অশ্বিন-মর্গ্যানের কথার লড়াইয়ে কার্তিকের সাদা পতাকা

মাঠের লড়াইয়ে বারুদ ছিল যথেষ্টই। সঙ্গে বাড়তি উত্তাপ ছড়াল কথার লড়াই। কলকাতা নাইট রাইডার্স ও দিল্লি ক্যাপিটালসের ম্যাচে মুখোমুখি হয়ে কথার তোপ দাগলেন কলকাতা ওয়েন মর্গ্যান ও দিল্লির রবিচন্দ্রন অশ্বিন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে যাওয়ার আগেই অবশ্য দুজনের মধ্যে দাঁড়িয়ে শান্তির পতাকা ওড়ালেন দিনেশ কার্তিক।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 Sept 2021, 04:20 AM
Updated : 29 Sept 2021, 09:53 AM

শারজাহতে মঙ্গলবার ম্যাচের প্রথম ইনিংসের শেষ ওভারের ঘটনা সেটি। ওভারের প্রথম বলে টিম সাউদির স্লোয়ার শর্ট ডেলিভারি পুল করে স্কয়ার লেগ বাউন্ডারিতে ধরা পড়েন অশ্বিন। মাঠ ছাড়ার সময় তাকে কিছু একটা বলেন বোলার সাউদি। অশ্বিনও জবাব দিতে দেরি করেননি। হাঁটতে হাঁটতেই তিনি হাত নাড়িয়ে কিছু বলতে থাকেন সাউদিকে।

পরিস্থিতি নতুন মোড় নেয় পরমুহূর্তেই। এবার মর্গ্যান এগিয়ে এসে কিছু বলেন অশ্বিনকে। অশ্বিন তাতে চটে যান বেশ, হেলমেট খুলে বেশ অনেকটা তেড়ে যাওয়ার মতো করেই এগিয়ে যান মর্গ্যানের দিকে। মুখ চলতে থাকে দুজনেরই। এই পর্যায়ে কলকাতার কার্তিক ছুটে গিয়ে থামান রঞ্জি ট্রফিতে তার তামিলনাড়ু সতীর্থ অশ্বিনকে। হাত দিয়ে ঠেলে, বুঝিয়ে তিনি অশ্বিনকে বলেন মাঠ ছাড়তে। তাতে কাজ হয়। একটু ক্ষোভ ঝারলেও মাঠ ছেড়ে যান অশ্বিন।

এই কথার লড়াইয়ের উৎস লুকিয়ে আগের ওভারের শেষ বলে। ভেঙ্কাটেশ আইয়ারের করা ইয়র্কারে বল পয়েন্টে ঠেলে একটি রান নেন রিশাভ পান্ত। পয়েন্ট ফিল্ডার রাহুল ত্রিপাঠি থ্রো করলে তা নন স্ট্রাইক প্রান্তে পান্তের গায়ে লেগে চলে যায় ফাঁকা জায়গায়। তখন পান্ত ও অশ্বিন রান নিয়ে নেন আরেকটি।

সাধারণত ফিল্ডারের থ্রো ব্যাটসম্যানের গায়ে লেগে ফাঁকা জায়গায় গেলেও ‘স্পিরিট অব ক্রিকেট’-এর খাতিরে দৌড়ে রান নেন না ব্যাটসম্যানরা। কিন্তু পান্ত ও অশ্বিন এক্ষেত্রে ঠিকই রান নেন। তাতেই শেষ ওভারে স্ট্রাইক পান অশ্বিন আর আউট হয়ে যান প্রথম বলে। সাউদি-মর্গ্যানরা তাতে পেয়ে যান নিজেদের অসন্তুষ্টি বুঝিয়ে দেওয়ার সুযোগ।

সাউদি-অশ্বিন-মর্গ্যানদের ঘটনার পর ধারাভাষ্যে সুনিল গাভাস্কার বলেন, “অশ্বিন পিচের ওপর দিয়ে হাঁটায় এই কথার লড়াই হতে পারে।” তবে আরেক ধারাভাষ্যকার সাইমন ডুল বলেন, ‘নিশ্চিতভাবেই এটা ওই বাড়তি একটি রান নিয়ে…।”

ম্যাচের পর কার্তিকের কথায় পরিষ্কার হয়, বাড়তি ওই রান নেওয়াকেই ভালোভাবে নিতে পারেননি মর্গ্যান। এই বিতর্কে নিজের ভাবনাও জানান অভিজ্ঞ এই ক্রিকেটার।

“দেখুন, আমি নিশ্চিত করেই জানি যে রাহুল ত্রিপাঠি থ্রো করার পর তা রিশাভ পান্তের গায়ে লাগে। এরপর অশ্বিন রান করার ডাক দেয় এবং ওরা রান নিতে ছোটে। আমার মনে হয় না, মর্গ্যানের এটা ভালো লেগেছে। সে এমন একজন, যে আশা করে ফিল্ডারের থ্রোয়ে ব্যাটসম্যানের গায়ে বা ব্যাটে বল লাগলে, স্পিরিট অব ক্রিকেট ভাবনায় রেখে ব্যাটসম্যান রান নেবে না।”

“এখানে আসলে উচিত-অনুচিত বিচার করা কঠিন। খুবই কৌতূহল জাগানিয়া বিষয় এটি। আমার নিজস্ব অভিমতও আছে এটা নিয়ে। তবে আপাতত এখানে শান্তি স্থাপন করতে পেরেই আমি খুশি এবং এখন সব স্বাভাবিক আছে।”

ম্যাচটিও উত্তেজনা ছড়ায় বেশ। দিল্লির ১২৯ রানের পুঁজিতেও জমে ওঠে লড়াই। কলকাতা শেষ পর্যন্ত জেতে ৩ উইকেটে।