জাতীয় ক্রিকেট লিগের চতুর্থ রাউন্ডে দ্বিতীয় স্তরে রোববার প্রথম দিন ২৩২ রানে অলআউট হয় রাজশাহী। দিন শেষে মেট্রোর সংগ্রহ ২ উইকেটে ৫৩ রান।
বিকেএসপির চার নম্বর মাঠে এ দিনের ১২ উইকেটের সবগুলোই নেন পেসাররা। মেট্রোর হয়ে ৪৮ রানে ৭ উইকেট নেন শহিদুল।
প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে এই নিয়ে তৃতীয়বার ইনিংসে পাঁচ উইকেট পেলেন ২৬ বছর বয়সী এই ক্রিকেটার। ৬৪ রানে ৬ উইকেট ছিল তার আগের সেরা বোলিং।
টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে প্রথম ওভারেই তানজিদ হাসানকে হারায় রাজশাহী। তাকে এলবিডব্লিউ করে দেন আবু হায়দার রনি।
দ্বিতীয় উইকেটে ৭৪ রানের জুটিতে প্রতিরোধ গড়েন মিজানুর রহমান ও জুনায়েদ সিদ্দিক। এরপর দ্রুত তিন উইকেট হারায় তারা।
জুনায়েদকে ফিরিয়ে শিকার ধরেন শহিদুল। পুল করার চেষ্টায় ক্যাচ দিয়ে ফেরেন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান (৩৩ বলে ২৬)। ৪৯ বলে ৬ চার ও একটি ছক্কায় ৪৮ রান করে মিজানুর এলবিডব্লিউ হন অভিষিক্ত একেএস স্বাধীনের বলে।
এরপর টিকতে পারেননি অভিষেক মিত্র। ঘণ্টা খানেক উইকেটে কাটিয়ে ইনিংস বড় করতে পারেননি অধিনায়ক ফরহাদ হোসেন (২০)। দুজনই এলবিডব্লিউ হন শহিদুলের বলে। ১০৭ রানে রাজশাহী হারায় ৫ উইকেট।
সেখান থেকে তারা দুইশ পার করতে পারে মূলত লোয়ার মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যানদের সৌজন্যে। ছয় নেমে ৬৪ বলে ৩০ রান করেন প্রীতম কুমার।
সাত নম্বরে নেমে ইনিংস সর্বোচ্চ ৬০ রান করেন অলরাউন্ডার ফরহাদ রেজা। তার ১০৪ বলের ইনিংস গড়া ৬ চার ও ২ ছক্কায়। আটে নেমে ৫৬ বলে ৩৯ রান করেন সানজামুল ইসলাম।
শেষ চারটি উইকেটই নেন শহিদুল, যার তিনটিই বোল্ড। ৫৮ রানে ২ উইকেট নেন স্বাধীন। ৪৪ রানে ১টি আবু হায়দার।
ব্যাটিংয়ে নেমে মেট্রোর শুরুটাও ভালো হয়নি। সপ্তম ওভারে ফরহাদ রেজার বলে ফিরতি ক্যাচ দেন মুনিম শাহরিয়ার। দিনের শেষ দিকে নাহিদ রানার বলে কট বিহাইন্ড হন মিনহাজুল আবেদীন। জাহিদুজ্জামান ২৮ ও শামসুর রহমান ৩ রান নিয়ে দ্বিতীয় দিন শুরু করবেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
রাজশাহী বিভাগ ১ম ইনিংস: ৬৫.৫ ওভারে ২৩২ (মিজানুর ৪৮, তানজিদ ০, জুনায়েদ ২৬, অভিষেক ২, ফরহাদ ২০, প্রীতম ৩০, ফরহাদ রেজা ৬০, সানজামুল ৩৯, মুক্তার ০, সাকলাইন ০, নাহিদ ০*; আবু হায়দার ১৪-৩-৪৪-১, শহিদুল ১৫.৫-৩-৪৮-৭, স্বাধীন ১২-০-৫৮-২, রকিবুল ১৩-৩-৩৬-০, শরিফুল্লাহ ৭-১-২১-০, আমিনুল ৪-০-২২-০)
