সালমানের সেঞ্চুরি, সানজামুলের ৬ উইকেট

আগের দিনের ফিফটির ইনিংসটি বেশিদূর টেনে নিতে পারলেন না ফজলে মাহমুদ। তবে দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরি উপহার দিলেন সালমান হোসেন। তার ক্যারিয়ার সেরা ব্যাটিংয়ে ঢাকা মেট্রোর বিপক্ষে প্রথম ইনিংসে বিশাল লিড পেল বরিশাল বিভাগ।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 Nov 2021, 03:20 PM
Updated : 15 Nov 2021, 03:23 PM

জাতীয় ক্রিকেট লিগের দ্বিতীয় স্তরের ম্যাচে শুরুর দিন মেট্রোকে ৮৭ রানে গুটিয়ে দেওয়া বরিশাল দ্বিতীয় দিন ৯ উইকেটে ৩৪৮ রানে ইনিংস ঘোষণা করে। লিড পায় ২৬১ রানের। দিন শেষে দ্বিতীয় ইনিংসে মেট্রোর সংগ্রহ ১ উইকেটে ৩৪। এখনও ২২৭ রানে পিছিয়ে আছে তারা।

৩৪৪ বলে অপরাজিত ১৫২ রানের ইনিংস খেলেন সালমান। ১৫ চারের পাশে ছক্কা একটি। অধিনায়ক ফজলে মাহমুদের ব্যাট থেকে আসে ৭৩ রান।

দ্বিতীয় স্তরের আরেক ম্যাচে রাজশাহীর হয়ে চট্টগ্রামের বিপক্ষে ইনিংসে ৬ উইকেট নিয়েছেন বাঁহাতি স্পিনার সানজামুল ইসলাম।

সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের একাডেমি মাঠে ২ উইকেটে ১৩৬ রান নিয়ে সোমবার দিন শুরু করে বরিশাল। প্রথম দিনের ৬৫ রানের সঙ্গে আর ৮ রান যোগ করেই আবু হায়দারের বলে উইকেটের পেছনে ধরা পড়েন ফজলে মাহমুদ।

আগের দিন ফিফটি থেকে ৩ রান দূরে ছিলেন সালমান। পঞ্চাশে পা রাখেন তিনি ১৪১ বলে। মাঝে নুরুজ্জামান, সোহাগ গাজী, শামসুল ইসলামরা কেউ ইনিংস বড় করতে পারেননি। দলকে একাই টানেন সালমান।

২৬ বছর বয়সী এই ব্যাটসম্যান প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে নিজের দ্বিতীয় সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন ২৫৪ বলে। আগের সর্বোচ্চ ইনিংস ১৪৬ ছাড়িয়ে দেড়শতে পৌঁছান ৩৪১ বলে। এরপরই ইনিংস ঘোষণা করে বরিশাল।

মেট্রোর পেসার একেএস স্বাধীন সর্বোচ্চ ৩ উইকেট নেন ৮৫ রান দিয়ে।

পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংসে নেমে সর্তক শুরু করেন আনিসুল ইসলাম ইমন ও জাহিদুজ্জামান। দিনের শেষ দিকে আনিসুলকে (১৮) এলবিডব্লিউ করেন প্রথম ইনিংসে ৪ উইকেট নেওয়া ইসলামুল আহসান।

দিন শেষে জাহিদ ১৫ ও আসিফ হাসান শূন্য রানে অপরাজিত আছেন। মেট্রোর সামনে মূল চ্যালেঞ্জ এখন ইনিংস হার এড়ানো।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

ঢাকা মেট্রো ১ম ইনিংস: ৮৭

বরিশাল বিভাগ ১ম ইনিংস: ১২৪ ওভারে ৩৪৮/৯ ডিক্লে. (আগের দিন ১৩৬/২) (ফজলে মাহমুদ ৭৩, সালমান ১৫২*, নুরুজ্জামান ১২, সোহাগ ৩২, শামসুল ৬, মইন ১৫, ইসলামুল ৮, মনির ১, রুয়েল ১৪*; আবু হায়দার ২৩-৩-১৬০-১, স্বাধীন ২২-০-৮৫-৩, শরিফুল্লাহ ২৯-৮-৬২-২, শাহবাজ ১৯-৬-৪৮-২, আসিফ ৩০-৬-৬৭-১, রায়ান ১-০-৩-০)

ঢাকা মেট্রো ২য় ইনিংস: ১১ ওভারে ৩৪/১ (আনিসুল ১৮, জাহিদুজ্জামান ১৫*, আসিফ ০*; রুয়েল ৩-০-২২-০, ইসলামুল ৫-১-৮-১, মনির ৩-০-৩-০)

