নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষেও সিরিজ জিতল বাংলাদেশ

নাসুম আহমেদের ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়ের পর মুস্তাফিজুর রহমানের নৈপুণ্যে লক্ষ্যটা ছিল একশর নিচে। এক সময়ে সেটাও কঠিন হয়ে যেতে বসেছিল। তবে মাহমুদউল্লাহর অধিনায়কোচিত ইনিংসে শেষ পর্যন্ত জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ল বাংলাদেশ। একই সঙ্গে নিজেদের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো টি-টোয়েন্টিতে তিনটি সিরিজ জিতল তারা।

অনীক মিশকাতঅনীক মিশকাতবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 Sept 2021, 09:32 AM
Updated : 8 Sept 2021, 02:16 PM

৬ উইকেটের জয়

লক্ষ্য স্রেফ ৯৪ রানের। নিউ জিল্যান্ডের দুই বাঁহাতি স্পিনারকে অতিরিক্ত সতর্ক হয়ে খেলতে গিয়ে চাপে পড়তে বসেছিল বাংলাদেশ। তবে প্রয়োজনের সময় মাহমুদউল্লাহর দুই বাউন্ডারিতে সরে যায় চাপ। আগের ম্যাচে বড় হারের ধাক্কা ভুলে ঘুরিয়ে দাঁড়িয়ে জয়ে ফিরে বাংলাদেশ। 

৫ বল বাকি থাকতে ৪ উইকেট হারিয়ে লক্ষ্য ছুঁয়ে ফেলে বাংলাদেশ। নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম ও সব মিলিয়ে ষষ্ঠবারের মতো সিরিজ জিতল তারা।

২০তম ওভারের প্রথম বলে বাউন্ডারিতে দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেওয়া মাহমুদউল্লাহ ৪৮ বলে দুই ছক্কা ও এক চারে অপরাজিত থাকেন ৪৩ রানে।

এই জয়ে ৫ ম্যাচের সিরিজে ৩-১ ব্যবধানে এগিয়ে গেল বাংলাদেশ। আগামী শুক্রবার একই মাঠে হবে পঞ্চম ও শেষ ম্যাচ। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে এটাই বাংলাদেশের শেষ ম্যাচ।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

নিউ জিল্যান্ড: ১৯.৩ ওভারে ৯৩ (রাচিন ০, অ্যালেন ১২, ল্যাথাম ২১, ইয়াং ৪৬, নিকোলস ১, ডি গ্র্যান্ডহোম ০, ব্লান্ডেল ৪, ম্যাকনকি ০, এজাজ ৪, টিকনার ২, বেনেট ০*; নাসুম ৪-০-১০-৪, সাকিব ৪-০-২৫-০, মেহেদি ৪-১-২১-১, মুস্তাফিজ ৩.৩-০-১২-৪, সাইফ ৩-০-১৬-১, মাহমুদউল্লাহ ১-০-৭-০)

বাংলাদেশ: ১৯.১ ওভারে ৯৬/৪ (নাঈম ২৯, লিটন ৬, সাকিব ৮, মুশফিক ০, মাহমুদউল্লাহ ৪৩*, আফিফ ৬*; বেনেট ৩-০-১৭-০, এজাজ ৪-০-৯-২, ম্যাকনকি ৩.১-০-৩৪-১, রাচিন ৪-০-৮-০, ডি গ্র্যান্ডহোম ৩-০-১৩-০, টিকনার ২-০-১৩-০)

জীবন পেলেন মাহমুদউল্লাহ

দুই বাঁহাতি স্পিনারের বলে রানই পেল না বাংলাদেশ। সপ্তদশ ওভারে বোলিংয়ে ফিরে কেবল ১ রান দিলেন এজাজ প্যাটেল। সেই ওভার স্টাম্পড হতে পারতেন মাহমুদউল্লাহ। কিন্তু বেঁচে যান টম ল্যাথামের ব্যর্থতায়। গ্লাভসে বল জমাতে পারেননি তিনি।

