মাহমুদুলের সেঞ্চুরি, মুমিনুলের ঝড়ো ৮১

ব্যাট হাতে আবারও জ্বলে উঠলেন মাহমুদুল হাসান। টানা দুই ম্যাচে উপহার দিলেন সেঞ্চুরি। ঝড়ো ব্যাটিংয়ে একই সম্ভাবনা জাগান মুমিনুল হকও। কিন্তু শেষ পর্যন্ত পারলেন না বাংলাদেশের টেস্ট অধিনায়ক। তবে তাদের দারুণ পারফরম্যান্সে বরিশাল বিভাগের বিপক্ষে বড় লিডের পথে এগোচ্ছে চট্টগ্রাম বিভাগ।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 Nov 2021, 12:46 PM
Updated : 8 Nov 2021, 01:07 PM

জাতীয় লিগের দ্বিতীয় স্তরের ম্যাচে সোমবার ৪ উইকেটে ৩৬৪ রান করেছে চট্টগ্রাম। প্রথম ইনিংসে ২৩৬ রান করা বরিশাল থেকে দ্বিতীয় দিন শেষে তারা এগিয়ে ১২৮ রানে।

আগের রাউন্ডে ঢাকা মেট্রোর বিপক্ষে ১১২ রান করা মাহমুদুল এবার খেলেছেন ১২১ রানের ইনিংস। পাকিস্তান সিরিজের আগে ধারাবাহিকভাবে রান পাওয়া মুমিনুল করেছেন ৮৫ বলে ৮১। গত রাউন্ডে করেছিলেন দুই ইনিংসে ১০৩ ও ৩৮। তার আগের ম্যাচে ৫০।

৬৩ রান করে অপরাজিত আছেন শাহাদাত হোসেন। তার সঙ্গে ২৩ রানে খেলছেন ইরফান শুক্কুর।

বিকেএসপির ৩ নম্বর মাঠে দিনের শুরুতেই ধাক্কা খায় চট্টগ্রাম। বিনা উইকেটে ৩৪ রান নিয়ে খেলতে নেমে তৃতীয় ওভারেই হারায় তারা পিনাক ঘোষকে। এই ওপেনারকে এলবিডব্লিউ করে দেন রুবেল মিয়া।

এরপর দলকে এগিয়ে নেন মাহমুদুল ও আরেক ওপেনার জসিমউদ্দিন। দারুণ ব্যাটিংয়ে তারা বাড়াতে থাকেন রান। দুজনই যখন ফিফটির দুয়ারে তখন ভাঙে ৮৫ রানের জুটি।

প্রথম শ্রেণির ক্যারিয়ারের প্রথম ফিফটি থেকে এক রান দূরে থাকতে জসিমউদ্দিনকে এলবিডব্লিউ করে দেন মনির হোসেন। এই সংস্করণে তৃতীয় ম্যাচ খেলতে নামা এই ব্যাটসম্যানের ৪৯ রানের ইনিংসটি গড়া ২ ছক্কা ও ৫ চারে।

৬৬ বলে ফিফটি করেন মাহমুদুল। ক্রিজে গিয়েই দ্রুত রান তুলতে থাকেন মমিনুল। মোহাম্মদ আশরাফুলকে টানা ৩টি চার মারার পর বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান সোহাগ গাজীকেও হাঁকান টানা তিন বাউন্ডারি। মারমুখী ব্যাটিংয়ে তিনি ফিফটি পূর্ণ করেন ৫৬ বলে।

মাহমুদুলের সঙ্গে জমে ওঠা মমিনুলের জুটির রান ছাড়িয়ে যায় শতরান। দুই ব্যাটসম্যানই সেঞ্চুরিতে চোখ রেখে এগিয়ে যেতে থাকেন।

কিন্তু তার আগেই মইন খানের অফ স্পিনে মুমিনুল মিডউইকেটে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন। ১১ চারে ৮১ রান করা মুমিনুলের বিদায়ে ভাঙে ১১২ রানের জুটি।

মুমিনুল না পারলেও ১৭৬ বলে সেঞ্চুরি ঠিকই তুলে নেন মাহমুদুল। আগের রাউন্ডে তিনি পেয়েছিলেন প্রথম শ্রেণিতে প্রথম তিন অঙ্কের স্বাদ।

৯ চার ও এক ছক্কায় মাহমুদুলের ১২১ রানের ইনিংসটি শেষ হয় লং-অফে ক্যাচ দিয়ে। এরপর ৯৪ বলে ফিফটি ছুঁয়ে দলকে বড় লিডের পথে এগিয়ে নিচ্ছেন শাহাদাত হোসেন।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

