‘অ্যামব্রোসের প্রতি ইউনিভার্স বসের কোনো শ্রদ্ধা নেই’

আসছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ওয়েস্ট ইন্ডিজের একাদশে ক্রিস গেইল ‘অটোমেটিক চয়েজ’ নয়, কার্টলি অ্যামব্রোসের এমন মন্তব্যে ভীষণ চটেছেন এই ব্যাটসম্যান। ২০ ওভার ক্রিকেটের মহাতারকা বললেন, অ্যামব্রোসের প্রতি এখন সামান্যতম শ্রদ্ধাবোধও তার নেই।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 Oct 2021, 11:46 AM
Updated : 13 Oct 2021, 11:46 AM

টি-টোয়েন্টিতে ৪২ বছর বয়সী গেইলের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স তুলে ধরে গত সপ্তাহে অমন মন্তব্য করেছিলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের কিংবদন্তি ফাস্ট বোলার অ্যামব্রোস। সেন্ট কিটসে এক রেডিও অনুষ্ঠানে মঙ্গলবার পূর্বসূরিকে কড়া ভাষায় জবাব দেন গেইল। বলেন, অ্যামব্রোসের সঙ্গে তার সম্পর্ক ‘একেবারে শেষ।’

“আমি কার্টলি অ্যামব্রোস সম্পর্কে বলছি।…ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলে প্রথম যখন এসেছিলাম তখন আমি তাকে অনেক সম্মান করতাম।”

“যখন সবেমাত্র দলে যোগ দিয়েছিলাম, এই মানুষটার দিকে তাকিয়ে থামতাম। কিন্তু এখন আমার অন্তর থেকে বলছি। আমি জানি না, অবসর নেওয়ার পর থেকে ক্রিস গেইলের বিরুদ্ধে তার কী যেন হয়েছে। গণমাধ্যমে তিনি যে নেতিবাচক বিষয়গুলো বলছেন, জানি না তিনি মনোযোগ পাওয়ার জন্য এসব বলছেন কি না। তিনি মনোযোগ পাচ্ছেন। তাই আমিও তাকে মনোযোগ দিচ্ছি, যেটা তার প্রয়োজন। আমি ব্যক্তিগতভাবে বলছি, তাকে জানিয়ে দিন যে কার্টলি অ্যামব্রোসের জন্য ক্রিস গেইল, দা ইউনিভার্স বসের আর এতটুকু শ্রদ্ধা নেই।”

ওয়েস্ট ইন্ডিজের ২০১২ ও ২০১৬ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জয়ী দলের সদস্য ছিলেন গেইল। বিধ্বংসী এই ব্যাটসম্যান স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন, ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাবেক খেলোয়াড়রা যদি নেতিবাচক মন্তব্য করেন এবং দলকে সমর্থন না দেন, তাহলে তিনি তাদের ‘মুখের ওপর অসম্মানজনক আচরণ করবেন।’

“কার্টলি অ্যামব্রোসের সঙ্গে আমার সব সম্পর্ক শেষ। (তার প্রতি) আমার আর কোনো সম্মান নেই। কখনও তার সঙ্গে দেখা হলে আমি বলব, ‘নেতিবাচক কথা বলা বন্ধ করুন, বিশ্বকাপ সামনে রেখে দলকে সমর্থন দিন।’ বিশ্বকাপের জন্য এই দল বাছাই করা হয়েছে এবং আমাদের সাবেক খেলোয়াড়দের সমর্থন দরকার। এটাই আমাদের দরকার, নেতিবাচক কোনো কথা নয়। অন্য দেশের সাবেক খেলোয়াড়রা নিজেদের দলকে সমর্থন দেয়, আমরা কেন এমন একটি বড় টুর্নামেন্টে নিজেদের দলকে সমর্থন দিতে পারি না।”

“এই টুর্নামেন্ট আমরা দুইবার জিতেছি এবং তৃতীয় শিরোপা জন্য লড়াই করতে যাচ্ছি। দল দেখছে কী ঘটছে। এতে দলে প্রতিফলন পড়বে। কোনো সিনিয়র খেলোয়াড়ের কাছ থেকে আমি কিছু নেব না। কার্টলি অ্যামবোস…ওয়েস্ট ইন্ডিজের জন্য সমর্থন দিন, ঠিক আছে?”

এই বছরের শুরু থেকে দেশের হয়ে ১৬ টি-টোয়েন্টি ইনিংসে গেইল ২২৭ রান করেছেন কেবল ১৭.৪৬ গড়ে। নামের পাশে ফিফটি শুধু একটি, অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৩৮ বলে ৬৭।

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সতেজ থাকতে আগেভাগে তিনি আইপিএলের জৈব সুরক্ষা বলয় ছেড়ে যান। তার আগে সংযুক্ত আরব আমিরাতে পাঞ্জাব কিংসের হয়ে খেলেন কেবল দুই ম্যাচে। যেখানে করেন ১ ও ১৪ রান। আইপিএলের আগে ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লিগেও (সিপিএল) সময়টা ভালো কাটেনি তার। সেন্ট কিটস অ্যান্ড নেভিস প্যাট্রিয়টসের হয়ে ৯ ম্যাচে ১৮.৩৩ গড়ে করেন ১৬৫ রান।

বার্বাডোজে এক রেডিও অনুষ্ঠানে এসবই তুলে ধরেছিলেন টেস্টে ৪০৫ উইকেটের মালিক অ্যামব্রোস।

“গেইল এখনও বিধ্বংসী হয়ে উঠতে পারে। কিন্তু গত দেড় বছরে সে যা করেছে, তাতে আমি খুব একটা সন্তুষ্ট হতে পারছি না যে সে বিশ্বকাপে আলো ছড়াবে।”

“আমার মতে, একাদশের জন্য সে অবশ্যই অটোমেটিক চয়েজ নয়। গত ১৮ মাসে তার পারফরম্যান্স দেখুন, শুধু ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে নয়, অন্য টি-টোয়েন্টি ফ্র্যাঞ্চাইজিদের হয়েও সে ভুগেছে। এই সময়ে ঘরের মাঠে অল্প যে কয়েকটা সিরিজ আমরা খেলেছি, তাতে উল্লেখ করার মতো কোনো ইনিংস তার নেই।”

আগামী ২৩ অক্টোবর দুবাইয়ে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে শিরোপা ধরে রাখার অভিযান শুরু করবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।