রশিদের জায়গায় অধিনায়ক নবি, আফগান ক্রিকেটে অস্থিরতা

রশিদ খান পদত্যাগ করার পর মোহাম্মদ নবিকে বিশ্বকাপের জন্য অধিনায়কের দায়িত্ব দিয়েছে আফগানিস্তান। অভিজ্ঞ এই অলরাউন্ডার দায়িত্ব নিতে সম্মতিও জানিয়েছেন। তবে ঝামেলার অবসান হচ্ছে না এখনই। তাতে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে বেশ বড় একটা সঙ্কটেই পড়ে গেছে আফগান ক্রিকেট।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 Sept 2021, 06:46 AM
Updated : 10 Sept 2021, 06:46 AM

অস্থিরতার শুরুর আফগানিস্তানের বিশ্বকাপ দল ঘোষণার দিয়ে। বৃহস্পতিবার রাতে ঘোষিত দলে নাম দেখা যায় দীর্ঘদিন ধরে দলের বাইরে থাকা বেশ কজন সিনিয়র ক্রিকেটারকে। দল ঘোষণার ১৫-২০ মিনিট পরই অধিনায়ক রশিদ খান টুইটারে জানান, দল নির্বাচনে তার মতামত না নেওয়ায় ওই মুহূর্ত থেকেই টি-টোয়েন্টি দলের নেতৃত্ব ছাড়ছেন তিনি।

ক্রিকেট ওয়েবসাইট ক্রিকবাজের খবর, আফগান ক্রিকেট বোর্ডের (এসিবি) তালেবান মনোনীত ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আজিজউল্লাহ ফাজিলের সরাসরি হস্তক্ষেপে বেশ কজন সিনিয়র ক্রিকেটার দলে ফেরায় চটেছেন রশিদ। তার মতে, দীর্ঘদিন দলের বাইরে থাকা এই সিনিয়ররা ‘ফিট নন ও শৃঙ্খলা ভালো নয়।”

আফগানিস্তানের বিশ্বকাপ দলে জায়গা পেয়েছেন মোহাম্মদ শাহজাদ। যিনি শৃঙ্খলাভঙ্গের কারণে ২০১৯ সালে এক বছরের জন্য নিষিদ্ধ হওয়ার পর ক্রিকেটে ফিরলেও জাতীয় দলে আর সুযোগ পাচ্ছিলেন না। দলে আছেন অভিজ্ঞ তিন পেসার হামিদ হাসান, শাপুর জাদরান ও দওলত জাদরান। হামিদ আফগানিস্তানের হয়ে সবশেষ টি-টোয়েন্টি খেলেছেন ২০১৬ বিশ্বকাপে। শাপুর জাতীয় দলের হয়ে সবশেষ এই সংস্করণে খেলেছেন দেড় বছর আগে, দওলত দুই বছর আগে।

ক্রিকবাজের খবর, রশিদের অসন্তুষ্টি মূলত এই চারজনকে নিয়েই। পাশাপাশি দলে জায়গা পাওয়া হাশমতউল্লাহ শহিদিকেও টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের উপযুক্ত মনে করেন না তিনি। যদিও ১৮ জনের এই দল থেকে পরে চূড়ান্ত স্কোয়াডে বাদ দিতে হবে তিনজনকে।

আফগান বোর্ডের এক মুখপাত্র ক্রিকবাজকে জানান রশিদের দায়িত্ব ছাড়ার কারণ।

“সে (রশিদ) দল নিয়ে খুশি ছিল না কারণ বয়স্ক কজন ক্রিকেটারকে নেওয়া হয়েছে। স্কোয়াড দেখার পর ক্ষুব্ধ হয়ে সে পদত্যাগ করেছে।”

“এখন আর সে দলকে নেতৃত্ব দেবে না। দল ঘোষণা, রশিদের পদত্যাগ আর নবিকে অধিনায়ক হিসেবে নিয়োগ, এত কিছু হয়ে গেছে কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই। আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জোর করে এসব করিয়েছেন। রশিদ ক্ষোভ প্রকাশ করেছে, কারণ দল নির্বাচনের মানদণ্ড ফিটনেস, পারফরম্যান্স ও শৃঙ্খলা বিবেচনায় নেওয়া হয়নি।”

আফগানিস্তানের বোর্ড প্রধান ও অধিনায়ক, পদাধিকার বলে উভয়ই নির্বাচক কমিটির অংশ।

নতুন অধিনায়ক হিসেবে নবির নাম ঘোষণার পর তিনি দায়িত্ব নেবেন কিনা, সেই সংশয় ছিল। আগেও নানা সময় তিনি আফগান বোর্ডের সমালোচনা করেছেন প্রকাশ্যে। রশিদ খানের ঘনিষ্ঠ বলেও পরিচিতি আছে তার। তবে টুইটারে নবি জানান দায়িত্ব গ্রহণের কথা।

“সঙ্কটপূর্ণ এই সময়ে, টি-টোয়েন্টি দলের নেতৃত্ব ঘোষণার এসিবির সিদ্ধান্তকে আমি সম্মান করি। আশা করি, আমরা সবাই একসঙ্গে আগামী বিশ্বকাপে দলের দারুণ একটি চিত্র ফুটিয়ে তুলতে পারব।”

নবি আগে ১২টি টি-টোয়েন্টিতে আফগানিস্তানকে নেতৃত্বে দিয়েছেন, সবশেষটি ২০১৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে। ২৮টি ওয়ানডেতেও তিনি দলের অধিনায়কত্ব করেছেন, সবশেষবার ২০১৫ বিশ্বকাপে।

আফগানিস্তান দল: রশিদ খান, রহমানউল্লাহ গুরবাজ, হজরতউল্লাহ জাজাই, উসমান গনি, আসগর আফগান, মোহাম্মদ নবি, নাজিবউল্লাহ জাদরান, হাশমতউল্লাহ শহিদি, মোহাম্মদ শাহজাদ, মুজিব উর রহমান, করিম জানাত, গুলবদিন নাইব, নাভিন উল হক, হামিদ হাসান, শরাফউদ্দিন আশরাফ, দওলত জাদরান, শাপুর জাদরান, কাইস আহমেদ।

সফরসঙ্গী অতিরিক্ত: আফসার জাজাই, ফরিদ আহমাদ মালিক।