মালিঙ্গার অবসরে যে কারণে খুশি তামিম

সম্প্রতি লাসিথ মালিঙ্গার অবসর ঘোষণায় ক্রিকেট বিশ্বজুড়ে বয়ে যায় স্তুতির জোয়ার। বেদনার সুর ফুটে ওঠে অনেকের কণ্ঠে। তবে সেই দলে নেই তামিম ইকবাল। তিনি বরং বেজায় খুশি। লঙ্কান পেস কিংবদন্তির বলে ভোগান্তির শিকার যে কম হতে হয়নি বাংলাদেশের অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যানকে!

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 Sept 2021, 03:46 PM
Updated : 19 Sept 2021, 03:46 PM

মালিঙ্গার শেষ ওয়ানডে ম্যাচটিতেই যেমন, দুর্দান্ত ইয়র্কারে তামিমকে শূন্য রানে ফেরান তিনি প্রথম ওভারেই। সব মিলিয়ে দুজনের মুখোমুখি ১৩ আন্তর্জাতিক ম্যাচে পাঁচবার তামিমকে বিদায় করেন মালিঙ্গা। এরমধ্যে চারবারই বোল্ড, তিনবার ফুল লেংথ বলে এবং তিনবার শূন্য রানে।

রোববার সন্ধ্যায় ধারাভাষ্যকার ও সাবেক শ্রীলঙ্কান ক্রিকেটার রাসেল আর্নল্ডের শো ‘চিলিং উইথ রাসেল’-এ এক দর্শক তামিমকে মনে করিয়ে দিলেন মালিঙ্গার বিদায়ী ওয়ানডের সেই ইয়র্কারের কথা। তামিম মজা করে বললেন, মালিঙ্গার বিদায় তাকে স্বস্তি দিচ্ছে। অবশ্য বোলার হিসেবে মালিঙ্গার বিশালত্বও তুলে ধরতেও ভুললেন না তিনি।

“বিশ্বজুড়ে অনেকে তার অবসর নিয়ে দুঃখ পেয়েছে। আমি তাদের মধ্যে নই। আমি বেশ খুশি যে সে অবসর নিয়েছে। কারণ, ওই ইয়র্কারগুলো খেলা মোটেও মজার কিছু ছিল না, নিশ্চিত করে বলতে পারি!”

“চ্যাম্পিয়ন বোলার ছিল সে, সবাই একমত হবে তাতে। শ্রীলঙ্কার দারুণ একজন দূত। যখনই আমি তার বিপক্ষে খেলেছি, দেখেছি তাকে হৃদয় উজাড় করে খেলতে। সত্যিকার অর্থেই চ্যাম্পিয়ন বোলার। আমি খুশি যে, তার মুখোমুখি আর হতে হবে না। ওই ইয়র্কারগুলো, ইনসুইঙ্গিং ইয়র্কারগুলো করে সে আমাকে আউট করেছে বেশ কবার। আমি তাকে শুভকামনা জানাই পরের অধ্যায়ের জন্য।”

স্লিঙ্গিং বোলিং অ্যাকশনের কারণে মালিঙ্গার বল পড়া এমনিতেই কঠিন ছিল। তামিমের মতে, ইয়র্কারগুলো আরও বিষাক্ত হয়ে উঠত বল শেষ মুহূর্তে সুইং করায়।

“তার ইয়র্কার খেলার সবচেয়ে কঠিন ব্যাপার ছিল লেট সুইং। তার অ্যাকশন এমনিতেই স্পষ্ট নয়। যেটা বোঝাতে চাইছি, স্বাভাবিক অ্যাকশন নয়, হাত থেকে বল দেখাই খুব কঠিন। বল দেখতে পারলেও, মনে হতো যে বল অফ স্টাম্পে আসছে, কিন্তু শেষ মুহূর্তে সুইং করে মিডল ও লেগ স্টাম্পে আসত।”

আর্নল্ডের এই শো-তে অতিথি হয়ে যোগ দিয়েছিলেন সাবেক লঙ্কান পেসার ফারভিজ মাহারুফ। তিনি শোনালেন মালিঙ্গা-তামিম দ্বৈরথ নিয়ে শ্রীলঙ্কার টিম মিটিংয়ের আলোচনা। তারা খেয়াল করেছিলেন, মালিঙ্গাকে খেলার সময় তামিমের ব্যাক লিফট একটু ছোট ও নিচু থাকত। মাহারুফ বা নুয়ান কুলাসেকারার মতো মিডিয়াম পেসারদের ক্ষেত্রে ব্যাক লিফট থাকত ভিন্ন। তামিম সেটিরও ব্যাখ্যা দিলেন।

“লাসিথকে খেলার ক্ষেত্রে আমি কেবল ফুল লেংথ বল খেলাতেই মনোযোগ দিতাম। সবসময় সামনের পায়ে খেলতে চাইতাম। আপনার (মাহারুফ) বা কুলাসেকারার ক্ষেত্রে অনেকটাই স্বাভাবিক খেলতে চেষ্টা করতাম। লাসিথের ক্ষেত্রে, সে বাউন্সার বা শর্ট অব লেংথ ডেলিভারিতে আমি সমস্যা দেখিনি। কারণ তা কোনোভাবে সামলাতে পারতাম। কিন্তু বেশি বিপদ ছিল ফুল লেংথ বলে।”

“সামনের পায়ে খেলাতেই তাই বেশি নজর দিতাম, বিশেষ করে প্রথম দুই-তিন ওভারে। ওই সময়টা কাটিয়ে দিতে পারলে মোটামুটি ধারণা পাওয়া যেত তাকে খেলার। সামনের পায়েই খেলতে চাইতাম। কারণ তার গতি সবসময়ই এমন ছিল যে খুব জোরে মারার দরকার নেই, টাইমিং করতে পারলেই নতুন বল ছুটে যেত দ্রুতগতিতে।”