টি-টোয়েন্টি দলে সাইফ-আকবর, নেই মুশফিক-সাকিব

বিশ্বকাপে হতাশাজনক পারফরম্যান্সের পর বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি দলে আনা হলো বেশ কিছু পরিবর্তন। পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজের দলে নেই মুশফিকুর রহিম, সাকিব আল হাসান, সৌম্য সরকার, লিটন দাস, রুবেল হোসেনের মতো ক্রিকেটাররা। প্রথমবার জাতীয় দলে সুযোগ পেলেন কিপার-ব্যাটসম্যান আকবর আলি। ৫ টেস্ট খেলা ওপেনার সাইফ হাসান প্রথমবার জায়গা পেলেন টি-টোয়েন্টি দলে।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 Nov 2021, 10:43 AM
Updated : 16 Nov 2021, 01:34 PM

নানা সময়ে বিভিন্ন সংস্করণে দলে ঠাঁই পাওয়া ব্যাটসম্যান ইয়াসির আলি চৌধুরি, পেসার শহিদুল ইসলামও এবার আছেন এই টি-টোয়েন্টি স্কোয়াডে। দলে ফিরেছেন ব্যাটসম্যান নাজমুল হোসেন শান্ত ও লেগ স্পিনার আমিনুল ইসলাম বিপ্লব।

মুশফিকের দলের বাইরে যাওয়াকে প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন বলছেন ‘বিশ্রাম।’ সাকিব বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে গিয়েছিলেন চোট নিয়ে। পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে তাকে পাওয়া যাবে কিনা, তা বোঝা যাবে কয়েকদিনের মধ্যে।

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে নিজেকে সরিয়ে নেওয়া ওপেনার তামিম ইকবাল আঙুলের চোটে আগেই ছিটকে গেছেন এই সিরিজ থেকে। চোট নিয়ে বিশ্বকাপ থেকে ফেরা অলরাউন্ডার মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিনের না থাকাও নিশ্চিত ছিল আগে থেকেই।

বাজে ফর্মের কারণে তুমুল সমালোচনার মধ্যে থাকা সৌম্য ও লিটনকে বাদ দেওয়া হয়েছে। অভিজ্ঞ পেসার রুবেল হোসেন বাদ পড়েছেন ম্যাচ না খেলেই। রুবেল অবশ্য বিশ্বকাপের মূল স্কোয়াডে ছিলেন না শুরুতে। সাইফ উদ্দিন চোট পাওয়ার পর রিজার্ভ থেকে তাকে যুক্ত করা হয় দলে।

সব মিলিয়ে বিশ্বকাপে শেষ পর্যন্ত থাকা স্কোয়াড থেকে এই সিরিজের দলে নেই ৫ জন, বিশ্বকাপ দলের বাইরে থেকে এসেছেন ৬ জন।

এই সিরিজের জন্য ভাবনায় রেখে ‘টিম ডিরেক্টর’ খালেদ মাহমুদের তত্ত্বাবধানে মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে অনুশীলন করছিলেন বেশ কজন ক্রিকেটার। তাদের মধ্যে পারভেজ হোসেন ইমন ও তৌহিদ হৃদয় দলে সুযোগ পেতে পারেন বলে গুঞ্জন থাকলেও শেষ পর্যন্ত রাখা হয়নি দুজনের কাউকেও।

অনুশীলন করে আসা ওই ক্রিকেটারদের মধ্য থেকে ইয়াসির আলি চৌধুরি এসেছেন দলে। ঘরোয়া ক্রিকেটে তিনি নিয়মিত পারফরমার। ইমার্জিং দল, ‘এ’ দলের হয়েও নানা সময়ে পারফর্ম করেছেন এবং গত আড়াই বছরে টেস্ট-ওয়ানডে স্কোয়াডে জায়গা পেয়েছেন বেশ কবার। তবে এখনও পর্যন্ত আন্তর্জাতিক অভিষেক হয়নি ২৫ বছর বয়সী ব্যাটসম্যানের। টি-টোয়েন্টি দলে তিনি সুযোগ পেলেন প্রথমবার।