বরিশাল বিভাগ ১ম ইনিংস: ২৩৬

চট্টগ্রাম বিভাগ ১ম ইনিংস: (আগের দিন ৩৪/০) ৯৯ ওভারে ৩৬৪/৪ (পিনাক ২০, জসিমউদ্দিন ৪৯, মাহমুদুল ১২১, মুমিনুল ৮১, শাহাদাত ৬৩*, ইরফান ২৩*; রুয়েল ১৯-১-৮০-১, সোহাগ ১৯-১-৭৪-০, নুরুজ্জামান ৭-১-১৪-০, মনির ২৮-৩-১০১-২, আশরাফুল ১০-১-৩৯-০, মইন ১৫-০-৪৩-১, রাফসান ১-০-৭-০)।

চার ফিফটিতে বড় লিডের পথে মেট্রো

দ্বিতীয় স্তরের আরেক ম্যাচে ব্যাটসম্যানদের নৈপুণ্যে বড় লিডের পথে এগোচ্ছে ঢাকা মেট্রো। দলটির হয়ে পঞ্চাশ ছাড়ানো ইনিংস খেলেছেন চার ব্যাটসম্যান।

বিকেএসপির ৪ নম্বর মাঠে দ্বিতীয় দিন শেষে মেট্রোর সংগ্রহ ৬ উইকেটে ৩৬৩ রান। রাজশাহী বিভাগকে ২৩২ রানে গুটিয়ে দেওয়া দলটি এগিয়ে ১২১ রানে।

মেট্রোর হয়ে ৮৯ রানের ইনিংস খেলেন শামসুর রহমান। চট্টগ্রামের বিপক্ষে আগের রাউন্ডে সেঞ্চুরি করা সাদমান ইসলাম এবার করেন ৬৫ রান। ঘরের মাঠে পাকিস্তান সিরিজকে সামনে রেখে নিজেকে ভালোই ঝালিয়ে নিচ্ছেন বাংলাদেশের টেস্ট ওপেনার।

৬৫ রান নিয়ে অপরাজিত আছেন আমিনুল ইসলাম। ৫৬ রানে খেলছেন আবু হায়দার।

২ উইকেটে ৫৩ রান নিয়ে দিন শুরু করা মেট্রোকে বেশিক্ষণ টানতে পারেননি আগের দিনের অপরাজিত ব্যাটসম্যান জাহিদুজ্জামান। ৫ চার ও এক ছক্কায় ৪৫ রান করা এই ওপেনারকে বোল্ড করে দেন ফরহাদ রেজা।

সাদমান ও শামসুরের ব্যাটে বাড়তে থাকে মেট্রোর রান। ৮৫ বলে ফিফটি ছুঁয়ে সেঞ্চুরির পথে এগোতে থাকেন শামসুর। ৮৭ বলে পঞ্চাশে পা রাখেন সাদমান।

তাদের জমে ওঠা ১২৯ রানের জুটি ভাঙে সাদমানের বিদায়ে। ৫ চার ও এক ছক্কায় ৬২ রান করে বাঁহাতি ব্যাটসম্যান ফেরেন লং-অফে ক্যাচ দিয়ে।

এরপর বেশিক্ষণ টিকেননি শামসুরও। ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান সানজামুল ইসলামের বলে মিড-অফে ক্যাচ দেন ৮৯ রানে, ইনিংসে তার ৭টি চার। শরিফুল্লাহকে দ্রুত ফিরিয়ে দেন সানজামুল।

এরপর দলের হাল ধরেন আমিনুল ও আবু হায়দার। দিনের শেষ ২৯ ওভার কাটিয়ে দেন তারা। দুইজনেই ফিফটি তুলে নিয়ে এখনও আছেন অপরাজিত। তাদের অবিচ্ছিন্ন ১০৪ রানের জুটিতে মেট্রোর রান পার হয় সাড়ে তিনশ।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

রাজশাহী বিভাগ ১ম ইনিংস: ২৩২

ঢাকা মেট্রো ১ম ইনিংস: (আগের দিন ৫৩/২) ১০৩ ওভারে ৩৫৩/৬ (জাহিদুজ্জামান ৪৫, শামসুর ৮৯, সাদমান ৬২, আমিনুল ৬৫*, শরিফুদ্দিন ৯, আবু হায়দার ৫৬*; ফরহাদ রেজা ১৫-১-৬১-২, নাহিদ ১৬-১-৫৩-১, মুক্তার ১৭-২-৫৭-০, সানজামুল ৩২-৫-১০৬-২, সাকলাইন ১৯-৩-৫৭-০, ফরহাদ ৪-১-১৫-১)।