চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামে ম্যাচটি ড্র হয় অনুমিতভাবেই। শনিবার শেষ দিনে দ্বিতীয় ইনিংসে ৬ উইকেটে ৩৭১ রান তুলে ইনিংস ঘোষণা করে ‘এ’ দল। এইচপির লক্ষ্য দাঁড়ায় ৫৮ ওভারে ৩৬৬। ৪০ ওভারে তারা ৩ উইকেটে ১৪৮ রান তোলার পর বৃষ্টিতে ম্যাচ শেষ হয় ঘণ্টা দেড়েক আগেই।
শেষদিনের উল্লেখযোগ্য দিক মিঠুনের সেঞ্চুরি ও ইয়াসিরের সেঞ্চুরি না পাওয়া। শতরানের সম্ভাবনায় এগিয়ে থেকে দিন শুরু করা ইয়াসির থমকে যান ১৪ রান দূরে।
৪৬ রান নিয়ে দিন শুরু করে মিঠুন ফিফটি স্পর্শ করেন ১২৬ বলে। আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে আগের দিন ৬৫ রান করা ইয়াসির এ দিন ছিলেন একটু সতর্ক। তার পরও সেঞ্চুরিটা পাওয়া হয়নি তার। পেসার মুকিদুল ইসলামের লেংথ বল পুল করতে গিয়ে লাইন মিস করে বোল্ড হয়ে যান তিনি।
১১৬ বলের ইনিংসটি থামে ৮৬ রানে। আগের দিনের ৬ চার ও ৩ ছক্কার সঙ্গে আর কোনো বাউন্ডারি তিনি যোগ করতে পারেননি। মিঠুনের সঙ্গে তার জুটিতে যোগ হয় ১৫৫ রান।
মিঠুন এরপর এগিয়ে যান ইরফান শুক্কুরের সঙ্গে জুটিতে। প্রথম ইনিংসে ব্যর্থ ইরফান এ দিন বেশ সাবলিল ব্যাটিং করেন। দুজনের জুটিতে রান আসে অনায়াসে।
এক পর্যায়ে বাঁহাতি স্পিনার তানভির ইসলামকে বেশ কবার শাফল করে ও স্টান্স বারবার বদলে খেলার চেষ্টা করছিলেন ইরফান। সেই অস্থিরতায় কাল হয় বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যানের জন্য। তানভিরকে বেরিয়ে এসে খেলতে গিয়েই বোল্ড হন তিনি ৩৭ রান করে।
মিঠুনকে থামানো যায়নি। ৯২ রান থেকে তানভিরকে ছক্কা মারেন তিনি মাথার ওপর দিয়ে। পরে ২০৬ বলে স্পর্শ করেন শতরান।
৭ চার ও ১ ছক্কায় মিঠুন তিন অঙ্ক ছোঁয়ার পরই ইনিংস ঘোষণা করেন অধিনায়ক মুমিনুল।
প্রথম ইনিংসে ৬ উইকেট নেওয়া বাঁহাতি স্পিনার হাসান মুরাদ এবার থাকেন উইকেটশূন্য। প্রথম ইনিংসে ব্যর্থ তানভির এই ইনিংসে নেন ৩ উইকেট।
৫৮ ওভারে ৩৬৬ রান করে ম্যাচ জয়ের সুযোগ এইচপি দলের ছিল না। ছিল ব্যাটিং অনুশীলন আর নিজেদের মেলে ধরার সুযোগ। সেই চেষ্টায় শুরুতেই শেষ ওপেনার তানজিদ হাসান তামিম। নাঈম হাসানের অফ স্পিনে শূন্য রানেই আউট তিনি। স্লিপে দারুণ ক্যাচ নেন ইয়াসির।
আরেক ওপেনার পারভেজ হোসেন ইমন ও তিনে নামা মাহমুদুল হাসান থিতু হয়েও পারেননি বড় ইনিংস খেলতে। স্বভাবসুলভ আগ্রাসী না খেলে নিজেকে সামলে রেখে এগোচ্ছিলেন পারভেজ। কিন্তু আউট হন চেনা ঢংয়েই। নাঈমকে উড়িয়ে মেরে তিনি লং অনে ধরা পড়েন ৯৪ বলে ৪৩ রান করে।
মাহমুদুল বিদায় নেন আগেই। আবু জায়েদ চৌধুরির বলে স্কয়ার ও কাভার ড্রাইভে টানা দুটি দুর্দান্ত বাউন্ডারির পর সোজা বল লেগ সাইডে খেলতে গিয়ে বোল্ড হন তিনি ২৫ রান করে।
শাহাদাত হোসেন ও তৌহিদ হৃদয় অবশ্য দারুণ খেলছিলেন। তাদেরকে থামায় বৃষ্টি। ৬৭ বলে ৮ চারে ৪৪ রানে অপরাজিত থাকেন শাহাদাত, ৫ চারে ২৬ বলে ২৭ হৃদয়।
দিনের নায়ক মিঠুন খেলা শেষে বললেন, রানে ফেরার তাগিদটা খুব করে অনুভব করছিলেন তিনি।
“আমাদের এখানে আসার যে উদ্দেশ্য ছিল, ম্যাচ অনুশীলন, এখনও পর্যন্ত আমাদের ম্যাচ অনুশীলন খুবই ভালো হয়েছে। এখানকার সুযোগ-সুবিধা ভালো ছিল। চট্টগ্রামের উইকেট তো সবসময়ই ভালো খাকে।”
“সবকিছু মিলিয়ে, ব্যক্তিগতভাবে আমার জন্য খুব ভালো হয়েছে। আমার জন্য ম্যাচগুলি দরকার ছিল। সবশেষ কিছুদিন খুব একটা ভালো যাচ্ছিল না। এখানে রান করতে পেরেছি। ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, এটা আমাকে সহায়তা করবে।”
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ ‘এ’ ১ম ইনিংস: ২৩১
বাংলাদেশ এইচপি ১ম ইনিংস: ২৩৭/৮
বাংলাদেশ ‘এ’ ২য় ইনিংস: (আগের দিন ২৫৮/৪) ১০৮.১ ওভারে ৩৭১/৬ (ডি.) (মিঠুন ১০১*, ইয়াসির ৮৬, ইরফান ৩৭, শহিদুল ০*; সুমন ১৮.১-১-৭৬-০, মুকিদুল ১৭-৫-৩৫-২, মুরাদ ২৮-৪-১০১-০, মাহমুদুল ৬-১-২২-০, রেজাউর ১২-০-৩৯-১, তানভির ২৫-৪-৭৭-৩, আনিসুল ২-০-১৮-০)।
বাংলাদেশ এইচপি ১ম ইনিংস: (লক্ষ্য ৩৬৬) ৪০ ওভারে ১৪৮/৩ (পারভেজ ৪৩, তানজিদ ০, মাহমুদুল ২৫, শাহাদাত ৪৪*, হৃদয় ২৭*; নাঈম ১৬-২-৪২-২, আবু জায়েদ ৮-৩-২০-১, রকিবুল ১০-১-৪৯-০, খালেদ ৬-২-২৯-০)।
ফল: ম্যাচ ড্র