ও’ব্রায়েন ঝড়ে সমতায় ফিরল আয়ারল্যান্ড

ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়া দলকে টানলেন মিল্টন শুম্বা ও রায়ান বার্ল। জিম্বাবুয়ে পেল দেড়শ ছাড়ানো সংগ্রহ। কিন্তু বোলিং ও ফিল্ডিংয়ের ব্যর্থতায় লড়াই করতে পারল না তারা। জীবন পেয়ে প্রতিপক্ষকে ভোগালেন কেভিন ও’ব্রায়েন। অভিজ্ঞ এই ব্যাটসম্যানের ঝড়ো ফিফটিতে দারুণ এক জয় তুলে নিল আয়ারল্যান্ড।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 August 2021, 02:41 PM
Updated : 29 August 2021, 03:36 PM

ডাবলিনে রোববার দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে জিম্বাবুয়েকে ৭ উইকেটে হারিয়ে পাঁচ ম্যাচের সিরিজে ১-১ সমতা ফেরাল আয়ারল্যান্ড। প্রথম ম্যাচে ৩ রানে হারা স্বাগতিকরা এবার ১৫৩ রানের লক্ষ্য ছুঁয়ে ফেলেছে ৯ বল বাকি থাকতে।

প্রথম পাঁচ ব্যাটসম্যানের ব্যর্থতার পরও জিম্বাবুয়েকে লড়ার মতো সংগ্রহ এনে দেন শুম্বা ও বার্ল। ষষ্ঠ উইকেটে তারা ৫৯ বলে ৮৮ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়েন। যেখানে শুম্বার রান ৪৬, বার্লের ৩৭।

জবাবে আইরিশদের জয়ের মূল কারিগর ও’ব্রায়েন খেলেন ৪১ বলে ৬০ রানের ইনিংস। তিনিই জেতান ম্যাচ সেরার পুরস্কার। ৩৭ রান করে অবদান রাখেন আরেক ওপেনার পল স্টার্লিং।

ক্যাসল অ্যাভিনিউয়ে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামা জিম্বাবুয়ে শুরুতে ভালো কিছুর আভাস দেয়। কিন্তু পরপর তিন ওভারে উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় দলটি। ইনিংসের পঞ্চম ওভারে ওয়েসলি মাধেভেরেকে ফিরিয়ে দেন শেন গেটকেট। এই ওপেনার ৩ চারে ১৮ বলে ২১ রান করে হন কট বিহাইন্ড।

হ্যারি টেক্টরের সরাসরি থ্রোয়ে রান আউটে কাটা পড়েন টাডিওয়ানাশে মারুমানি। গেটকেট নিজের পরের ওভারে স্টাম্প এলোমেলো করে দেন ডিয়ন মায়ার্সের।

দলের হাল ধরতে পারেননি রেজিস চাকাভা ও ক্রেইগ আরভিনও। তাদের চেষ্টা ভেস্তে দেন সেই গেটকেটই। এই পেসারের স্লোয়ারে ক্যাচ তুলে ফিরে যান আগের ম্যাচে দলকে টানা চাকাভা। জিম্বাবুয়ে অধিনায়ককে এলবডব্লিউ করে দেন বেন হোয়াইট।

বিনা উইকেটে ৩৫ থেকে ৬৪ রানে নেই ৫ উইকেট। দলের রান তখন একশ হওয়া নিয়েই শঙ্কা। বিপদে পড়া দলকে দারুণ এক জুটিতে পথ দেখান বার্ল ও শুম্বা। তাদের জুটিতে প্রতি ওভারেই আসতে থাকে বাউন্ডারি।

গেটকেটকে মাথার ওপর দিয়ে ছক্কায় ওড়ান বার্ল। পরে হোয়াইটকে মারেন আরেকটি। ডিপ মিডউইকেট দিয়ে ক্রেইগ ইয়াংকে গ্যালারির ছাদে পাঠান শুম্বা। এই পেসারের পরের ওভারে ছক্কা ও চার মারেন তিনি।

