বিশ্বকাপ রেকর্ডে উন্নতি হবে বাংলাদেশের?

দেশ ছাড়ার আগে বিমানবন্দরে অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ স্বীকার করে গেলেন, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশের রেকর্ড ভালো নয়। সেখানে উন্নতির জন্য নিজেদের সবটুকু দিয়ে চেষ্টা করবেন তারা। এই সংস্করণে বাংলাদেশের যে অবস্থা এবং সম্ভাব্য সুপার টুয়েলভে যে প্রতিপক্ষ তাতে সেটা কতটুকু সম্ভব হবে? 

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 Oct 2021, 12:08 PM
Updated : 4 Oct 2021, 12:08 PM

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশের অভিষেক ছিল দুর্দান্ত। ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে চমকে দিয়েছিল ক্রিকেট বিশ্বকে। তবে, তারপর আর তেমন সাফল্য ধরা দেয়নি। পরে হারাতে পেরেছে কেবল আফগানিস্তান, নেপাল, নেদারল্যান্ডস ও ওমানকে।

২৫ ম্যাচে জয় সাকুল্যে পাঁচটি। ১৯ হারের একটি হংকংয়ের বিপক্ষে, সেটাও দেশের মাটিতে ২০১৪ সালে। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে একটি ম্যাচ ভেসে গেছে বৃষ্টিতে।

সবশেষ তিন সিরিজে ৯ ম্যাচ জেতার পর সার্বিকভাবে টি-টোয়েন্টিতে রেকর্ড এখন একটু ভালো। ১১২ ম্যাচে জয় ৪১টি। ৬৯ হারের সঙ্গে পরিত্যক্ত দুটি ম্যাচ।

একটা সময়ে মনে করো হতো, টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের জন্য মানানসই। যে কোনো সংস্করণে যে কোনো পরিস্থিতিতে তাদের বেশিরভাগ ব্যাটসম্যান শট খেলতে পছন্দ করেন। তবে সময় গড়ানোর সঙ্গে পরিষ্কার হয়ে যায়, এই সংস্করণ বাংলাদেশের জন্য বেশ কঠিন। শক্তিতে পিছিয়ে থাকা দলও কাঁপিয়ে দেয় তাদের।

শক্তি-দুর্বলতার জায়গাগুলো ক্রিকেটাররাই জানেন সবচেয়ে ভালোভাবে। তাই দ্বিধাহীনভাবেই স্বীকার করে নেন, এই সংস্করণে বাংলাদেশের চেয়ে আফগানিস্তান ভালো দল। র‌্যাঙ্কিং, মাঠের খেলা এবং বিশ্ব জুড়ে টি-টোয়েন্টি লিগগুলোর দিকে তাকালেও মেলে সাকিবদের এই দাবির সত্যতা।

শুরু থেকে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রতিটি আসরেই খেলছে বাংলাদেশ। কিন্তু যেভাবে খেলতে হচ্ছে, সেটা ক্রিকেটারদের ভালো লাগার কথা নয়। পেরিয়ে আসতে হচ্ছে প্রাথমিক রাউন্ড যা আদতে এক ধরনেরই বাছাই। এবারও সুপার টুয়েলভে সরাসরি খেলছে আফগানিস্তান। বাংলাদেশকে পেরিয়ে আসতে হবে ওমান, স্কটল্যান্ড ও পাপুয়া নিউ গিনির বাধা।

ওয়ানডেতে এরই মধ্যে সমীহ করার মতো দল হয়ে ওঠা বাংলাদেশ বিচ্ছিন্নভাবে টি-টোয়েন্টিতেও দেখিয়েছে ঝলক। দিয়েছে সামর্থ্যের প্রমাণ। ২০১৬ সালে টি-টোয়েন্টি সংস্করণে হওয়া এশিয়া কাপে খেলেছে ফাইনালে। ২০১৮ সালে শ্রীলঙ্কায় খেলেছে নিদাহাস ট্রফির ফাইনাল।

এবারের আসরে বাংলাদেশ খেলতে যাচ্ছে নিজেদের সেরা প্রস্তুতি নিয়ে। জিম্বাবুয়ে, অস্ট্রেলিয়া ও নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে টানা তিনটি সিরিজ খেলেছে মাহমুদউল্লাহর দল। সিরিজ তিনটি জয়ের আত্মবিশ্বাস সঙ্গী করে রোববাত রাতে ওমানের উদ্দেশে দেশ ছেড়েছে তারা।

দেশের মাটিতে অস্ট্রেলিয়া ও নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে জয় অনেক প্রশ্নেরও জন্ম দিয়েছে। নিজেদের শক্তির দিক অনুযায়ী মন্থর, টার্নিং উইকেটে পাওয়া জয়গুলো সত্যিকার অর্থে কতটা কাজে দেবে, সেটা সময়ই বলে দিবে।

তবে গত কয়েক বছর ধরেই দল বুঝতে পারছে, স্মার্ট ক্রিকেট খেলতে না পারলে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে বাংলাদেশের কোনো ভবিষ্যত নেই্। এক্স ফ্যাক্টর হতে পারেন, তেমন ক্রিকেটারের ঘাটতি একটা কারণ। গিয়েই বড় শট খেলার সামর্থ্যে ঘাটতি, ব্যাটিং সহায়ক উইকেটে কার্যকর বোলারের ঘাটতির বাস্তবতা মেনে নিয়েই পরিকল্পনা সাজাচ্ছে বাংলাদেশ। পরিস্থিতি, প্রতিপক্ষ, কন্ডিশন বুঝে ঠিক করে নিচ্ছে খেলার ধরন। নিজেদের উপযোগী পরিবেশে টানা দুটি সিরিজে তা করে দেখিয়েছে বাংলাদেশ। এবার ততটা সহায়ক নয়, এমন কন্ডিশনে নিজেদের মেলে ধরার চ্যালেঞ্জ তাদের সামনে।

পরিকল্পনা কাজে লাগলে পূরণ হবে অধিনায়কের চাওয়া, সত্যি হবে দেশের স্বপ্ন। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে উজ্জ্বল হবে বাংলাদেশের রেকর্ড।