ব্যাটসম্যানদের দাপটের ম্যাচের ফলে অবশ্য খুব একটা প্রভাব ফেলতে পারেননি তিনি। কক্সবাজারের একাডেমি মাঠে হওয়া দ্বিতীয় স্তরে বরিশাল ও রাজশাহীর ম্যাচটির ফল অনুমতিভাবেই ড্র হয়েছে।
তৃতীয় দিন পর্যন্ত দুই দলের শেষ হয় কেবল প্রথম ইনিংস। চতুর্থ ও শেষ দিনে বরিশালকে দ্বিতীয় ইনিংসে ২৯৫ রানে গুটিয়ে দেয় রাজশাহী। ২৫৮ রানের লক্ষ্যে রাজশাহী ২ ওভারে ২ রান তুলতেই ড্র মেনে নেয় দুই দল।
শেষ দিনে ৯৫ রান দিয়ে তাইজুল নেন ৬ উইকেট। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে যা তার ২৪তম পাঁচ উইকেট। আর প্রথম ইনিংসে ৪ উইকেট নিয়ে ম্যাচে ষষ্ঠবারের মতো ১০ উইকেট পেলেন তিনি। চট্টগ্রাম ও ঢাকা মেট্রোর বিপক্ষে ইনিংসে নিয়েছিলেন ৪টি করে উইকেট।
কক্সবাজারে রান উৎসবের এই ম্যাচে সেঞ্চুরি করেছেন দুজন; সোহাগ গাজী ও ফরহাদ হোসেন। এছাড়া পঞ্চাশ ছোঁয়া ইনিংস এসেছে ১০টি। প্রথম ইনিংসে ১০৮ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলে রাজশাহীকে লিড এনে দেওয়ার কারিগর ফরহাদ জিতেছেন ম্যাচ সেরার পুরস্কার।
২ উইকেটে ৮২ রান নিয়ে বুধবার দিন শুরু করা বরিশাল দ্রুত হারায় সালমান হোসেনকে। ৫২ রান করে তিনি তাইজুলের বলে ক্যাচ দেন জুনায়েদ সিদ্দিককে।
মোসাদ্দেক হোসেন দ্রুত রান তোলায় মনোযোগ দেন। তাইজুলকে টানা দুটি ছক্কায় ওড়ান তিনি। অন্য প্রান্তে ফজলে মাহমুদ পঞ্চাশ ছুঁয়ে এগিয়ে যেতে থাকেন। ৮৪ বলে ৫ চার ও ২ ছক্কায় ৫০ রান করা মোসাদ্দেককে ফিরিয়ে তাইজুলই ভাঙেন ৮৪ রানের জুটি।
এবার আর সোহাগ গাজীকে ঝড় তুলতে দেননি বাঁহাতি এই স্পিনার। কয়েক ওভার পরই তার শিকার ফজলে মাহমুদ। ৭ চারে ৭৬ রান করে তিনি ধরা পড়েন তৌহিদ হৃদয়ের হাতে। শামসুল ইসলামকে এলবিডব্লিউ করে পাঁচ উইকেট পূর্ণ করেন তাইজুল।
রুয়েল মিয়াকে এলবিডব্লিউ করে নাজমুল হোসেন শান্ত যখন বরিশালের ইনিংসের ইতি টানেন, ততক্ষণে দিন প্রায় শেষ। তবুও ব্যাটিংয়ে নেমে ২ ওভার খেলেন তাইজুল ও মিজানুর রহামান।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বরিশাল ১ম ইনিংস: ৪০৪
রাজশাহী ১ম ইনিংস: ৪৪১
বরিশাল ২য় ইনিংস: (আগের দিন ৮২/২) ১০০.৫ ওভারে ২৯৫ (ফজলে মাহমুদ ৭৬, সালমান ৫২, মোসাদ্দেক ৫০, সোহাগ ৫, শামসুল ৫, মইন ৫০, মনির ০, কামরুল ২১*, রুয়েল ০; আসাদুজ্জামান ৯-০-৩১-০, নাহিদ ১১-০-৬০-২, তাইজুল ৪২-১১-৯৫-৬, সানজামুল ২৯-৭-৭৬-১, হৃদয় ৭-২-১৪-০, শান্ত ১.৫-০-৩-১, ফরহাদ ১-১-০-০)
রাজশাহী ২য় ইনিংস: ২ ওভার ২/০ (তাইজুল ১, মিজানুর ০; মোসাদ্দেক ১-০-১-০, কামরুল ১-১-০-০)
ফল: ম্যাচ ড্র
