আশরাফুল ও শরিফুল্লাহর হ্যাটট্রিক

ব্যাট হাতে যেতে পারলেন না দুই অঙ্কে। তবে বোলিংয়ে আলো ছড়ালেন মোহাম্মদ আশরাফুল। তার হ্যাটট্রিক ও মনির হোসেনের দুর্দান্ত বোলিংয়ে চট্টগ্রাম বিভাগের বিপক্ষে দেড়শর কম পুঁজি নিয়েও লিড পেয়েছে বরিশাল বিভাগ।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 Oct 2021, 01:01 PM
Updated : 24 Oct 2021, 02:00 PM

জাতীয় লিগের আরেক ম্যাচে রাজশাহী বিভাগকে আড়াইশ পার হতেই থামিয়ে দেওয়ার পথে হ্যাটট্রিকসহ ৫ উইকেট নিয়েছেন ঢাকা মেট্রোর অফ স্পিনার শরিফুল্লাহ।

চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় স্তরের ম্যাচে রোববার বরিশালকে ১৪৬ রানে গুঁড়িয়ে দেয় স্বাগতিকরা। হালকা ঘাসের ছোঁয়া থাকা উইকেটে দারুণ বোলিংয়ে ৫ উইকেট নেন হাসান মুরাদ, নাঈম হাসানের প্রাপ্তি ৪টি।

তাদের দুর্দান্ত বোলিং ছাড়িয়ে যান আশরাফুল ও মনির। চট্টগ্রামকে স্রেফ ৮৭ রানে গুটিয়ে দেওয়ার পথে ৫টি করে উইকেট নেন দুইজন। তাদের সৌজন্যে দেড়শর কম পুঁজি নিয়েও ৫৯ রানে এগিয়ে বরিশাল।

২০ উইকেট পড়ার দিনে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে দ্বিতীয় বলেই উইকেট হারায় বরিশাল। মইনুল ইসলাম শর্ট থার্ডম্যানে ধরা পড়েন মেহেদি হাসান রানার বলে। চতুর্থ ওভারে আশরাফুলকে এলবিডব্লিউ করে দেন নাঈম।

নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারানো দল ৩২ রানেই হারায় ৫টি। এরপর দলের হাল ধরেন রাফসান আল মাহমুদ ও মইন খান। শতরানের জুটি গড়েন দুজন। ৪৫ রান করা মইনকে ফিরিয়ে প্রতিরোধ ভাঙ্গেন মুরাদ।

ফিফটির পর টিকেননি রাফসানও। বাঁহাতি স্পিনার মুরাদের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে ফিরেন ৬ চারে ৬০ রান করে। শেষ পাঁচ উইকেট হারায় তারা ১৪ রান তুলতে।

জবাব দিতে নামা চট্টগ্রামকে চেপে ধরেন আশরাফুল। দলের অষ্টম ও নিজের চতুর্থ ওভারে পরপর তিন বলে ফিরিয়ে দেন সাদিকুর রহমান, মাহমুদুল হাসান ও ইয়াসির আলি চৌধুরিকে।

খানিক পর পারভেজ হোসেনকেও ফেরান এই অফ স্পিনার। আর শেষ দিকে রানাকে আউট করে প্রথম শ্রেণির ক্যারিয়ারের সপ্তমবার পাঁচ উইকেট পূর্ণ করেন তিনি।

মাঝে ছোবল দেন মনির। বাঁহাতি স্পিনে তুলে নেন ক্যারিয়ারের দ্বাদশ পাঁচ উইকেট।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

বরিশাল ১ম ইনিংস: ৫৮.৩ ওভারে ১৪৬ (মইনুল ০, আশরাফুল ৪, ফজলে রাব্বি ১২, সালমান ৪, রাফসান ৬০, শামসুল ১, মইন ৪৫, সোহাগ ০, মনির ৭, কামরুল ০, রুয়েল ০*; রানা ১১-০-৩৯-১, নাঈম ২২-৬-৪৫-৪, মুরাদ ১৮.৩-১১-২৬-৫, নোমান ৭-১-২৫-০)।