এজাজ ৪ ওভারে কেবল ৯ রান দিয়ে নেন ২ উইকেট। আরেক বাঁহাতি স্পিনার রাচিন রবীন্দ্র ৪ ওভারে ৮ রান নিয়ে উইকেটশূন্য।

১৭ ওভারে বাংলাদেশের স্কোর ৭৫। জয়ের জন্য শেষ ৩ ওভারে প্রয়োজন ১৯ রান।

অহেতুক রান আউট নাঈম

দুই রান ছিল না। তবুও বিনা কারণে সেই চেষ্টায় গেলেন দুই ব্যাটসম্যান। সুযোগটা লুফে নিল নিউ জিল্যান্ড। মোহাম্মদ নাঈম শেখকে রান আউট করে ভাঙল জুটি।

ব্লেয়ার টিকনারের বল পুল করে ডিপ ব্যাকওয়ার্ড স্কয়ার লেগে পাঠান নাঈম। কিপার টম ল্যাথামের গ্লাভসে জমার সময় বেশ দূরে ছিলেন বাঁহাতি ওপেনার। শেষে মরিয়া হয়ে ডাইভ দিয়ে পৌঁছানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু পারেননি, এর আগেই বেলস ফেলে দেন নিউ জিল্যান্ড অধিনায়ক। ভাঙে ৫০ বল স্থায়ী ৩৪ রানের জুটি।

৩৫ বলে একটি করে ছক্কা ও চারে ২৯ রান করেন নাঈম।

১৫ ওভারে বাংলাদেশের স্কোর ৪ উইকেটে ৬৯। ক্রিজে মাহমুদউল্লাহর সঙ্গী আফিফ হোসেন। জয়ের জন্য শেষ ৫ ওভারে ২৫ রান চাই স্বাগতিকদের।

নাঈম-মাহমুদউল্লাহর ব্যাটে এগোচ্ছে বাংলাদেশ

পরপর দুই বলে সাকিব আল হাসান ও মুশফিকুর রহিমকে হারানোর ধাক্কা সামাল দিয়ে এগোচ্ছে বাংলাদেশ। মোহাম্মদ নাঈম শেখের সঙ্গে জুটি গড়ে তুলছেন অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ।

মন্থর শুরুর পর দ্বাদশ ওভারে কোল ম্যাকনকিকে ছক্কায় ওড়িয়েছেন মাহমুদউল্লাহ। অফ স্পিনারের সেই ওভার থেকে এসেছে ১২ রান।

১২ ওভারে বাংলাদেশের স্কোর ৩ উইকেটে ৬০। ২৯ বলে ২৬ রানে খেলছেন নাঈম। মাহমুদউল্লাহর রান ২১ বলে ১৭।

এক ওভারেই নেই সাকিব-মুশফিক

আগের ম্যাচে বাংলাদেশকে ভোগানো এজাজ প্যাটেল চার বলের মধ্যে ফিরিয়ে দিলেন দুই অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান সাকিব আল হাসান ও মুশফিকুর রহিমকে।

অপ্রয়োজনীয় শট খেলেই ফিরেছেন স্বাগতিকদের দুই ব্যাটিং ভরসা।

বাঁহাতি স্পিনারকে এজাজকে বেরিয়ে এসে খেলতে গিয়ে ইয়র্কার বানিয়ে স্টাম্পড হন সাকিব। ৮ বলে ১ চারে তিনি করেন ৮।

দুটি ডট খেলে পরের বলে স্লগ করে বোল্ড হয়ে যান মুশফিক।

পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে জোড়া উইকেট হারিয়ে চাপে বাংলাদেশ। ৬ ওভারে তাদের স্কোর ৩ উইকেটে ৩২। ক্রিজে মোহাম্মদ নাঈম শেখের সঙ্গী মাহমুদউল্লাহ।

শুরুতেই শেষ লিটন

আগের বলেই চমৎকার এক শটে চার মারলেন লিটন দাস। পরের বলেই নিলেন ঝুঁকি। এর মাশুল দিলেন আউট হয়ে।

