স্টার্লিংয়ের ঝড়ো সেঞ্চুরিতে এগিয়ে গেল আয়ারল্যান্ড

ছক্কায় খুললেন রানের খাতা। মাঝে ছিলেন কিছুটা মন্থর। ফিফটি পেরিয়ে ঝড় তুলে পল স্টার্লিং খেললেন ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস। দলকে এনে দিলেন বড় পুঁজি। পরে বোলারদের নৈপুণ্যে জিম্বাবুয়েকে অল্পতে আটকে দারুণ জয় তুলে নিল আয়ারল্যান্ড।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 Sept 2021, 05:32 PM
Updated : 1 Sept 2021, 06:13 PM

ব্রেডি ক্রিকেট ক্লাবে বুধবার তৃতীয় টি-টোয়েন্টিতে ৪০ রানে জিতে পাঁচ ম্যাচের সিরিজে ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে গেছে আয়ারল্যান্ড। ১৭৮ রান তাড়ায় সফরকারীরা গুটিয়ে যায় ১৩৮ রানে।

আইরিশদের জয়ের নায়ক স্টার্লিং খেলেন ১১৫ রানের অপরাজিত ইনিংস। টি-টোয়েন্টিতে আয়ারল্যান্ডের দ্বিতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে সেঞ্চুরি করা এই ক্রিকেটার জেতেন ম্যাচ সেরার পুরস্কার।

টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা আয়ারল্যান্ডের প্রথম রান আসে ছক্কায়, স্টার্লিংয়ের ব্যাট থেকে। পরে ছক্কা মেরে ডানা মেলার আভাস দেন আগের ম্যাচে ফিফটি করা কেভিন ও’ব্রায়েনও।

কিন্তু তাকে বেশিক্ষণ টিকতে দেননি লুক জঙ্গুয়ে। এই পেসারের স্লোয়ারে ক্যাচ তুলে দিয়ে ৯ রান করে ফেরেন ও’ব্রায়েন। ভাঙে ৩২ রানের উদ্বোধনী জুটি।

এরপর দেখেশুনে খেলতে থাকেন স্টার্লিং ও অ্যান্ডি বালবার্নি। আয়ারল্যান্ডের রান আসতে থাকে মন্থর গতিতে। ১০ ওভার শেষে স্বাগতিকদের স্কোরবোর্ডে রান কেবল ৬০।

ইনিংস শুরু করতে নামা স্টার্লিংয়ের ফিফটি আসে দ্বাদশ ওভারে, ৪৭ বলে। মাসাকাদজাকে ছক্কা ও জঙ্গুয়েকে পরপর দুই চার মেরে রানের চাকায় দম দেন বালবার্নি।

দ্রুত রান তোলার চেষ্টাই কাল হয় আইরিশ অধিনায়কের। রায়ান বার্লকে ইনসাইড আউট শটে এক্সট্রা কাভারের ওপর দিয়ে খেলতে গিয়ে ধরা পড়েন তিনি ডিপ পয়েন্টে। শেষ হয় তার এক ছক্কা ও ৩ চারে ৩১ রানের ইনিংস। ভাঙে ৫৮ বলে ৭৭ রানের জুটি।

ফিফটির পর ঝড় তোলেন স্টার্লিং। রিচার্ড এনগারাভাকে লং-অন দিয়ে ছক্কায় ওড়ান তিনি। ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান তাণ্ডব চালান টেন্ডাই চাতারার ওপর। ১৯তম ওভারে এই পেসারকে মারেন তিনটি ছক্কা ও এক চার।

ওই ওভারেই স্টার্লিং ৭০ বলে পৌঁছে যান কাঙ্ক্ষিত তিন অঙ্কে। বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে ৫০ থেকে ১০০-তে যান তিনি কেবল ২৩ বলে। শেষ ওভারের শেষ দুই বলে জঙ্গুয়েকে ছক্কা-চার মেরে মাঠ ছাড়েন ১১৫ রানে অপরাজিত থেকে। তার ৭৫ বলের ঝড়ো ইনিংসটি সাজানো ৮টি করে ছক্কা-চারে।

