প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট নিয়ে ভাবনায় বদল দেখছেন রাজ্জাক

একটা সময় পেশাদারিত্ব বলতে কিছু ছিল না। সরাসরি হোটেলে রিপোর্টিং হতো। দুয়েক দিন পর ম্যাচ খেলতে মাঠে নেমে পড়তো খেলোয়াড়রা। সেখানটায় অনেক বদল এসেছে। এখন বেশ আগেই প্রস্তুতি শুরু করে বিভাগীয় দলগুলো। স্কিল ক্যাম্প-ফিটনেস ক্যাম্প আয়োজনের পর অংশ নেয় জাতীয় ক্রিকেট লিগে। সব মিলিয়ে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট নিয়ে ভাবনায় পরিবর্তনের ছাপ দেখছেন আব্দুর রাজ্জাক।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 Oct 2021, 02:05 PM
Updated : 2 Oct 2021, 02:05 PM

প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে বাংলাদেশের ইতিহাসের সেরা বোলার তিনি। ২০০১-০২ মৌসুমে অভিষেক, খেলেন গত বছর পর্যন্ত। নিজের সবশেষ ম্যাচেও প্রথম ইনিংসে নেন ৭ উইকেট।

সংস্কৃতিতে বদল আসার ব্যাপারটা দেখেছেন খুব কাছ থেকে।

মাঠের ভেতরে কখনও খেলোয়াড়দের নিবেদনে কোনো ঘাটতি দেখেন না রাজ্জাক। নির্বাচক হিসেবে এখন থেকে তাদের দেখবেন আরও গভীর মনোযোগ দিয়ে। ‘ইয়ো ইয়ো টেস্ট’ দিয়েই শুরু হয়েছে তা। শনিবার প্রথম দিনের ফিটনেস পরীক্ষা শেষে সন্তুষ্টির কথা জানালেন তিনি।   

“সবার মোটামুটি খুব ভালো অবস্থা। এটা ভালো হওয়ার কারণ এবার প্রত্যেক দল অনেকদিন ফিটনেস ক্যাম্প করেছে। এবার কেউ খারাপ করেনি। লক্ষ্যের চেয়ে ওপরে আছে সবার নম্বর। এটা ইতিবাচক দিক। আগে দেখা যেত অনেকে ভালো করছে না বা ফিটনেস ভালো নয় দেখে বাদ পড়ছে। আমার মনে হয় না এবার ওরকম কোনো পরিস্থিতিতে পড়তে হবে। বাকিটা পুরো রিপোর্ট পেলে বোঝা যাবে।”

“আমি নিজে যখন ফিটনেস পরীক্ষা দিয়েছি, কখনও বলিনি কাজটা ভালো না। আমি সবসময় উৎসাহ দিয়েছি। আমার মনে হয়েছে, এটা করা উচিৎ। টেস্টের পরই ঘরোয়া প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটের স্থান। ফিট থেকে সবার মাঠে নামা উচিৎ। দিনশেষে এখান থেকেই টেস্ট খেলোয়াড় তৈরি হবে। এখনও প্রাথমিক ধাপ, এরপর অনুশীলন করবে তারপর ম্যাচে নামবে। কিন্তু ফিট থাকলে খেলার সময় আর চিন্তা করতে হবে না।”

আগামী মাসের তৃতীয় সপ্তাহে শুরু হবে জাতীয় লিগের নতুন মৌসুম। বিশ্বকাপ দলের ক্রিকেটাররা ছাড়া অন্যরা অংশ নেবেন এই টুর্নামেন্টে। টেস্ট অধিনায়ক মুমিনুল হক, ওয়ানডে অধিনায়ক তামিম ইকবাল ও টেস্ট দলের আরও বেশ কজন খেলবেন জাতীয় লিগে। রাজ্জাক মনে করেন, প্রতি মৌসুমে একটু একটু করে উন্নতি হচ্ছে দেশের প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটের প্রধান টুর্নামেন্টের। 

“দেখুন এক এক করে পদ্ধতি যুক্ত হচ্ছে। এখন যেমন ফিটনেস পরীক্ষা। এর আগে হোটেলে রিপোর্টিং করতে হতো। এখন প্রত্যেক বিভাগে আলাদা ক্যাম্প হচ্ছে। এগুলো প্রক্রিয়ার মধ্যেই আছে। আমার মনে হয়, সুন্দর প্রক্রিয়াতেই এগোচ্ছে। বৃষ্টির কারণে কোনো সমস্যা না হলে যথেষ্ট প্রতিন্দ্বিতা হবে।”

“প্রত্যেক বছরই কিছু না কিছুতে উন্নতি হচ্ছে। আগে বেশি ড্র হতো। এখন প্রায় ম্যাচেই ফলাফল বের হয়। তার মানে প্রতিযোগিতা বেড়েছে। প্রত্যেক খেলোয়াড় চায় একশ রান করতে, পাঁচ উইকেট পেতে। এটা উন্নতির লক্ষণ। আগে এক-দুইজন ছিল। এখন এগারোজনের সাথে বাইরের ওরাও ভালো করতে চায়। ২০০-৩০০ করা, ৫-৬ উইকেট পাওয়ার সাহস হয়েছে।”

জাতীয় দল নির্বাচন প্রক্রিয়া নিয়ে স্বচ্ছ ধারণা আছে রাজ্জাকের। তাই উড়িয়ে দিলেন জাতীয় লিগের পারফরম্যান্সকে বিবেচনায় না নেওয়ার অভিযোগ। দেশের হয়ে তিন সংস্করণেই খেলা বাঁহাতি এই স্পিনার তুলে ধরলেন বাস্তবতা।

“জাতীয় লিগের পারফরম্যান্স বিবেচনায় নেওয়া হয় না, কেউ এটা মনে করে থাকলে ভুল করবে। আমাদের পারফরম্যান্স দেখাই হয় এই ২-৩টি খেলায়...এনসিএল, বিসিএল, ডিপিএল আর এখন বিপিএল। এখানে যারা পারফর্ম করে সাধারণত তারাই থাকে। তারপরও সন্দেহ থাকার কথা না।”

“এমন কিছু হতে পারে-কিছু খেলোয়াড় থাকে, যারা প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটেই শুধু খেলছে। তুষার ইমরানের কথা ধরুন, ভালো খেলছে, কিন্তু এখন কি ওকে নেওয়া সম্ভব? এসব অভিযোগ থাকবে।…জাতীয় দলে কিছু জায়গা থাকে একদম পাকাপোক্ত। ওই জায়গাতে কাউকে আসতে হলে অসাধারণ পারফরম্যান্স করে আসতে হবে। এটা খুব স্বাভাবিক ব্যাপার। যদি অভিযোগ করে থাকে, হয়ত এরকম ব্যাপার।”

রাজশাহী, ঢাকা মেট্রো ও রংপুর বিভাগের ক্রিকেটাররা শনিবার ফিটনেস পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন। সোমবার পর্যন্ত বাকি দলগুলোর পরীক্ষা চলবে।