স্লগ সুইপ করে কোল ম্যাকনকিকে ওড়াতে চেয়েছিলেন লিটন। টাইমিং করতে পারেননি। ডিপ মিডউইকেট থেকে অনেকটা দৌড়ে ঝাঁপিয়ে ক্যাচ মুঠোয় নেন ফিন অ্যালেন।

১১ বলে ১ চারে ৬ রান করেন লিটন।

৩ ওভারে বাংলাদেশের স্কোর ১ উইকেটে ১৩। ২ রানে খেলছেন মোহাম্মদ নাঈম শেখ। বাউন্ডারিতে রানের খাতা খুলেছেন সাকিব আল হাসান।

সিরিজ জিততে ৯৪ রান চাই বাংলাদেশের

মুস্তাফিজুর রহমানের জোড়া আঘাতে লক্ষ্যটা একশ রানের নিচে রাখতে পেরেছে বাংলাদেশ। তিন বল বাকি থাকতে ৯৩ রানে গুটিয়ে গেছে নিউ জিল্যান্ডের ইনিংস।

এক প্রান্ত আগলে রেখে দলকে টানছিলেন উইল ইয়াং। শেষ ওভারে মুস্তাফিজের চড়াও হয়ে রান যতটা সম্ভব বাড়িয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন তিনি। কিন্তু বাঁহাতি পেসারের কাটারে কাভারে ক্যাচ দিয়ে শেষ হয় তার ইনিংস।

৪৮ বলে এক ছক্কা ও পাঁচ চারে ইয়াং করেন ৪৬ রান।

পরের বলেই মিলে আরেক উইকেট। থার্ড ম্যানে মেহেদি হাসানের হাতে ধরা পড়েন ব্লেয়ার টিকনার। তাতে ৯৪ রানের লক্ষ্য পেয়েছে বাংলাদেশ।

নাসুম আহমেদ ও মুস্তাফিজ ভাগ করে নেন ৮ উইকেট। বাঁহাতি স্পিনার নাসুম ১০ রানে নেন ৪ উইকেট। মুস্তাফিজ ৪ উইকেট পান ১২ রানে। 

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

নিউ জিল্যান্ড: ১৯.৩ ওভারে ৯৩ (রাচিন ০, অ্যালেন ১২, ল্যাথাম ২১, ইয়াং ৪৬, নিকোলস ১, ডি গ্র্যান্ডহোম ০, ব্লান্ডেল ৪, ম্যাকনকি ০, এজাজ ৪, টিকনার ২, বেনেট ০*; নাসুম ৪-০-১০-৪, সাকিব ৪-০-২৫-০, মেহেদি ৪-১-২১-১, মুস্তাফিজ ৩.৩-০-১২-৪, সাইফ ৩-০-১৬-১, মাহমুদউল্লাহ ১-০-৭-০)

মাঠে ফিরে বোলিংয়ে সাইফ

আঙুলে চোট নিয়ে বাইরে যাওয়ার শঙ্কা উড়িয়ে ফিরলেন মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিন। ১৯তম ওভারে বোলিংও করলেন এই পেস বোলিং অলরাউন্ডার। দারুণ এক ডেলিভারিতে এজাজ প্যাটেলকে বোল্ড করে পেলেন উইকেট।

ইয়র্কার লেংথের বলে ব্যাট ছোঁয়াতে পারেননি এজাজ, উড়ে যায় মিডল স্টাম্প। ৮ বলে তিনি করেন ৪।

১৯ ওভারে নিউ জিল্যান্ডের স্কোর ৮ উইকেটে ৯২।

অপেক্ষা বাড়ল সাকিবের

লাসিথ মালিঙ্গাকে স্পর্শ করতে প্রয়োজন কেবল ১ উইকেট, ছাড়িয়ে যেতে দুটি। পরপর দুই ম্যাচে উইকেটশূন্য থাকায় অপেক্ষা বাড়ল সাকিব আল হাসানের। প্রথম ওভারে ১০ রান দেওয়ার পর নিয়ন্ত্রিত বোলিংই করেন বাঁহাতি এই স্পিনার। কিন্তু উইকেটের দেখা আর পাননি।