ঢাকা মেট্রো ১ম ইনিংস: ১২.২ ওভারে ৫৩/২ (মুনিম ১৪, জাহিদুজ্জামান ২৮*, মিনহাজুল ৫, শামসুর ৩*, ফরহাদ রেজা ৫-০-২৮-১, নাহিদ ৬-১-১৮-১, মুক্তার ১.২-৪-০)
ফজলে মাহমুদের ফিফটি
দ্বিতীয় স্তরের আরেক ম্যাচে বোলারদের মিলিত পারফরম্যান্সে বরিশাল বিভাগকে আড়াইশ নিচে আটকে দিয়েছে চট্টগ্রাম বিভাগ।
বিকেএসপির তিন নম্বর মাঠে প্রথম দিনে বরিশাল অলআউট হয়েছে ২৩৬ রানে। দিন শেষে চট্টগ্রামের রান বিনা উইকেটে ৩৪। এখনও ২০২ রানে পিছিয়ে আছে তারা।
বরিশালের হয়ে লড়াই করতে পারেন কেবল ফজলে মাহমুদ। ১০৫ বলে ১২ চার ও ২ ছক্কায় ইনিংস সর্বোচ্চ ৭৬ রান করেন বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান।
টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুটা ভালো করেন রাফসান আল মাহমুদ ও মোহাম্মদ আশরাফুল। কিন্তু ইনিংস টেনে নিতে পারেননি কেউই।
আশরাফুলকে কট বিহাইন্ড করে ৪৯ রানের শুরুর জুটি ভাঙেন পেসার মেহেদি হাসান রানা। ৩৬ বলে ৩ চার ও একটি ছক্কায় বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ক করেন ২৫ রান। রাফসান ৫১ বলে করেন ১৯।
এরপর সালমান হোসেন, মোসাদ্দেক হোসেন ও সোহাগ গাজী টিকতে পারেননি। ১০৮ রানে বরিশাল হারায় ৫ উইকেট।
ষষ্ঠ উইকেটে শামসুল ইসলামের সঙ্গে ৫৭ রানের জুটি গড়েন ফজলে মাহমুদ। আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে ৬১ বলে ফিফটি পূর্ণ করেন তিনি। তার সেঞ্চুরির আশা ভেঙে দেন বাঁহাতি স্পিনার হাসান মুরাদ।
শামসুলের ২৬, মইন খানের ৩১ ও নুরুজ্জামানের ২৬ রানের সৌজন্যে ২৩৬ পর্যন্ত যেতে পারে বরিশাল।
মুরাদ ও পেসার নোমান চৌধুরি নেন ৩টি করে উইকেট। অফ স্পিনার নাঈম হাসান পান একটি।
দিনের ৯ ওভারে চট্টগ্রামের শুরুর জুটি ভাঙতে পারেননি বরিশালের বোলাররা। পিনাক ঘোষ ১৯ ও জসিমউদ্দিন ১৫ রানে অপরাজিত আছেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বরিশাল বিভাগ ১ম ইনিংস: ৭৪.৪ ওভারে ২৩৬ (রাফসান ১৯, আশরাফুল ২৫, ফজলে মাহমুদ ৭৬, সালমান ১, মোসাদ্দেক ৩, সোহাগ ১০, শামসুল ২৬, মইন ৩১, নুরুজ্জামান ২৬*, মনির ০, রুয়েল ০; মেহেদি রানা ১০-০-৫৯-১, মেহেদি ১১-৩-৪৫-২, নোমান ১৪.৪-৫-২৯-৩, নাঈম ২২-৬-৬৩-১, মুরাদ ১৫-৬-৩২-৩)
চট্টগ্রাম বিভাগ ১ম ইনিংস: ৯ ওভারে ৩৪/০ (পিনাক ১৯*, জশিমউদ্দিন ১৫*; রুয়েল ৩-০-১১-০, সোহাগ ৪-১-১৬-০, নুরুজ্জামান ১-০-১-০, মনির ১-০-৬-০)