এই ইনিংসের পথে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে সবচেয়ে বেশি রানে স্টার্লিং ছাড়িয়ে যান ডেভিড ওয়ার্নারকে। ২ হাজার ৩৪৩ রান নিয়ে তালিকায় পাঁচে উঠেছেন আইরিশ ওপেনার; অস্ট্রেলিয়ান ওপেনারের রান ২ হাজার ২৬৫।

শেষ দিকে ব্যাটিংয়ে নামা শেন গেটকেট ১১ বলে ৪ চারে করেন ১৯ রান। স্টার্লিংয়ের সঙ্গে গড়েন ২৭ বলে ৬৯ রানের অবিছিন্ন জুটি।

জিম্বাবুয়েকে জিততে হলে টি-টোয়েন্টিতে নিজেদের ইতিহাসের সর্বোচ্চ রান তাড়া করতে হতো। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষেই তারা ১৭২ রান তাড়া করে জিতেছিল ২০১৯ সালে।

সেই পথে ভালো শুরু করেছিলেন ওয়েসলি মাধেভেরে। প্রথম ওভারে বোলিংয়ে আসা স্টার্লিংকে পরপর তিন চার মারেন তিনি। কিন্তু পরের ওভারেই তাকে ফিরিয়ে দেন মার্ক অ্যাডায়ার।

জিম্বাবুয়ে ব্যাটসম্যানদের সাজঘরে ফেরার এই দৃশ্য একটু পরেই হয়ে যায় নিয়মিত। এক ওভার পরই ফিরে যান আরেক ওপেনার টাডিওয়ানাশে মারুমানি। পাওয়ার প্লের পরের ওভারেই বেন হোয়াইটের বলে এলবিডব্লিউ হন রেজিস চাকাভা।

ব্যাটসম্যানদের আসা-যাওয়ার মিছিলে কেবল কিছুটা লড়াই করেন ক্রেইগ আরভিন। জিম্বাবুয়ে অধিনায়কের ২ ছক্কা ও ৩ চারে ১৮ বলে ৩৩ রানের বিস্ফোরক ইনিংস থামে গেটকেটের বলে বোল্ড হয়ে।

শেষ দিকে হারের ব্যবধান কিছুটা কমে বার্লের ২৩ বলে এক ছক্কা ও ২ চারে ২৬ রানে।

আয়ারল্যান্ডের হয়ে দারুণ বোলিংয়ে কেবল ১১ রান দিয়ে ৩ উইকেট নেন অ্যাডায়ার। দুটি করে উইকেট নেন জশ লিটল, গেটকেট ও হোয়াইট।

সিরিজের চতুর্থ টি-টোয়েন্টি বৃহস্পতিবার।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

আয়ারল্যান্ড: ২০ ওভারে ১৭৮/২ (স্টার্লিং ১১৫*, ও’ব্রায়েন ৯, বালবার্নি ৩১, গেটকেট ১৯*; মাসাকাদজা ৩-০-২৫-০, চাতারা ৪-০-৪৭-০, এনগারাভা ৩-১-২৬-০, জঙ্গুয়ে ৪-০-৩৭-১, বার্ল ৪-০-৩০-১, মাধেভেরে ২-০-১১-০)।

জিম্বাবুয়ে: ১৮.২ ওভারে ১৩৮ (মাধেভেরে ১৩, মারুমানি ১৪, চাকাভা ৭, মায়ার্স ১৪, আরভিন ৩৩, শুম্বা ৬, জঙ্গুয়ে ৭, বার্ল ২৬, মাসাকাদজা ৪, চাতারা ৩*, এনগারাভা ১; স্টার্লিং ১-০-১৪-০, অ্যাডায়ার ৩-০-১১-৩, সিমি ৪-০-৩২-০, লিটল ৩.২-০-১৮-২, গেটকেট ৪-০-৩২-২,  হোয়াইট ৩-০-২৩-২)।

ফল: আয়ারল্যান্ড ৪০ রানে জয়ী।

সিরিজ: ৫ ম্যাচ সিরিজে ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে আয়ারল্যান্ড।

ম্যান অব দা ম্যাচ: পল স্টার্লিং।