৪ ওভারে ২৫ রান দিয়েছেন সাকিব।

১৭ ওভারে নিউ জিল্যান্ডের স্কোর ৭ উইকেটে ৮২। ৪২ বলে ৪০ রান নিয়ে খেলছেন উইল ইয়াং, এজাজ প্যাটেলের রান ২ বলে ২।

চমৎকার দুই ক্যাচে মুস্তাফিজের জোড়া শিকার

মোহাম্মদ নাঈম শেখ মিড অফে নিলেন দুর্দান্ত ক্যাচ। পরে অসাধারণ এক ফিরতি ক্যাচ নিলেন মুস্তাফিজুর রহমান। চমৎকার দুই ক্যাচে এক ওভারে বাঁহাতি এই পেসার ধরলেন জোড়া শিকার।

আগের ম্যাচে ষষ্ঠ উইকেটে হেনরি নিকোলসের সঙ্গে চমৎকার এক জুটিতে নিউ জিল্যান্ডকে লড়াইয়ের পুঁজি এনে দিয়েছিলেন টম ব্লান্ডেল। নিকোলস ফিরে গেছেন আগেই। এবার ব্লান্ডেলকে দ্রুত বিদায় করলেন মুস্তাফিজ।

বাঁহাতি পেসারের মাথার ওপর দিয়ে তুলে মেরেছিলেন ব্লান্ডেল। মারে খুব একটা জোর ছিল না। কিছুটা সরে গিয়ে গিয়ে মিড অনের ফিল্ডার নাঈম ঝাঁপিয়ে মুঠোয় জমান অসাধারণ এক ক্যাচ।

১০ বলে ৪ রান করেন ব্লান্ডেল।

একের পর এক কাটারে কোল ম্যাকনকিকে ভোগাচ্ছিলেন মুস্তাফিজ। ব্যাটসম্যান বুঝতে পারছিলেন না কীভাবে খেলবেন। শেষ পর্যন্ত আগেভাগেই শট খেলে দিলেন ক্যাচ, ফলো থ্রুয়ে ঝাঁপিয়ে চমৎকার ক্যাচ নিলেন মুস্তাফিজ।

১৬ ওভারে নিউ জিল্যান্ডের স্কোর ৭ উইকেটে ৭৪। ক্রিজে উইল ইয়াংয়ের সঙ্গী এজাজ প্যাটেল।

আঙুলে চোট পেয়ে মাঠ ছাড়লেন সাইফ

উইল ইয়াংয়ের বুলেট গতির স্ট্রেইট ড্রাইভ ঠেকাতে হাত বাড়িয়ে দিলেন মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিন। তবে ঠিক মতো পারলেন না এই অলরাউন্ডার। উল্টো আঙুলে চোট পেয়ে ফিজিওর সঙ্গে মাঠ ছাড়লেন তিনি। ইনিংসের শেষ পর্যায়ে এসে ডেথের স্পেশালিস্ট বোলারকে হারাল বাংলাদেশ। 

১৫ ওভারে নিউ জিল্যান্ডের স্কোর ৫ উইকেটে ৭২।

নাসুমের ক্যারিয়ার সেরা বোলিং

জুটি ভাঙার পর আরও দুটি উইকেট পেল বাংলাদেশ। পরপর দুই বলে হেনরি নিকোলস ও কলিন ডি গ্র্যান্ডহোমকে ফিরিয়ে দিলেন নাসুম আহমেদ।

চমৎকার এক ডেলিভারিতে নিকোলসকে বোল্ড করে দেন বাঁহাতি এই স্পিনার। তাকে ড্রাইভ করার চেষ্টায় বলের নাগাল পাননি ব্যাটসম্যান। ব্যাট-প্যাডের ফাঁক গলে বল স্টাম্পে আঘাত করে বল।