শেষ ওভারে ব্যারি ম্যাককার্থিকে একটি করে চার মারেন শুম্বা ও বার্ল। ৪ চার ও ২ ছক্কায় শুম্বা ২৭ বলে ৪৬ রানে থাকেন অপরাজিত। বার্ল মাঠ ছাড়েন ৩৩ বলে ৩ চার ও ২ ছক্কায় ৩৭ করে।

রান তাড়ায় আয়ারল্যান্ড পায় উড়ন্ত সূচনা। পল স্টার্লিং ও ও’ব্রায়েনের ৫৯ রানের উদ্বোধনী জুটি দলটিকে গড়ে দেয় জয়ের ভিত।

জুটিতে অগ্রণী ছিলেন স্টার্লিং। দ্রুত রান বাড়াতে থাকা ডানহাতি এই ব্যাটসম্যানকে থামান বার্ল। এই লেগ স্পিনারের বলে কট বিহাইন্ড হওয়ার আগে করেন ৩৭ রান। তার ২৯ বলের ইনিংসে ২ ছক্কার পাশে ৫টি চার।

অ্যান্ডি বালবার্নিও টিকেননি বেশিক্ষণ। বার্লের বল ব্যাটের কানায় লেগে আইরিশ অধিনায়ক হন বোল্ড। দ্রুত ২ উইকেট হারিয়ে কিছুটা চাপে পড়ে যায় তারা। তবে এক প্রান্তে তখনও ছিলেন ৫ ও ২০ রানে জীবন পাওয়া ও’ব্রায়েন।

শুম্বাকে ওভারে দুই চার ও পরে ওয়েলিংটন মাসাকাদজাকে ছক্কায় উড়িয়ে ৩৩ বলে ফিফটি স্পর্শ করেন অভিজ্ঞ এই ব্যাটসম্যান। জর্জ ডকরেলের সঙ্গে ও’ব্রায়েনের ৫২ রানের জুটি আয়ারল্যান্ডের জয়ের পথ সহজ করে দেয়।

ম্যাচ অবশ্য শেষ করে আসতে পারেননি ও’ব্রায়েন। ৭ চার ও এক ছক্কায় তার ৪১ বলে ৬০ রানের ইনিংসটি থামে টেন্ডাই চাতারার বলে মিড অফে শুম্বার হাতে ধরা পড়ে। এই শুম্বাই তার ফিরতি সহজ ক্যাচ ছেড়েছিলেন প্রথম দিকে।

ও’ব্রায়েনের বিদায়েও পরে দল হারায়নি পথ। ২৬ বলে ৩৩ রানের ইনিংসে ডকরেল আয়ারল্যান্ডকে পৌঁছে দেন জয়ের বন্দরে।

আগামী বুধবার সিরিজের তৃতীয় টি-টোয়েন্টিতে মুখোমুখি হবে দুই দল।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

জিম্বাবুয়ে: ২০ ওভারে ১৫২/৫ (মাধেভেরে ২১, মারুমানি ১১, চাকাভা ১০, মায়ার্স ১, আরভিন ১৫, শুম্বা ৪৬*, বার্ল ৩৭*; ইয়াং ৪-০-৩৪-০, ম্যাককার্থি ৪-০-৪০-০, গেটকেট ৪-০-২০-৩, সিমি ৪-০-১৯-০, হোয়াইট ৪-০-৩৩-১)।

আয়ারল্যান্ড: ১৮.৩ ওভারে ১৫৩/৩ (স্টার্লিং ৩৭, ও’ব্রায়েন ৬০, বালবার্নি ৫, ডকরেল ৩৩*, টেক্টর ৫*; এনগারাভা ৩.৩-০-৩৪-০, মাসাকাদজা ৩-০-২৪-০, চাতারা ৩-০-২০-১, জঙ্গুয়ে ৩-০-২৬-০, বার্ল ৪-০-২৪-২, শুম্বা ২-০-২১-০)।

ফল: আয়ারল্যান্ড ৭ উইকেটে জয়ী।

সিরিজ: ৫ ম্যাচ সিরিজে ১-১ সমতায়।

ম্যান অব দা ম্যাচ: কেভিন ও’ব্রায়েন।