‘সাকিব দুর্দান্ত বোলিং করেছে, সুযোগ তৈরি করেছে’

লোকে শেষটাই মনে রাখে। রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালোরের বিপক্ষে কলকাতার নাইট রাইডার্সের জয়ে শেষ ওভারে সাকিব আল হাসানের স্কুপ শটের বাউন্ডারি নিয়েই তাই চর্চা চারপাশে। ম্যাচ শেষে কলকাতা অধিনায়ক ওয়েন মর্গ্যান মনে করিয়ে দিলেন, আগের দুই ম্যাচের ধারাবাহিকতায় এ দিনও দারুণ বোলিং করেন সাকিব।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 Oct 2021, 03:53 AM
Updated : 12 Oct 2021, 03:53 AM

আইপিএলের এলিমিনেটর ম্যাচে শারজাহতে সোমবার জয়ের জন্য শেষ ওভারে কলকাতার প্রয়োজন ছিল ৭ রান। ড্যানিয়েল ক্রিস্টিয়ানের করা প্রথম বলেই স্কুপ করে চার মেরে দলের জয় একরকম নিশ্চিত করে দেন সাকিব। স্লোয়ার বলে স্কুপ শটে টাইমিং করা সহজ নয় কখনোই। কিন্তু স্লোয়ারটি পড়তে পেরে সাকিব শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত অপেক্ষা করে দারুণ দক্ষতায় বল পাঠিয়ে দেন শর্ট ফাইন লেগ ফিল্ডারের ওপর দিয়ে।

এবারের আইপিএলের সংযুক্ত আরব আমিরাত পর্বে এটি সাকিবের তৃতীয় ম্যাচ। ব্যাটিং পেলেন প্রথমবার। আট নম্বরে নেমে শেষ সময়ের দাবি মেটানো সহজ ছিল না। ৬ বলে ৯ রানের অপরাজিত ইনিংসটি ছোট্ট হলেও দলের প্রয়োজনে ছিল গুরুত্বপূর্ণ।

তবে ম্যাচের প্রথম ভাগে বল হাতেও তিনি যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। আগের দুই ম্যাচে দারুণ বোলিংয়ে উইকেট পেলেও এ দিন উইকেট পাননি। তবে ৪ ওভারে রান দেন কেবল ২৪। ম্যাচের প্রথম ওভারটি করে রান দেন ৭। পাওয়ার প্লে শেষে টানা তিন ওভারে আঁটসাঁট বোলিংয়ে ডানা মেলতে দেননি বিরাট কোহলিদের।

ম্যাচ শেষে সাকিবের সেই অবদানের কথা তুলে ধরলেন মর্গ্যান। প্রসঙ্গ যদিও ছিল দলের তিন স্পিনারকে জড়িয়েই। সাকিব একাদশে ফেরার পর থেকে তিন স্পিনার নিয়ে খেলছে কলকাতা। দুর্দান্ত বোলিং করছেন তিনজনই। এই ম্যাচেও নারাইন ২১ রানে নেন ৪ উইকেট, বরুন চক্রবর্তী ৪ ওভারে রান দেন মোটে ২০।

ইংল্যান্ড দলে একগাদা সুইং-সিম বোলারকে নেতৃত্ব দিতে হয় মর্গ্যানকে। ম্যাচ শেষে ধারাভাষ্যকার হার্শা ভোগলের প্রশ্ন ছিল, ‘কলকাতায় তিন স্পিনারকে নেতৃত্ব দেওয়ার অভিজ্ঞতা কেমন?’ ইংল্যান্ডের বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক শুরুতে একটু মজা করলেন, “আমার তো বেশ ভালোই লাগে… বয়স তো আর কম হলো না, এত স্পিনার থাকলে খুব বেশি ছোটাছুটি করতে হয় না!”

পরমুহূর্তেই হাসি থামিয়ে মর্গ্যান বললেন তার স্পিনারদের ভূমিকা নিয়ে। আলাদা করে বললেন সাকিবের কথা।

“এটা অনেক বড় সুবিধা। বিশেষ করে তারা সবাই যখন বিশ্বমানের স্পিনার। সাকিব তার তৃতীয় ম্যাচ খেলল, দুর্দান্ত বোলিং করেছে, সুযোগ তৈরি করছে সে, অন্য দুই রহস্য স্পিনারের সঙ্গে। টুর্নামেন্ট গত গড়াচ্ছে, তারা ক্রমে আরও ভালো হয়ে উঠছে।”

বাংলাদেশ দলে টপ ও মিডল অর্ডারে ব্যাট করলেও আপাতত কলকাতার ব্যাটিং লাইন আপে সাকিব থাকছেন লোয়ার-মিডল অর্ডারে। এই ম্যাচে নামে আট নম্বরে। মর্গ্যান নিজে নামেন সাতে। সুনিল নারাইনকে পাঁচে প্রমোশন দেওয়া হয় মাঝের ওভারগুলোতে দ্রুত রান তুলতে। তিন ছক্কায় ১৫ বলে ২৬ করে দলের সেই চাওয়া মেটান নারাইন।

মর্গ্যান বললেন, ব্যাটিং লাইন আপের এই গভীরতা দলের পরিকল্পনারই অংশ।

“খুব খারাপ নয় (ব্যাটিং গভীরতা)! বিশেষ করে যখন কাজে লেগে যায়, তখন বেশ শক্তিশালী ও গভীর মনে হয় (ব্যাটিং লাইন আপ)। উইকেটের আচরণ যেমন হচ্ছে, এই ম্যাচে আমাদের ভাবনা ছিল যে অনেক গভীর পর্যন্ত ব্যাটিং থাকতে হবে। কারণ, আমাদের ধারণা ছিল উইকেট ব্যাটিং সহায়ক হবে। তা ততটা হয়নি, তবে জয়টা দারুণ।”

এলিমিনেটর জয়ের পর ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে বুধবার দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ায়ে দিল্লি ক্যাপিটালসের মুখোমুখি হবে কলকাতা।