কলম্বোতে শনিবার দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ডাকওয়ার্থ-লুইস-স্টার্ন পদ্ধতিতে ৬৭ রানে জিতেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। তিন ম্যাচের সিরিজে এখন ১-১ সমতা।
বৃষ্টি বাধায় ৪৭ ওভারে নেমে আসা ম্যাচে মালানের সেঞ্চুরিতে ৬ উইকেটে ২৮৩ রান করে সফরকারীরা। ১২১ রানের ইনিংসে এই ওপেনার জেতেন ম্যাচ সেরার পুরস্কার।
শ্রীলঙ্কার ইনিংসের মাঝপথে বৃষ্টি হানা দিলে তাদের সামনে লক্ষ্য দাঁড়ায় ৪১ ওভারে ২৬৫ রান। শামসি ৪৯ রানে ৫ উইকেট নিয়ে স্বাগতিকদের থামিয়ে দেন ১৯৭ রানেই।
আর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে বৃষ্টি বাগড়ায় এক ঘণ্টা দেরিতে খেলা শুরু হওয়া ম্যাচে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামা দক্ষিণ আফ্রিকার শুরুটা ভালো হয়নি। আগের ম্যাচে দারুণ এক ইনিংস খেলা এইডেন মারক্রামকে হারায় তারা নবম ওভারে।
রিজা হেনড্রিকসকে নিয়ে দলের হাল ধরেন মালান। জমে ওঠে তাদের জুটি, পঞ্চাশ ছাড়িয়ে এগোতে থাকে শতরানের দিকে। এর মাঝে ৬৪ বলে ফিফটি তুলে নেন মালান। দলে ফেরা হেনড্রিকস পঞ্চাশ স্পর্শ করেন ৫২ বলে। এরপরই ধনাঞ্জয়া ডি সিলভার স্পিনে বোল্ড হয়ে যান তিনি ৫১ রানে। ভাঙে ৯৬ রানের জুটি।
ভানিন্দু হাসারাঙ্গার বলে স্টাম্পড হয়ে যান রাসি ফন ডার ডাসেন। আশির ঘরে পৌঁছে যাওয়া মালানের চোখ তখন সেঞ্চুরিতে। কয়েক ওভার পরই কাঙ্ক্ষিত তিন অঙ্কে পা রাখেন তিনি ১২৬ বলে। ওয়ানডে ক্যারিয়ারে নয় ম্যাচে এটা তার তৃতীয় সেঞ্চুরি।
আরেক প্রান্তে দ্রুত রান তোলায় মনোযোগ দেন হাইনরিখ ক্লাসেন। তাকে সঙ্গ দেন মালানও। হাসারাঙ্গার বলে লং-অনে তার ক্যাচ ছেড়ে চারে পরিণত করেন চারিথ আসালঙ্কা। জীবন পেয়ে সফরকারী ওপেনার পরের দুই বলে মারেন ছক্কা ও চার।
দুশমন্থ চামিরা পরপর দুই বলে ফিরিয়ে দেন থিতু হয়ে যাওয়া দুই ব্যাটসম্যানকে। এই পেসারকে ছক্কায় উড়িয়ে পরের বলেই লং-অনে ধরা পড়েন ২৭ বলে এক ছক্কা ও ৪ চারে ৪৩ রান করা ক্লাসেন। এলবিডব্লিউতে থামে মালানের ১৩৫ বলে ১২১ রানের ইনিংস। যা সাজানো এক ছক্কা ও ৯ চারে।
রান তাড়ায় শ্রীলঙ্কাকে দুঃস্বপ্নের শুরু দেন কাগিসো রাবাদা। আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান আভিশকা ফার্নান্দো ও ভানুকা রাজাপাকসে ইনিংসের পঞ্চম ওভারে চার বলের মধ্যে ফিরিয়ে দেন তিনি। আভিশকা স্লিপে ধরা পড়েন আর রাজাপাকসে হন কট বিহাইন্ড।
দলে ফেরা ভিয়ান মুল্ডারের শিকার মিনোদ ভানুকা। ১৯ রানে ৩ উইকেট হারায় লঙ্কানরা। টপ অর্ডারের তিন ব্যাটসম্যানের একজনও যেতে পারেননি দুই অঙ্কে।
ধনাঞ্জয়াকে কট বিহাইন্ড করে শিকার ধরা শুরু করেন শামসি। দাসুন শানাকার সঙ্গে আসালঙ্কার ৬৪ রানের জমে যাওয়া জুটি ভাঙেন বাঁহাতি এই রিস্ট স্পিনারই। লঙ্কান অধিনায়ক ক্যাচ তুলে দেন ৩০ রানে।
নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারানো দলের এক প্রান্ত আগলে রেখে ৫৭ বলে ফিফটি তুলে নেন আসালঙ্কা। ৬৯ বলে ৩ ছক্কা ও ৫ চারে ৭৭ রান করা এই ব্যাটসম্যান শামসিকে স্লগ সুইপ করে ধরা পড়েন বাউন্ডারিতে। সেখানেই প্রায় শেষ হয়ে যায় শ্রীলঙ্কার জয়ের আশা।
শেষ দিকে চামিকা করুনারত্নের ২৩ বলে ২ ছক্কা ও এক চারে ৩৬ রানের ইনিংসে কেবল কমেছে হারের ব্যবধানই।
দুই দলের সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচ আগামী মঙ্গলবার।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
দক্ষিণ আফ্রিকা: ৪৭ ওভারে ২৮৩/৬ (মালান ১২১, মারক্রাম ২১, হেনড্রিকস ৫১, ফন ডার ডাসেন ১৬, ক্লাসেন ৪৩, ফেলুকওয়ায়ো ৪, মুল্ডার ৫*, লিন্ডা ৯*; চামিরা ৭-০-৫২-২, জয়াবিক্রমা ৮-০-৪৬-০, আকিলা ৭-০-৪৬-০, চামিকা ৫-০-২৪-২, হাসারাঙ্গা ১০-০-৬৩-১, শানাকা ৩-০-২১-০, ধনাঞ্জয়া ৭-০-৩০-১)।
শ্রীলঙ্কা: ৩৬.৪ ওভারে ১৯৭ (আভিশকা ৮, মিনোদ ৭, রাজাপাকসে ০, ধনাঞ্জয়া ১২, আসালঙ্কা ৭৭, শানাকা ৩০, হাসারাঙ্গা ৩, চামিকা ৩৬, চামিরা ১১, আকিলা ৩, জয়াবিক্রমা ১*; রাবাদা ৬-০-১৬-২, মুল্ডার ৫-০-৩০-১, মহারাজ ৮-০-৩২-১, শামসি ৭.৪-০-৪৯-৫, ফেলুকওয়ায়ো ৫-০-২৮-০, লিন্ডা ৫-০-৪০-১)।
ফল: ডাকওয়ার্থ-লুইস-স্টার্ন পদ্ধতিতে ৬৭ রানে জয়ী দক্ষিণ আফ্রিকা।
সিরিজ: ৩ ম্যাচের সিরিজটি ১-১ সমতায়।
ম্যান অব দা ম্যাচ: ইয়ানেমান মালান।