গতবছর অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে বাংলাদেশের শিরোপা জয়ী অধিনায়ক আকবর আলিকে দ্বিতীয় কিপার হিসেবে বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে বলে জানান প্রধান নির্বাচক। গত জুনে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ টি-টোয়েন্টিতে অবশ্য ব্যাট হাতে খুব একটা ভালো করতে পারেননি আকবর। তবে টি-টোয়েন্টি সংস্করণে ২১ ইনিংস খেলে তার স্ট্রাইক রেট বাংলাদেশের বাস্তবতায় খারাপ নয়, ১২৬.৬৯।

আকবর আলির ডাক পাওয়া চমক, আরও বড় চমক সাইফ হাসানের টি-টোয়েন্টি দলে আসা।

আকবরের চেয়ে অবশ্য অনেক অনেক বড় চমক সাইফ হাসানের সুযোগ পাওয়া। বয়সভিত্তিক ক্রিকেট থেকেই তাকে বড় দৈর্ঘ্যের উপযোগী ব্যাটসম্যান বলে মনে করা হচ্ছে। বাংলাদেশের হয়ে ৫টি টেস্ট খেলে ফেলেছেন। সেখানে তার টেকনিক ও পায়ের কাজে দুর্বলতা ফুটে উঠেছে বারবার। সেখানে উন্নতি প্রমাণের আগে তাকে তুলে আনা হলো পুরো উল্টো ঘরানার এক সংস্করণে।

সাইফকে কখনোই টি-টোয়েন্টির জন্য কার্যকর মনে করা হয়নি। ঘরোয়া ক্রিকেটেও এই সংস্করণে খুব ভালো নয় তার পারফরম্যান্স।

সৌম্য-লিটনদের ব্যর্থতার পর শান্তর ফেরা অনেকটা অনুমিতই ছিল। লেগ স্পিনার আমিনুলের ফেরাও প্রত্যাশিত।

পেসার শহিদুল গত কিছুদিন ধরেই নিয়মিত জাতীয় দলের প্রাথমিক স্কোয়াডে জায়গা পাচ্ছেন, দলের আশেপাশে আছেন। তবে টি-টোয়েন্টিতে ডাক পেয়ে যাওয়াটা একটু বিস্ময়করই। ঘরোয়া টি-টোয়েন্টিতে তার রেকর্ড অবশ্য খারাপ নয়। ৩৭ ম্যাচে উইকেট নিয়েছেন ৫৪টি। ব্যাটের হাতও বেশ ভালো তার।

বিশ্বকাপে বাজে পারফরম্যান্সের পরও টিকে গেছেন আফিফ হোসেন, নুরুল হাসান সোহান ও শামীম হোসেন।

বিশ্বকাপে দলের বাজে পারফরম্যান্সের পর অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহর জায়গাও ছিল নড়বড়ে। তবে শেষ পর্যন্ত তার ওপরই আপাতত আস্থা রেখেছে বোর্ড ও নির্বাচকরা।

তিন ম্যাচের এই সিরিজের ম্যাচগুলি হবে আগামী শুক্র, শনি ও সোমবার। মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে খেলা শুরু দুপুর ২টা থেকে।

বাংলাদেশ টি-টোয়েন্টি দল: মাহমুদউল্লাহ (অধিনায়ক), সাইফ হাসান, মোহাম্মদ নাঈম শেখ, নাজমুল হোসেন শান্ত, আফিফ হোসেন, নুরুল হাসান সোহান, শেখ মেহেদি হাসান, আমিনুল ইসলাম বিপ্লব, শামীম হোসেন, মুস্তাফিজুর রহমান, ইয়াসির আলি চৌধুরি, শরিফুল ইসলাম, নাসুম আহমেদ, তাসকিন আহমেদ, শহিদুল ইসলাম, আকবর আলি।