অনেক বেশি টি-টোয়েন্টি অবশ্য এখনও খেলেননি মেহেদি। বাংলাদেশের হয়ে এই সংস্করণে মাঠে নেমেছেন ১৪ ম্যাচে। তবে ঘরে-বাইরের ব্যবধানটা স্পষ্ট এই সময়েই।
দেশে ৮ ম্যাচে তার উইকেট ৫টি, বিদেশে ৬ ম্যাচে ৫টি। উইকেটের চিত্র বলছে, বিদেশেই তিনি ভালো। তবে টি-টোয়েন্টিতে তো অনেক সময় উইকেটের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ ওভারপ্রতি রান। এখানে ঘরে-বাইরের ব্যবধান অনেক বেশি। দেশে তিনি রান দিয়েছেন ওভারপ্রতি ৬.৪৬, এই সংস্করণে যে কোনো মানদণ্ডেই যা দুর্দান্ত। অথচ বিদেশে ওভারপ্রতি রান গুনেছেন ১০.৮১, সব মানদণ্ডেই খরুচে।
দেশের মাঠে ৮ ম্যাচের ৭টিই মেহেদি খেলেছেন মিরপুরে। বাইরে একমাত্র ম্যাচটি খেলেছেন সিলেটে, উইকেট যেখানে বেশির ভাগ সময়ই থাকে ব্যাটিং সহায়ক। ওই ম্যাচে ২ ওভারে রান দিয়েছেন তিনি ২৫।
সবশেষ সিরিজে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সব ম্যাচ হয়েছে মিরপুরে। মেহেদি ৫ ম্যাচ খেলে রান দিয়েছেন ওভারপ্রতি কেবল ৫.৮৮ করে। এবার নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের সব ম্যাচও তার বোলিংয়ের জন্য উপযুক্ত এই আঙিনাতেই।
তবে স্রেফ এমন উইকেটে আটকে থাকলেই যে চলবে না, তা উপলব্ধি করতে পারছেন মেহেদি। মাস দেড়েক পরই বিশ্বকাপ সংযুক্ত আরব আমিরাতে। যেখানে ব্যাটিং উইকেট থাকার সম্ভাবনাই বেশি। দেশের বাইরে খেলা থাকবে সামনে আরও।
মেহেদির বোলিংয়ে খুব টার্ন নেই, দুসরা বা ক্যারম বলের মতো বৈচিত্র্য তো নেই-ই। মূলত লাইন-লেংথ ঠিক রেখে, খানিকটা গতি বৈচিত্র্য দিয়ে আর ব্যাটসম্যানকে বুঝে বল করাই তার শক্তি। ব্যাটিং সহায়ক উইকেটে শুধু এসব দিয়েই পার পাওয়া কঠিন। বিশেষ করে, ডানহাতি ব্যাটসম্যানরা এখন বড় শটের জন্য অফ স্পিনারদের টার্গেট করেন প্রায়ই।
বিসিবির ভিডিও বার্তায় রোববার মেহেদি বললেন, সেই চ্যালেঞ্জের জন্যই নিজেকে তৈরি করার চেষ্টা করছেন তিনি।
“আলাদা কন্ডিশনে খেলতে গেলে মাইন্ড সেটআপ খুব গুরুত্বপূর্ণ। আবহাওয়াও আলাদা থাকে। সেক্ষেত্রে মানিয়ে নিতে হলে অবশ্যই অনেক বুদ্ধি করে বল করতে হবে। অফ স্পিনার হিসেবে পাওয়ার প্লেতে ও পাওয়ার প্লের পরে বল করতে হয়, অন্য দেশে খেলতে গেলে ডানহাতি ব্যাটসম্যান থাকলে ডানহাতি অফ স্পিনার পেলে চান্সটা বেশি নেয়। সেখানেই উন্নতির চেষ্টা করছি।”
“ভালো উইকেটে কিভাবে নিজেকে পরিপূর্ণভাবে ওভারকাম করা যায় এবং ওখানটায় উন্নতি করা যায়, সেই চেষ্টাই করছি। এমনকি দেশের মাটিতেও অনেক উন্নতির জায়গা আছে, যেখানে আরও ভালো করতে পারি। আমার ইচ্ছা, দিন দিন আমি আরও উন্নতি করতে চাই।”
মেহেদির উন্নতি জরুরি আরও একটি কারণে। টি-টোয়েন্টিতে নতুন বল হাতে নেওয়া ও পাওয়ার প্লেতে বোলিংয়ের চ্যালেঞ্জ তাকে নিতে হয় প্রায়ই। এখানে ভালো করতে হলে ভাবনায় ও স্কিলে ব্যাটসম্যানদের চেয়ে এগিয়ে থাকতে হয়। মেহেদিরও চাওয়া নিজেকে এখানে আরও সমৃদ্ধ করা।
“নতুন বলে বল করলে উপভোগ করতে হয়। তবে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট, মাঝেমধ্যে মার খেলে তখন উপভোগ করা যায় না। যেহেতু টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট, অনেক চিন্তা ভাবনা করে বল করতে হয়। কম সময়ের খেলা। তাৎক্ষনিক অনেক কিছু করতে হয়। সেক্ষেত্রে নতুন বলের ভূমিকাটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। যদি আমি সফল হতে পারি, তাহলে দলের জন্য ভালো। পাওয়ার প্লে ভালোভাবে পার করে দেওয়া যায়।”