রাজস্থান রয়্যালসের হয়ে বোলিং ভালো করতে পারেননি আইপিএলে বাংলাদেশের আরেক প্রতিনিধি মুস্তাফিজুর রহমান।
মুখোমুখি সাকিব ও মুস্তাফিজের দল, বাংলাদেশের ক্রিকেট অনুসারীদের প্রবল আগ্রহ ছিল তাই ম্যাচটিকে ঘিরে। বৃহস্পতিবার রাতে শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে দুই দলের লড়াই অবশ্য জমেনি। ৮৬ রানের বড় জয় পেয়েছে কলকাতা। ১৭২ রানের লক্ষ্য তাড়ায় রাজস্থান থামে ৮৫ রানেই।
ব্যাটিং না পাওয়া সাকিব বোলিংয়ে একটি উইকেট নেওয়ার পাশাপাশি ফিল্ডিংয়েও দলের জয়ে রাখেন অবদান। নেন একটি ক্যাচ। তার থ্রোয়ে হয় একটি রান আউট।
এর আগে ৪ ওভারে ৩১ রান দিয়ে উইকেটশূন্য থাকেন মুস্তাফিজ। একটি ছক্কার পাশাপাশি হজম করেন দুটি চার। একটি উইকেট অবশ্য পেতে পারতেন তিনি। ফিল্ডারের ব্যর্থতায় সেটি সম্ভব হয়নি। হতাশার হার দিয়ে শেষ হলো তার এবারের আইপিএল অভিযান।
শারজাহর উইকেট ছিল কিছুটা মন্থর। টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামে রাজস্থান। শুরুতে রান পেতে সংগ্রাম করতে হয় ব্যাটসম্যানদের।
অষ্টম ওভারে বল হাতে পান মুস্তাফিজ। কলকাতার সংগ্রহ তখন বিনা উইকেটে ৪৪ রান। এই ওভারে কোনো বাউন্ডারি ছাড়া তিনি খরচ করেন ৫ রান।
ভেঙ্কাটেশকে ফিরিয়ে ৭৯ রানের জুটি ভাঙেন রাহুল তেওয়াতিয়া। নিতিশ রানাকে টিকতে দেননি গ্লেন ফিলিপস।
মুস্তাফিজ আবার বোলিংয়ে ফেরেন ১৩তম ওভারে। প্রথম বলে শুবমান গিল নেন ৩ রান। তৃতীয় বলে তিনি মারেন বাউন্ডারি। শেষ বলে আউট হতে পারতেন রাহুল ত্রিপাঠী। ডানহাতি ব্যাটসম্যান ক্যাচ দেন উইকেটের পেছনে। ডান দিকে ঝাঁপিয়ে বল গ্লাভসে রাখতে পারেননি সাঞ্জু স্যামসন। ওভার থেকে আসে ৯ রান।
১৭তম ওভারে এসে মুস্তাফিজ দেন ১০ রান। তৃতীয় বল পুল করে ছক্কায় গ্যালারিতে আছড়ে ফেলেন দিনেশ কার্তিক।
কোটার শেষটি করেন তিনি ১৯তম ওভারে। প্রথম চার বলে দেন কেবল ২ রান। পঞ্চম বল অফ স্টাম্পের বাইরে পেয়ে পয়েন্ট ও শর্ট থার্ডম্যানের মাঝামাঝি দিয়ে চার মারেন ওয়েন মর্গ্যান। ওভার থেকে আসে ৭ রান।
কলকাতার হয়ে সর্বোচ্চ ৫৬ রান করেন শুবমান। তার ৪৪ বলের ইনিংসে ৪টি চারের পাশে ছক্কা দুটি।
বোলিংয়ে প্রথম ওভারেই সাকিবের হাতে বল তুলে দেন ওয়েন মর্গ্যান। অধিনায়কের আস্থার প্রতিদান বাঁহাতি স্পিনার দেন দারুণভাবে। দুর্দান্ত বোলিংয়ে নেন যাশাসবি জয়সওয়ালের উইকেট।
প্রথম দুই বলে কোনো রান নিতে না পারা বাঁহাতি ব্যাটসম্যান তৃতীয় বল রিভার্স সুইপ করতে চেয়েছিলেন, বলের লাইন মিস করে হন বোল্ড।
দারুণ বোলিং করেন অন্যারাও। চতুর্থ ওভারে ১ রান দিয়ে লিয়াম লিভিংস্টোন ও অনুজ রাওয়াতকে ফেরান নিউ জিল্যান্ডের পেসার লকি ফার্গুসন।
এবারের আসরে প্রথম দল হিসেবে শুরুর চার ওভারে ৪ উইকেট হারায় রাজস্থান। পাওয়ার-প্লে শেষে তাদের স্কোর ১৭/৪!
সেই বিপর্যয় আর সামলে উঠতে পারেনি তারা। দলটির হয়ে দুই অঙ্কে যেতে পারেন কেবল দুই জন। তিন বল খেলে শূন্য রানে অপরাজিত থাকেন মুস্তাফিজ। ২১ রানে ৪ উইকেট নিয়ে কলকাতার সফলতম বোলার শিভাম মাভি।
সংযুক্ত আরব আমিরাতে পুনরায় আইপিএল শুরুর পর আগের ম্যাচে প্রথমবার খেলতে নেমেও ভালো বোলিং করেন সাকিব। ৪ ওভারে ২০ রান দিয়ে নেন একটি উইকেট। দলের জয়ে অবদান রাখলেন তিনি এবারও।
কলকাতাকে পেছনে ফেলে প্লে-অফে খেলতে হলে শেষ ম্যাচে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সকে জিততে হবে ১৭১ রানে। আর পরে ব্যাট করলে কাজটা তাদের জন্য অসম্ভব। আর হেরে বিদায় নিল মুস্তাফিজের দল।
আরব আমিরাতে দলের সাত ম্যাচেই খেলেন মুস্তাফিজ। উইকেট নেন ৬টি। সব মিলিয়ে এবারের আসরে ১৪ ম্যাচে তার উইকেট ১৪টি। ওভারপ্রতি রান ৮.৪১ করে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
কলকাতা নাইট রাইডার্স: ২০ ওভারে ১৭১/৪ (শুবমান ৫৬, ভেঙ্কাটেশ ৩৮, রানা ১২, ত্রিপাঠী ২১, কার্তিক ১৪*, মর্গ্যান ১৩*; উনাদকাট ৪-০-৩৫-০, মরিস ৪-০-২৮-১, সাকারিয়া ৪-০-২৩-১, মুস্তাফিজ ৪-০-৩১-০, দুবে ২-০-১৮-০, তেওয়াতিয়া ১-০-১১-১, ফিলিপস ১-০-১৭-১)
রাজস্থান রয়্যালস: ১৬.১ ওভারে ৮৫ (জয়সওয়াল ০, লিভিংস্টোন ৬, স্যামসন ১, দুবে ১৮, রাওয়াত ০, ফিলিপস ৮, তেওয়াতিয়া ৪৪, মরিস ০, উনাদকাট ৬, সাকারিয়া ১, মুস্তাফিজ ০*; সাকিব ১-০-১-১, মাভি ৩.১-০-২১-৪, নারাইন ৪-০-৩০-০, ফার্গুসন ৪-০-১৮-৩, বরুন ৪-০-১৪-১)
ফল: কলকাতা নাইট রাইডার্স ৮৬ রানে জয়ী
ম্যান অব দা ম্যাচ: শিভাম মাভি।