চট্টগ্রাম ১ম ইনিংস: ২৯.৩ ওভারে ৮৭ (সাদিকুর ১১, পারভেজ ১৭, মাহমুদুল ০, ইয়াসির ০, শাহাদাত ১৪, তাসামুল ৯, ইরফান ২০, নাঈম ৫, রানা ৪, মুরাদ ০, নোমান ৬*; কামরুল ৫-১-১৩-০, আশরাফুল ১৩.৩-২-৫৩-৫, মনির ৯-৫-১৫-৫, মইনুল ২-০-৫-০)।

কক্সবাজারে হ্যাটট্রিকসহ ৫ উইকেট শরিফুল্লাহর

শুরুর ধাক্কা সামাল দিয়ে দলকে বড় সংগ্রহের ভিত গড়ে দিলেন তানজিদ হাসান ও নাজমুল হোসেন শান্ত। কিন্তু বাকি ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায় রাজশাহী বিভাগ গুটিয়ে গেল আড়াইশ পার করতেই। বল হাতে হ্যাটট্রিক উপহার দিলেন ঢাকা মেট্রোর শরিফুল্লাহ।

জাতীয় লিগের দ্বিতীয় স্তরের ম্যাচে রোববার রাজশাহীকে ২৫২ রানে থামিয়ে দিয়ে ব্যাটিং করছে মেট্রো। কোনো উইকেট না হারিয়ে ৩ রান নিয়ে প্রথম দিন শেষ করেছে তারা।

রাজশাহীকে শেষদিকে দ্রুত থামিয়ে দেওয়ার মূল কারিগর শরিফুল্লাহ। শেষ দিকের ৪ উইকেটসহ এই অফ স্পিনার ৭০ রান দিয়ে নেন ৫টি। প্রথম শ্রেণির ক্যারিয়ারে যা তার তৃতীয় পাঁচ উইকেট।

কক্সবাজার একাডেমি মাঠে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমেই ধাক্কা খায় রাজশাহী। দ্বিতীয় ওভারে জহুরুল ইসলামকে এলবিডব্লিউ করে দেন আবু হায়দার রনি।

দারুণ ব্যাটিংয়ে সেই ধাক্কা সামাল দেন তানজিদ ও শান্ত। দুইজনেই ফিফটি তুলে নেন।

১১৪ রানের এই জুটি ভাঙে তানজিদের বিদায়ে। ৩ ছক্কা ও ৮ চারে ৭৭ করা এই ব্যাটসম্যানকে বোল্ড করেন আল আমিন জুনিয়র। ফিফটির পর বেশি দূর যেতে পারেননি শান্তও। ৩ ছক্কা ও ৪ চারে ৬৭ করা টেস্ট দলের এই ব্যাটসম্যানকে এলবিডব্লিউ করে দেন রকিবুল হাসান।

এরপর ধস নামে রাজশাহীর ব্যাটিংয়ে। ৭৫ রান তুলতে শেষ ৭ উইকেট হারায় তারা। দলটির শেষ ৮ ব্যাটসম্যানের মধ্যে কেবল দুই অংকে যেতে পারেন জুনায়েদ সিদ্দিক ও প্রিতম কুনের।

পরপর তিন বলে প্রিতম, তাইজুল ইসলাম ও আসাদুজ্জামান পায়েলকে ফিরিয়ে হ্যাটট্রিক করেন শরিফুল্লাহ।

দিনের শেষ বেলায় ব্যাটিংয়ে নেমে ৫ ওভারে খেলেছে ঢাকা মেট্রো।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

রাজশাহী ১ম ইনিংস: ৮২.৫ ওভারে ২৫২ (জহুরুল ২, তানজিদ ৭৭, শান্ত ৬৭, জুনায়েদ ৩৯, হৃদয় ৮, ফরহাদ ৯, প্রিতম ৩৮, সানজামুল ৪, তাইজুল ১, শফিকুল ০*, আসাদুজ্জামান ০; শহিদুল ১৪-৪-২৬-০, আবু হায়দার ১৩-২-২৮-১, শরিফুল্লাহ ২৪.৫-৬-৭০-৫, রকিবুল ১৯-২-৬৫-৩, আল আমিন জুনি. ৮-২-৩৬-১, আমিনুল ৪-০-২২-০, শামসুর ১-১-০-০)।

ঢাকা মেট্রো ১ম ইনিংস: ৫ ওভারে ৩/০ (শাদমান ২*, রাকিন ১*; সানজামুল ২-০-২-০, তাইজুল ২-২-০-০, আসাদুজ্জামান ১-০-১-০)।