চাইজিটির হয়ে সবচেয়ে বেশি রান করেছেন তিনি। ২০১১ সালে বিরাট কোহলির সতীর্থ হিসেবে যোগ দিয়ে ১৫৭ ম্যাচে ১৫৮.৩৩ স্ট্রাইক রেটে রান করেছেন ৪ হাজার ৫২২। সেঞ্চুরি দুটি, ফিফটি ৩৭টি। বেঙ্গালোরের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক তিনি।

লম্বা সময় ধরে আরসিবির সঙ্গে কাটানো মুহূর্তগুলো ডি ভিলিয়ার্সের আজীবন মনে থাকবে।

“আরসিবির সঙ্গে স্মরণীয় একটি পথচলা ছিল। আজীবন লালন করার মতো অনেক স্মৃতি আছে। আমি চিরকালই একজন আরসিবিয়ান।”

প্রথম শ্রেণিতে ১৪১ ম্যাচে ডি ভিলিয়ার্সের রান ১০ হাজার ৬৮৯। নামের পাশে সেঞ্চুরি আছে ২৫টি, ফিফটি ৬০টি। ২৬৩ লিস্ট 'এ' ম্যাচে ২৯ সেঞ্চুরি ও ৬৩ ফিফটিতে রান করেছেন ১১ হাজার ১২৩।