নাহিদার ৫ উইকেটে বাংলাদেশের তিনে তিন

নতুন বলে টানা ১০ ওভারের স্পেল। ৪টি মেডেন দিয়ে স্রেফ ২১ রানে নাহিদা আক্তার নিলেন ৫ উইকেট। তার স্পিনে আবারও একশর নিচে গুটিয়ে গেল জিম্বাবুয়ে নারী দল। আরেকটি বড় জয়ে সিরিজ শেষ করল বাংলাদেশের মেয়েরা।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 Nov 2021, 12:31 PM
Updated : 15 Nov 2021, 01:24 PM

জিম্বাবুয়েতে মেয়েদের ওয়ানডে বিশ্বকাপ বাছাই শুরুর আগে বাংলাদেশের প্রস্তুতি দারুণ হলো। স্বাগতিকদের বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ জিতে নিল ৩-০ ব্যবধানে। প্রথম দুই ম্যাচে ৮ ও ৯ উইকেটে জয়ের পর শেষটি তারা জিতল ৭ উইকেটে।

বুলাওয়ায়োতে সোমবার জিম্বাবুয়ের ৭২ রান বাংলাদেশ পেরিয়ে যায় ১৯০ বল বাকি রেখে। এই সংস্করণে এই প্রথম তিন ম্যাচের সিরিজে সবগুলোই জিতল বাংলাদেশের মেয়েরা।

প্রথম দুই ম্যাচেও দারুণ বোলিংয়ে ৩টি করে উইকেট নিয়েছিলেন নাহিদা। এবার ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়ে নিলেন ৫ উইকেট। নারী ক্রিকেটে বাংলাদেশের দ্বিতীয় বোলার হিসেবে ওয়ানডেতে ৫ বা এর বেশি উইকেট পেলেন তিনি। ২০১৮ সালে কক্সবাজারে পাকিস্তানের বিপক্ষে ২০ রানে ৬ উইকেট নিয়েছিলেন অফ স্পিনার খাদিজা তুল কুবরা।

ম্যাচ ও সিরিজ সেরা, দুটি পুরস্কারই জিতেছেন নাহিদা। সিরিজে ৩ ম্যাচে ওভারপ্রতি মাত্র ২.১২ রান করে দিয়ে তার শিকার ১১ উইকেট।

এই সিরিজের আগে ১৫ ওয়ানডেতে তার উইকেট ছিল সব মিলিয়ে মাত্র ১৩টি। ৩ উইকেটও ছিল না কোনো ম্যাচে।

গত বছরের মার্চে অস্ট্রেলিয়ায় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর এই সিরিজ দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরল বাংলাদেশের মেয়েরা। আর ওয়ানডে খেলল ২০১৯ সালের নভেম্বরে পাকিস্তান সফরের পর প্রথম। ফেরাটা দারুণ পারফরম্যান্সে রাঙাল তারা।

জিম্বাবুয়ের মেয়েদের দলটি অবশ্য বেশ নবীন। টি-টোয়েন্টি প্রথম খেলে তারা ২০১৯ সালে, ওয়ানডে খেলতে শুরু করে গত মাস থেকে।

সিরিজের প্রথম ম্যাচে তারা গুটিয়ে গিয়েছিল স্রেফ ৪৮ রানে। প্রথমবার কোনো দলকে ওয়ানডেতে পঞ্চাশের আগে থামিয়েছিল বাংলাদেশ।

দ্বিতীয় ম্যাচে টেনেটুনে ১২১ করতে পারলেও শেষটিতে আবার  অল্পতে গুটিয়ে গেল স্বাগতিক মেয়েরা।

শেষ ম্যাচে তাদের ইনিংসে দুই অঙ্ক ছুঁতে পারেন কেবল একজন। ৬১ বলে ৩৯ রান করেন ওপেনার মায়ার্স। রানের খাতাই খুলতে পারেননি ছয় জন, এর মধ্যে একজন ছিলেন অপরাজিত।

টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে তাদের শুরুটা যদিও হয় আশা জাগানিয়া। উদ্বোধনী জুটিতে ওঠে ২৪ রান। এরপই ধস নামে। ১৭ রানের মধ্যে হারায় ৫ উইকেট। শুরুটা সপ্তম ওভারে মুপাচিকওয়ার রান আউটে।

বাঁহাতি পেসার ফারিহা ইসলাম তৃষ্ণার নতুন বলের সঙ্গী নাহিদা নিজের প্রথম ৪ ওভারে কোনো উইকেট পাননি। পরের দুই ওভারেই নেন ২টি করে উইকেট। এর পরের ওভারে আরেকটি। তখন তার বোলিং ফিগার, ৭-৪-১৪-৫!

ইনিংস শুরু করে জিম্বাবুয়েকে একাই টানেন মায়ার্স। নবম ব্যাটার হিসেবে তাকে বোল্ড করে ফেরান তৃষ্ণা। পরের বলে আরেকটি উইকেট নিয়ে তিনিই গুটিয়ে দেন ইনিংস।

তৃষ্ণার পাশাপাশি রুমানা আহমেদেরও প্রাপ্তি ২টি। দলের মূল স্ট্রাইক বোলার জাহানারা আলম ও সালমা খাতুনকে বিশ্রাম দেওয়া হয় এ দিন। আঙুলে চোট পাওয়ায় প্রথম দুই ম্যাচে খেলতে না পারা নতুন অধিনায়ক নিগার সুলতানা ফেরেন শেষটিতে।

ফিরে ব্যাটিংয়ে অবশ্য ভালো করতে পারেননি নিগার। ২৭ বলে ১২ রান করে আউট হন তিনি। নুজহাত তাসনিয়া ও সোবহানা মোস্তারিও সুবিধা করতে পারেননি।

৪৮ বলে ৫ চারে অপরাজিত ৩৯ রানের ইনিংসে দলের জয় নিয়ে ফেরেন মুর্শিদা খাতুন। এই ওপেনার আগের ম্যাচে করেছিলেন অপরাজিত ফিফটি।

ওয়ানডেতে এই নিয়ে টানা চার ম্যাচ জিতল বাংলাদেশের মেয়েরা। পাকিস্তান সফরে শেষ ম্যাচে জিতেছিল তারা। সব মিলিয়ে ৪১ ওয়ানডেতে তাদের জয় হলো ১২টি।

আগামী রোববার পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে ২০২২ বিশ্বকাপ বাছাই শুরু করবে বাংলাদেশ। ‘বি’ গ্রুপে তাদের অন্য দুই প্রতিপক্ষ-জিম্বাবুয়ে, থাইল্যান্ড ও যুক্তরাষ্ট্র।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

জিম্বাবুয়ে: ২৭.২ ওভারে ৭২ (মুপাচিকওয়া ৯, মায়ার্স; তৃষ্ণা ৩.২-০-১৭-২, নাহিদা ১০-৪-২১-৫, খাদিজা ৬-০-১৪-০, লতা ৪-০-১২-০, রুমানা ৪-০-৭-২)

বাংলাদেশ: ১৪.২ ওভারে ৭৪/৩ (মুর্শিদা ৩৯*, নুজহাত ১০, নিগার ১২, মোস্তারি ১, ফারজানা ০*; এমবোফানা ৩-০-১২-১)

ফল: বাংলাদেশ ৭ উইকেটে জয়ী