৫ বলে নিকোলস করেন ১।

পরের বলেই কট বিহাইন্ড হয়ে যান ডি গ্র্যান্ডহোম। অফ স্টাম্পের বাইরে পড়ে আরও বেরিয়ে যাওয়া বলে খোঁচা মেরে ধরা পড়েন নুরুল হাসান সোহানের গ্লাভসে।

নাসুমের হ্যাটট্রিক ঠেকিয়ে দেওয়া টম ব্লান্ডেলের সঙ্গে ক্রিজে আছেন উইল ইয়াং। ১২ ওভারে নিউ জিল্যান্ডের স্কোর ৫ উইকেটে ৫২।

ক্যারিয়ারে দ্বিতীয়বার ৪ উইকেট পেলেন নাসুম। এই ম্যাচে ১০ রানে ৪ উইকেট টি-টোয়েন্টিতে তার সেরা বোলিং। গত মাসে এই মাঠেই অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ১৯ রানে নিয়েছিলেন চারটি।

জুটি ভাঙলেন মেহেদি

উইকেট আগের চেয়েও মন্থর। রানের জন্য সংগ্রাম করতে হচ্ছে ব্যাটসম্যানদের। এর মধ্যেই একটা জুটি গড়ে তুলেছিলেন টম ল্যাথাম ও উইল ইয়াং। নিউ জিল্যান্ড অধিনায়ককে ফিরিয়ে জুটি ভাঙলেন মেহেদি হাসান।

অফ স্পিনারকে বেরিয়ে এসে খেলার চেষ্টা করেছিলেন ল্যাথাম। টার্ন করে বেরিয়ে যাওয়া বল ব্যাটে খেলতে পারেননি বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান। বাকিটা সহজেই সারেন নুরুল হাসান সোহান। ভাঙে ৪৭ বল স্থায়ী ৩৫ রানের জুটি।

এক চারে ২৬ বলে ২১ রান করেন ল্যাথাম।

১১ ওভারে নিউ জিল্যান্ডের স্কোর ৩ উইকেটে ৫২। ক্রিজে ইয়াংয়ের সঙ্গী হেনরি নিকোলস।

পাওয়ার প্লেতে মন্থর নিউ জিল্যান্ড

দ্বিতীয় ওভারে সাকিব আল হাসানের ওপর চড়াও হয়ে ঝড়ের আভাস দিয়েছিল নিউ জিল্যান্ড। কিন্তু আক্রমণাত্মক মনোভাব ধরে রাখতে পারেনি সফরকারীরা। নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে ব্যাটসম্যানদের বেঁধে রাখেন বাংলাদেশের বোলাররা।

পাওয়ার প্লেতে ৬ ওভারে নিউ জিল্যান্ডের স্কোর ২ উইকেটে ২২। ১২ বলে ৭ রানে খেলছেন টম ল্যাথাম। ১১ বলে উইল ইয়াংয়ের রান ৩।

সাকিবকে ছক্কা, নাসুমের বলে অক্কা

সাকিব আল হাসানকে রিভার্স সুইপে ছক্কায় ঝড়ো শুরুর আভাস দিলেন ফিন অ্যালেন। তবে বেশিক্ষণ টিকতে পারলেন না বিস্ফোরক এই ওপেনার। আরেক বাঁহাতি স্পিনার নাসুম আহমেদের রিভার্স সুইপ করে দিলেন সহজ ক্যাচ।

একটু টেনে দিয়েছিলেন নাসুম। একটু বাড়তি বাউন্সও পেয়েছিলেন। তাতে টাইমিং করতে পারেননি অ্যালেন। পয়েন্টে ক্যাচ মুঠোয় নেন মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিন।

৮ বলে ১ চারে ১২ রান করেন অ্যালেন।

৩ ওভারে নিউ জিল্যান্ডের রান ২ উইকেটে ১৬। ক্রিজে টম ল্যাথামের সঙ্গী উইল ইয়াং।

উইকেট-মেডেনে বাংলাদেশের শুরু

এমনিতে প্রথম ওভার করতেন মেহেদি হাসান। এবার শুরুতে মাহমুদউল্লাহ বেছে নিলেন নাসুম আহমেদকে। অধিনায়ককে হতাশ করেননি বাঁহাতি এই স্পিনার। শুরুতেই এনে দিয়েছেন উইকেট।