১১৯ রানেই শেষ চট্টগ্রাম

দ্বিতীয় দিনে সানজামুলের স্পিনের সামনে দাঁড়াতেই পারেনি চট্টগ্রাম বিভাগ। ৩০ রানে শেষ ৬ উইকেট হারিয়ে ১১৯ রানে গুটিয়ে গেছে তাদের প্রথম ইনিংস। দলটিকে বিশাল লক্ষ্য দেওয়ার পথে ছুটছে রাজশাহী বিভাগ। 

দিন শেষে দ্বিতীয় ইনিংসে রাজশাহীর সংগ্রহ ৫ উইকেটে ২৩২ রান। প্রথম ইনিংসে ৭৫ রানে এগিয়ে থাকা দলটির লিড এখন ৩০৭ রানের।

১১৮ বলে ৮৫ রানে খেলছেন প্রীতম কুমার। আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে ফিফটি করে ৫৫ বলে ৫১ রানে অপরাজিত ফরহাদ রেজা।

সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ৪ উইকেটে ৫৬ রান নিয়ে দ্বিতীয় দিন শুরু করা চট্টগ্রাম তাসামুল হক ও ইরফান শুক্কুরের ব্যাটে এগিয়ে যাচ্ছিল। কিন্তু দলীয় ৮৯ রানে এ জুটি ভাঙতেই ধস নামে তাদের ইনিংসে।

তাসামুলকে (২৪) এলবিডব্লিউ করে প্রতিরোধ ভাঙেন সাকলাইন সজিব। এরপর সানজামুলের শিকার একে একে ইরফান (১৪), নাঈম হাসান, মেহেদি হাসান রানা ও সাজ্জাদুল হক। হাসান মুরাদকে ফিরিয়ে ইনিংস গুটিয়ে দেন সাকলাইন।

৪৩ রানে ৬ উইকেট নেন সানজামুল। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে এই নিয়ে ২৩ বার ইনিংসে পাঁচ উইকেট পেলেন তিনি। আরেক বাঁহাতি স্পিনার সাকলাইন ১৫ রানে নেন ৩টি।

দ্বিতীয় ইনিংসে শুরুতেই মিজানুর রহমানকে হারায় রাজশাহী। আরেক ওপেনার তানজিদ হাসান ৩৯ বলে ৬ চার ও একটি ছক্কায় করেন ৪৩ রান।

টিকতে পারেননি মোহাইমিনুল খান। ইনিংস বড় করতে পারেননি জুনায়েদ সিদ্দিক (৯৬ বলে ৩০) ও ফরহাদ হোসেন (৩৫ বলে ১৮)।

১৩৩ রানে ৫ উইকেট হারানোর পর রাজশাহীর লিড বাড়ে প্রীতম ও ফরহাদ রেজার ব্যাটে। ষষ্ঠ উইকেটে অবিচ্ছিন্ন ৯৯ রানের জুটিতে দিন শেষ করেন দুজন। এই পথে প্রীতম ফিফটি করেন ৯১ বলে। ফরহাদের লাগে কেবল ৫৪ বল।

৮৪ রানে ৪ উইকেট নিয়েছেন তরুণ বাঁহাতি স্পিনার হাসান মুরাদ।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

রাজশাহী ১ম ইনিংস: ১৯৪

চট্টগ্রাম ১ম ইনিংস: ৫১.২ ওভারে ১১৯ (আগের দিন ৫৬/৪) (তাসামুল ২৪, ইরফান ১৪, সাজ্জাদুল ১৮, নাঈম ১, মেহেদি রানা ৪, মুরাদ ১, শাহিন ০*; শফিকুল ৫-০-১৭-০, ফরহাদ রেজা ৬-১-১২-১, মোহাইমিনুল ২-০-৬-০, সানজামুল ১৯-৩-৪৩-৬, মুক্তার ৯.১-৪-১৬-০, সজিব ১০.১-৫-১৫-৩)

রাজশাহী ২য় ইনিংস: ৫৯ ওভারে ২৩২/৫ (মিজানুর ৩, তানজিদ ৪৩, জুনায়েদ ৩০, মোহাইমিনুল ০, প্রিতম ৮৫*, ফরহাদ হোসেন ১৮, ফরহাদ রেজা ৫১*; নাঈম ২৩-৪-৭৪-১, মেহেদি রানা ৫-০-৩৫-০, শাহিন ৪-০-২১-০, মুরাদ ২৪-৩-৮৪-৪, তাসামুল ৩-০-১৭০)।