রাজশাহীর প্রতিশোধ, জয়ের হাসি বরিশালের

জাতীয় লিগের চলতি মৌসুমে প্রথম চার রাউন্ডে রাজশাহী বিভাগের একমাত্র হার চট্টগ্রাম বিভাগের বিপক্ষে। আসরে নিজেদের প্রথম জয়ও তারা তুলে নিল চট্টগ্রামকে হারিয়েই। আগের দিন গড়া মঞ্চে সহজেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে প্রতিশোধটা ভালোই নিল ফরহাদ রেজা-সানজামুল ইসলামরা।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 Nov 2021, 12:32 PM
Updated : 17 Nov 2021, 12:32 PM

সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বুধবার দ্বিতীয় স্তরের ম্যাচে রাজশাহীর জয় ১৬৬ রানে। মৌসুমে নিজেদের প্রথম ম্যাচে চট্টগ্রামের বিপক্ষে ৪ উইকেটে হেরেছিল তারা। পরের তিন রাউন্ড ড্রয়ের পর এবার তাদের হাতে ধরা দিল জয়।

পাঁচ রাউন্ডে এটা চট্টগ্রামের দ্বিতীয় হার। তাদের নামের পাশে জয়ও আছে দুটি।

রাজশাহীর জয় অনেকটা নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল তৃতীয় দিনই। ৪১৪ রানের লক্ষ্য তাড়ায় চট্টগ্রাম ২২৬ রান তুলতে হারিয়ে ফেলেছিল ৭ উইকেট। চতুর্থ ও শেষ দিন কতক্ষণ টিকতে পারে তারা, দেখার ছিল এটাই।

৩ উইকেট হাতে নিয়ে ১৮৮ রানে পিছিয়ে থাকা চট্টগ্রামকে এদিন বেশিক্ষণ লড়তে দেয়নি রাজশাহী। মাত্র পাঁচ ওভারের মধ্যেই তারা শেষ করে দেয় প্রতিপক্ষের ইনিংস।

তিনটি উইকেটই নেন শফিকুল ইসলাম। তিন ব্যাটসম্যানই হন বোল্ড। দিনের প্রথম ওভারেই এই পেসারের শিকার মেহেদি হাসান রানা। শফিকুল তৃতীয় ওভারে ফেরান হাসান মুরাদ ও শাহিন আলমকে।

এক প্রান্ত আগলে রাখা ইরফান শুক্কুর অপরাজিত থাকেন ৩৯ রান করে।

প্রথম ইনিংসে ৬ উইকেটের পর দ্বিতীয় ইনিংসে ৪টি নিয়ে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ষষ্ঠবার ম্যাচে ১০ উইকেট পূর্ণ করলেন সানজামুল ইসলাম। ম্যাচ সেরার পুরস্কারও উঠেছে এই বাঁহাতি স্পিনারের হাতেই।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

রাজশাহী ১ম ইনিংস: ১৯৪

চট্টগ্রাম ১ম ইনিংস: ১১৯

রাজশাহী ২য় ইনিংস: ৩৩৮/৮ ডিক্লে.

চট্টগ্রাম ২য় ইনিংস: (লক্ষ্য ৪১৪) ৭৩ ওভারে ২৪৭ (আগের দিন ২২৬/৭) (ইরফান ৩৯*, মেহেদি রানা ৪, মুরাদ ৪, শাহিন ০; শফিকুল ১০-২-২৬-৩, সানজামুল ২৮-৪-৮৯-৪, সাকলাইন ২৩-৩-৬৫-৩, মোহাইমিনুল ৭-১-৩১-০, ফরহাদ রেজা ৫-০-৩২-০)।

ফল: রাজশাহী ১৬৬ রানে জয়ী।

ম্যান অব দা ম্যাচ: সানজামুল ইসলাম।

বরিশালের বড় জয়

দ্বিতীয় স্তরের আরেক ম্যাচে দারুণ জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছে বরিশাল বিভাগ। সিলেট ক্রিকেট স্টেডিয়ামের একাডেমি মাঠে বুধবার ঢাকা মেট্রোর বিপক্ষে তাদের জয় ৭ উইকেটে।