প্রথম বলটি তীক্ষ্ণ বাঁক নিয়ে ব্যাটসম্যান রাচিন রবীন্দ্রকে দ্বিধায় ফেলে দেয়। পরের তিনটি বল তিনি খেলেন ডট। পঞ্চম বলটি সুইপ করে চাপ সরিয়ে দিতে চেয়েছিলেন তিনি। ঠিক মতো পারেননি। শর্ট ফাইন লেগ থেকে কিছুটা দৌড়ে দিয়ে ঝাঁপিয়ে ক্যাচ মুঠোয় নেন মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিন।

প্রথম ওভারটি মেডেন নেন নাসুম।

ক্রিজে ফিন অ্যালেনের সঙ্গী টম ল্যাথাম।

নিউ জিল্যান্ড দলে দুই পরিবর্তন

আগের ম্যাচে জেতা দলে দুটি পরিবর্তন এনেছে নিউ জিল্যান্ড। বাদ পড়েছেন জ্যাকব ডাফি ও স্কট কুগেলাইন। দলে এসেছেন ব্লেয়ার টিকনার ও হামিশ বেনেট।

নিউ জিল্যান্ড একাদশ: ফিন অ্যালেন, রাচিন রবীন্দ্র, টম ল্যাথাম (অধিনায়ক), উইল ইয়াং, টম ব্লান্ডেল, হেনরি নিকোলস, কলিন ডি গ্র্যান্ডহোম, কোল ম্যাকনকি, এজাজ প্যাটেল, ব্লেয়ার টিকনার, হামিশ বেনেট।

অপরিবর্তিত বাংলাদেশ দল

টানা চার ম্যাচে একই একাদশ নিয়ে খেলছে বাংলাদেশ। বাইরেই থেকে গেছেন পেসার শরিফুল ইসলাম, ওপেনার সৌম্য সরকার, মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান শামীম হোসেন।

বাংলাদেশ একাদশ: লিটন কুমার দাস, মোহাম্মদ নাঈম শেখ, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ (অধিনায়ক), আফিফ হোসেন, নুরুল হাসান সোহান, শেখ মেহেদি হাসান, মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিন, মুস্তাফিজুর রহমান, নাসুম আহমেদ।

টস

টানা দ্বিতীয় ম্যাচে টস জিতলেন টম ল্যাথাম। নিউ জিল্যান্ড অধিনায়ক নিলেন ব্যাটিং। আগের ম্যাচে ১২৮ রানের লক্ষ্য বাংলাদেশকে ৭৬ রানে গুঁড়িয়ে দিয়েছিল তারা।

সিরিজ জয়ের লক্ষ্যে বাংলাদেশ

আগের ম্যাচে বড় হারের ধাক্কা সামাল দিয়ে জয়ে ফেরার লক্ষ্য নিয়ে নামছে বাংলাদেশ। এক ম্যাচ বাকি থাকতেই নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ নিশ্চিত করতে চায় মাহমুদউল্লাহর দল।

শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বুধবার বিকাল চারটায় শুরু হবে চতুর্থ টি-টোয়েন্টি।

বাংলাদেশের স্পিনের জবাব স্পিন দিয়েই দিতে চায় নিউ জিল্যান্ড। আগের ম্যাচে স্বাগতিকদের ৭৬ রানে গুঁড়িয়ে দিয়ে সেই সামর্থ্য যে আছে তা দেখিয়েছে সফরকারীরা। সেই ধাক্কা ভুলে এগিয়ে যেতে আশাবাদী বাংলাদেশ।

ওপেনার লিটন দাস মনে করেন, এক-দুই নিয়ে রানের চাকা সচল রাখার দিকে বেশি মনোযোগ দেওয়া উচিত তাদের। একই সঙ্গে থিতু ব্যাটসম্যানের উচিত দায়িত্বশীল ব্যাটিং।