আয়নায় মুখ দেখতে বলার ব্যাখ্যা দিলেন মুশফিক

সমালোচনা, ট্রল, কৌতুক, সেই যে শুরু হয়েছিল, চলছে তা এখনও। বিশ্বকাপে ব্যাটিংয়ের জন্য যতটা, তার চেয়ে বেশি সমালোচিত হয়েছেন মুশফিকুর রহিম সম্ভবত তার একটি বক্তব্যের জন্য। সমালোচনাকারীদের আয়না দেখতে বলার সেই কথাটি এবার আরেকটু বিশদভাবে ব্যাখ্যা করলেন দেশের অভিজ্ঞ ক্রিকেটার। তার দাবি, অনেকেই তার কথার মূল বক্তব্য বুঝতে পারেননি। 

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 Nov 2021, 03:27 PM
Updated : 17 Nov 2021, 03:27 PM

গত ২৪ অক্টোবর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচের পর সংবাদ সম্মেলনে আলোচিত এই মন্তব্যটি করেছিলেন মুশফিক।

প্রথম রাউন্ডে স্কটল্যান্ডের কাছে হারার পর সংবাদমাধ্যমে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান বোর্ড সভাপতি নাজমুল হাসান। কাঠগড়ায় দাঁড় করান তিনি তিন সিনিয়র ক্রিকেটার মুশফিক, সাকিব আল হাসান ও অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহকে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও তখন দল ও ক্রিকেটারদের সমালোচনা হচ্ছিল প্রবল।

এসবের প্রসঙ্গেই সেদিন সংবাদ সম্মেলনে ক্ষোভ ঝেরেছিলেন মুশফিক।

“এটা তো সবসময় হতেই থাকবে (মাঠের বাইরে কথা)। ক্রিকেটার হিসেবে ভালো করলে সবাই তালি দেবে, খারাপ করলে গালি দেবে। এটাই স্বাভাবিক, তাই না? আর এটা আমার প্রথম নয়, গত ১৬ বছর ধরে খেলছি, এটা আমার কাছে নতুন কিছু নয়। আমার কাছে খুবই নরম্যাল লাগে।”

“যারা এরকম কথা বলেন, তাদের নিজেদের মুখটা আয়নায় দেখা উচিত। তারা বাংলাদেশের হয়ে খেলেন না, খেলি আমরা ক্রিকেটাররাই। শুধু আমি নই, টেস্ট স্ট্যাটাস বা তার আগে থেকেও যারা খেলেছেন, সবাই ইনপুট দেওয়ার চেষ্টা করে। ভালো করার চেষ্টা করে। কখনও হয়, কোনোদিন হয় না। আমরা মনে করি, আমরা দেশের প্রতিনিধিত্ব করি, এই গর্বটা নিয়ে মাঠে যাই এবং ভালো করার চেষ্টা করি।”

মুশফিকের এই বক্তব্য পরে হয়ে দাঁড়ায় আরও সমালোচনা ও ট্রলের উৎস। সেটি নিয়ে অবশেষে বুধবার আবার মুখ খোলেন তিনি। দীর্ঘ এক সাক্ষাৎকারে অভিজ্ঞ এই ক্রিকেটার কথা বলেন পাকিস্তান সিরিজের টি-টোয়েন্টি দলে তার না থাকা, বিশ্বকাপে নিজের ও দলের ব্যর্থতাসহ অনেক কিছু নিয়ে। সেখানেই উঠে আসে ‘আয়না দেখতে বলা’ সেই মন্তব্যের প্রসঙ্গ।

মুশফিকের দাবি, তার কথার সুর ছিল ক্রিকেটের সীমানা ছাড়িয়ে আরও বাইরে।

“আমি ইঙ্গিত দিতে চেয়েছি, শুধু আমি নই বা যারা বলেছেন, তারাই নয়, জাতি হিসেবে যদি আমরা সবাই নিজেদের একটু যদি আয়নার সামনে দেখতে পারি, সেটা মানুষ হিসেবেই উচিত। আজকে আমি খারাপ খেলছি দেখে আমাকে বলবেন, কালকে ভালো খেললে তালি দেবেন, এটা এসবের অংশ নয়। সেদিক থেকে বলেছি।”

“এখন কেউ যদি এটা ব্যক্তিগতভাবে নিয়ে থাকেন বা অন্যভাবে বলে থাকেন, তাহলে আমি মনে করি… আমি যেহেতু ওভাবে বলিনি, সেক্ষেত্রে কে কী মনে করল, এটায় আমার কিছু করার নেই।”

মুশফিকের মতে, বিশ্বকাপে দলের ব্যর্থতার অংশ শুধু ক্রিকেটাররা নয়, সংশ্লিষ্ট সবাই।

“আমরা খারাপ করায় মিডিয়া বা দেশের মানুষ, সবারই খারাপ লেগেছে। তবে আপনারাও কিন্তু একটা অংশ। সবারই ব্যর্থতার অংশ এটি। এই উপলব্ধি থাকা উচিত। আমাদের যতটা খারাপ লেগেছে, অন্যদের হয়তো অতটা থাকবে না। তবে এটা সামগ্রিক একটা ব্যর্থতা।”

“আমার কাছে মনে হয়, ব্যর্থতার জায়গাটায় যদি আমরা সবাই একসঙ্গে কাজ করতে পারি, পরস্পরের পাশে থাকি, তাহলে সময়টা দ্রুত পার হবে।”