বরিশালের এটা মৌসুমে দ্বিতীয় জয়। আর মেট্রোর প্রথম হার।

প্রথম ইনিংসে একশর আগে গুটিয়ে যাওয়া মেট্রো ঘুরে দাঁড়িয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে করতে পেরেছিল ৩২৫ রান। কিন্তু ৩৪৮ রানে প্রথম ইনিংস ঘোষণা করা বরিশালকে তারা দিতে পারেনি বড় লক্ষ্য। ৬৫ রান সহজেই তাড়া করে ফেলে বরিশাল।

১৫২ রান করা সালমান হোসেন।

৭ উইকেটে ৩০৩ রান নিয়ে চতুর্থ ও শেষ দিন শুরু করা মেট্রোর ইনিংস স্থায়ী হয়েছিল কেবল ১১ ওভার। দলের খাতায় যোগ করতে পেরেছিল তারা আর ২২ রান।

মেট্রোর শেষ তিন উইকেটই নেন রুয়েল মিয়া। ২৮ রান করা আবু হায়দার রনিকে দ্রুত ফিরিয়ে দেন বাঁহাতি এই পেসার। পরে এক ওভারে ধরেন জোড়া শিকার। একেএস স্বাধীনকে কট বিহাইন্ড করার পর এলবিডব্লিউ করে দেন শাহবাজ চৌহানকে।

ছোট্ট লক্ষ্য তাড়ায় পরপর দুই ওভারে উইকেট হারায় বরিশাল। মোহাম্মদ আশরাফুলকে ফেরান বাঁহাতি স্পিনার শাহবাজ। আর ফজলে মাহমুদকে এলবিডব্লিউ করে দেন শরিফুল্লাহ।

জোড়া ধাক্কা সামলে দলকে জয়ের দিকে এগিয়ে নিতে থাকেন সায়েম চৌধুরি ও সালমান হোসেন। লক্ষ্য থেকে যখন ৫ রান দূরে মেট্রো তখন স্টাম্পড হয়ে যান সালমান।

সায়েমের ব্যাটে জয়ের সীমানায় পা রাখে বরিশাল। এই ওপেনার অপরাজিত থাকেন ৫ চারে ৩৫ রান করে।

প্রথম ইনিংসে ১৫২ রানের দারুণ ইনিংস খেলা সালমান জিতেন ম্যাচ সেরার পুরস্কার। 

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

ঢাকা মেট্রো ১ম ইনিংস: ৮৭

বরিশাল বিভাগ ১ম ইনিংস: ৩৪৮/৯ ডিক্লে.

ঢাকা মেট্রো ২য় ইনিংস: (আগের দিন ৩০৩/৭) ১০৮.৪ ওভারে ৩২৫ (শরিফুল্লাহ ৫২*, আবু হায়দার ২৮, স্বাধীন ৩, শাহবাজ ০; রুয়েল ২৭.৪-৭-১১০-৪, ইসলামুল ১৫-১-৩৩-১, মনির ৩৪-৫-৭৩-২, নুরুজ্জামান ৬-০-২২-০, সোহাগ ১৮-৫-৪২-২, মইন ৪-১-১৭-১, ফজলে মাহমুদ ৪-১-৮-০)।

বরিশাল বিভাগ ২য় ইনিংস: (লক্ষ্য ৬৫) ২৪.৪ ওভারে ৬৫/৩ (সায়েম ৩৫*, আশরাফুল ১০, ফজলে ০, সালমান ২০, নুরুজ্জমানান ০*; আসিফ ৩-০-১১-০, শাহবাজ ১১.৪-২-৩৬-১, শরিফুল্লাহ ৮-০-১৮-১, রাফসান ২-২-০-১)।

ফল: রবিশাল বিভাগ ৭ উইকেটে জয়ী।

ম্যান অব দা ম্যাচ: সালমান হোসেন।