ম্যান অব দা ম্যাচ: ফরহাদ হোসেন।
চট্টগ্রাম-ঢাকা মেট্রো ম্যাচ ড্র
তৃতীয় দিন শেষেও দুই দলের প্রথম ইনিংস শেষ না হওয়ায় চট্টগ্রাম বিভাগ ও ঢাকা মেট্রোর ম্যাচের ফলও অনুমিত ছিল। শেষ দিকে চরম কোনো নাটকীয়তা না আসায় হয়েছেও তাই।
বিকেএসপির ৩ নম্বর মাঠে চতুর্থ ও শেষ দিনে ৪৬০ রানে থামে মেট্রোর প্রথম ইনিংস। ১৫ রানে পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংসে খেলতে নেমে চট্টগ্রাম ৫ উইকেটে ২২৮ রানে দিন শেষ করে।
এই ম্যাচেও রাজত্ব ব্যাটসম্যানদের। সেঞ্চুরি পেয়েছেন মাহমুদুল হাসান, মুমিনুল হক ও সাদমান ইসলাম। সঙ্গে পাঁচটি পঞ্চাশ ছাড়ানো ইনিংস।
সবাইকে ছাপিয়ে ম্যাচ সেরার পুরস্কার উঠেছে সাদমানের হাতে। ঢাকা মেট্রোকে ১৫ রানের লিড এনে দেওয়ার পেছনে বড় ভূমিকা ছিল তার। বাংলাদেশের টেস্ট ওপেনার খেলেছেন ১৩২ রানের ইনিংস।
৮ উইকেটে ৪০৭ রান নিয়ে বুধবার দিন শুরু করে বেশিক্ষণ টেকেনি মেট্রোর প্রথম ইনিংস। ১০ ওভারেই তারা হারিয়ে ফেলে বাকি দুই উইকেট। তবে এই সময় রান আসে দ্রুত।
আগের দিনের অপরাজিত ব্যাটসম্যান আমিনুল ইসলামকে ৬৪ রানে ফিরিয়ে দেন মেহেদি হাসান রানা। ৩ ছক্কা ও ২ চারে ৩৮ বলে ৩৩ রানের ইনিংস খেলেন আবু হায়দার।
দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নেমে চট্টগ্রামকে ভালো শুরু এনে দেন পারভেজ হোসেন ও পিনাক ঘোষ। তাদের ৪৪ রানের উদ্বোধনী জুটি ভাঙে শহিদুল ইসলামের বলে পারভেজ কট বিহাইন্ড হলে।
প্রথম ইনিংসে সেঞ্চুরি করা মাহমুদুল এবার ফিরে যান ২৯ করেই। তাকে এলবিডব্লিউ করেন শরিফুল্লাহ। ফিফটি করে সেঞ্চুরির দিকে এগিয়ে যাওয়া পিনাককে ৮৩ রানে কট বিহাইন্ড করে ফেরান এই অফ স্পিনার।
মমিনুলও এবার হন ব্যর্থ। ৩৮ রান করে বাংলাদেশ টেস্ট অধিনায়ক ক্যাচ দেন শরিফুল্লাহকে। পরের ওভারেই রকিবুল হাসানের বলে ইয়াসির আলি চৌধুরি শূন্য রানে হয়ে যান বোল্ড।
৭৩ বলে ৫০ রান করে অপরাজিত থাকেন ইরফান শুক্কুর।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
চট্টগ্রাম ১ম ইনিংস: ৪৪৫/৯ ডি.
ঢাকা মেট্রো ১ম ইনিংস: (আগের দিন ৪০৭/৮) ১২৭.৪ ওভারে ৪৬০ (আমিনুল ৬৪, আবু হায়দার ৩৩, শহিদুল ৬*; মেহেদি রানা ৩১-৫-১১১-৩, ইরফান ২১-১-৮৯-১, মেহেদি ১৩-৩-৪২-০, মুরাদ ৩০.৪-৫-১০৬-৪, নাঈম ৩২-৫-১০৩-২)
চট্টগ্রাম ২য় ইনিংস: ৬০ ওভারে ২২৮/৫ (পারভেজ ২০, পিনাক ৮৩, মাহমুদুল ২৯, ইরফান ৫০*, মমিনুল ৩৮, ইয়াসির ০, নাঈম ২*; আবু হায়দার ৫-৩-১১-০, শরিফুল্লাহ ৩১-৩-৯৯-৩, শহিদুল ৫-০-২৩-১, রকিবুল ১৭-১-৭৬-১, শামসুর ৫-০-১৫-০)
ফল: ম্যাচ ড্র
ম্যান অব দা ম্যাচ: সাদমান ইসলাম।